• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

ফ্ল্যাশ ফিকশন বা অনুগল্পের রহস্য

প্রকাশ:  ০৫ অক্টোবর ২০১৮, ০২:৪৯ | আপডেট : ০৫ অক্টোবর ২০১৮, ০৩:১৩
রুদ্র মাহমুদ

ছোটগল্প কতটুকু ছোট হতে পারে? ছোটগল্প মাত্র মাত্র দু'চার লাইনেও হতে পারে। বিশ্বসাহিত্যে কয়েক লাইনে লেখা বহু ছোটগল্প আছে।এ ধরনের গল্পগুলো ‘ফ্লাশ ফিকশন’ হিসেবে পরিচিত, আর আমাদের এখানে বলা হচ্ছে ‌অনুগল্প'।এগুলো এক একটি সম্পূর্ণ গল্প যা শুরু হতে না হতেই শেষ হয়ে যায়। কিন্তু তার একটি রেশ পাঠকের ভেতর থেকে যায়।

পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট গল্পটির লেখক মার্কিন সাহিত্যিক ও সাংবাদিক Ernest Hemingway (আর্নেস্ট হেমিংওয়ে)। গল্পটি মাত্র ৬টি শব্দে লেখা। কথিত আছে আর্নেস্ট হেমিংওয়ে একদিন তার অফিসের কলিগদের সাথে ১০ ডলারের বাজি ধরেন যে তিনি মাত্র ৬টি শব্দ দিয়ে একটি সম্পূর্ণ গল্প লিখতে পারবেন এবং তিনি বাজি জিতে ছিলেন।

সম্পর্কিত খবর

    গল্পটি ছিল এমন : For sale. Baby shoes. Never worn.

    বাংলা অনুবাদ : বিক্রির জন্য। শিশুর জুতা। ব্যবহৃত নয়।

    গল্পটির অর্থ বোঝার চেষ্টা করা যাক। এই গল্পের ভেতর একটা রহস্য লুকিয়ে আছে। আসলে বুঝলে বুঝতে হবে নিজের মতো করেই।

    গল্পটির ভাবার্থ অনেকট এমন-' বাচ্চার জন্য জুতো কেনা হয়েছিল, কিন্তু সেই বাচ্চাটা পৃথিবীর আলোই দেখেনি।

    এই গল্পে মাত্র ছয়টি শব্দে গর্ভে মারা যাওয়া শিশুর জন্য মায়ের অনুভূতি প্রকাশ করা হয়েছে। গর্ভের সন্তানের জন্য এক মা একজোড়া জুতো কিনেছিলেন। কিন্তু শিশুটি গর্ভেই মারা যায়। দরিদ্র মা সেই জুতো জোড়া বিক্রি করতে চাচ্ছেন। কী ভীষণ বেদনাদায়ক, তাই না!

    মার্কিন সাহিত্যিক আর্নেস্ট হেমিংওয়ে ১৯৫৪ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেছিলেন। তিনি সাতটি উপন্যাস, ছয়টি ছোট গল্প সংকলন এবং দুইটি নন-ফিকশন গ্রন্থ প্রকাশ করেছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পরে আরও তিনটি উপন্যাস, চারটি ছোট গল্প সংকলন এবং তিনটি নন-ফিকশন গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছিল। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের অনেকগুলোই আমেরিকান সাহিত্যের চিরায়ত(ক্লাসিক) গ্রন্থ হিসেবে বিবেচিত হয়।

    এখানে পৃথিবীর আরেকটি ক্ষুদ্রতম গল্প বা ‘ফ্লাশ ফিকশন’-এর কথা উল্লেখ করা যেতে পারে। ‘Knock’ নামের এ গল্পটির লেখক Fredric Brown (ফ্রেডরিক ব্রাউন)। এটা আাবার পৃথিবীর সংক্ষিপ্ততম ভূতের গল্প। ফ্রেডরিক ব্রাউনও একজন আমেরিকান লেখক।

    গল্পটি হলো এমন : “The last man on Earth sat alone in a room. There was a knock on the door…”

    বাংলা অনুবাদ : পৃথিবীর সর্বশেষ মানুষটি একাকী একটা রুমে বসে আছেন। হঠাৎ কে যেন তার দরজায় নক করল...।

    মাত্র দুই লাইনের এ গল্পটি পড়ার পর পাঠকের মনে জন্ম নেয় নানা প্রশ্ন। দরজায় কে নক করলো, কেন? এজন্যই দুটি লাইন হয়ে উঠেছে একটা গল্প। নিচের ভিডিওতে দেখে নিতে পারেন।

    এখানেই ফ্লাশ ফিকশন রহস্য। আর এই রহস্যের জবাব খোঁজার মাঝেই লুকিয়ে আছে আনন্দ। এধরনের গল্প অবশ্য বিশ্বসাহিত্যে খুব বেশি নেই।

    ফ্ল্যাশ ফিকশন,আর্নেস্ট হেমিংওয়ে
    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close