• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

মি-টুতে আবৃত্তিকার মাহিদুল ইসলাম মাহি’র বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ

প্রকাশ:  ১৩ নভেম্বর ২০১৮, ১৮:৪৬ | আপডেট : ১৩ নভেম্বর ২০১৮, ১৯:২৭
নিজস্ব প্রতিবেদক

খ্যাতিমান আবৃত্তিকার মাহিদুল ইসলাম মাহি। বহুদিন ধরেই আবৃত্তি চর্চার সঙ্গে জড়িয়ে থাকা এই আবৃত্তিশিল্পীর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী অধ্যাপক জাকিয়া সুলতানা মুক্তা। যৌন নিপীড়ন বিরোধী মি-টু আন্দোলনে উজ্জীবিত হয়ে রোববার নিজের ফেসবুক পোস্টে এই অভিযোগ করেন তিনি। তার আগে মডেল মাকসুদা আক্তার প্রিয়তি, শুচিস্মিতা সীমন্তি, ট্রান্সজেন্ডার শিল্পী তাসনুভা আনান শিশির একইভাবে ‘যৌন হয়রানির শিকার’ হওয়ার কথা তুলে ধরেন।

আবৃত্তিকার মাহিদুল ইসলাম মাহি’র বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ জানিয়ে জাকিয়া সুলতানা মুক্তার স্ট্যাটাসটি সরাসরি তুলে ধরা হলো।

সম্পর্কিত খবর

    ‘সর্বপ্রথম হলিউডে যখন #metoo আন্দোলন শুরু হলো তখন আমার জীবনে ঘটে যাওয়া ভীষণ অশান্ত একটা সময়ের কথা আবারো মনে পড়ে যায়। আমি বিভ্রান্ত হই, বিচলিত হই।

    এরপর যখন বলিউডে তনুশ্রী দত্ত এই উপমহাদেশের একজন হিসেবে সর্বপ্রথম তার জীবনের #metoo শেয়ার করেন, আমি আশান্বিত হই, আমার কথাগুলো বলার সম্ভাবনা অনুধাবন করে। কিন্তু নিজের কথাগুলো বলার সাহস অর্জন করতে পারি নি তখনও পর্যন্ত!

    অপেক্ষা করতে থাকি, কেউ কি নেই এই দেশে যে কিনা এই মুভমেন্ট শুরু করবে এখানে, যাতে অন্যরা মুখ খোলার সাহস অর্জন করতে পারে।

    প্রিয়তি যখন প্রথম মুখ খুললো, আমি ভীষণ অনুপ্রেরণা পেলাম মুখ খোলার। কিন্তু পর্যাপ্ত সাহস তবুও নিজের মনে তৈরি করতে পারলাম না, কারণ আমার নিজের যে সামাজিক অবস্থান, সেখানে থেকে এবং একটা মফস্বলে থেকে তার পরবর্তী ধাক্কাটা সামলাতে পারবো কিনা বুঝতে পারছিলাম না।

    আমার অপেক্ষার প্রহর বাড়লো! এরপর সিমন্তি মুখ খুললো, সেও দেশের বাইরে থাকে। তবুও কী ভীষণ সামাজিক ব্যবচ্ছেদ তার ও তার পরিবারকে নিয়ে! আমি পিছু হটে গেলাম মানসিকভাবে। তুমুল মানসিক দ্বন্দ্বে বিপর্যস্ত আমি মেনে নিতে পারছিলাম না নিজের প্রেষণার এই থমকে দাঁড়ানো অবস্থাটা নিয়ে।

    শেষ পর্যন্ত বেপরোয়া সিদ্ধান্ত নিয়ে যখন লিখতে বসলাম, অনেকখানি লিখেওছি, এই অবস্থায় আমার শুভাকাঙ্ক্ষীরা যারা ঐ মুহুর্তে আমার পাশে ছিলো তারা ভীষণভাবে আমাকে বাধা দিলো। আমি পোস্ট লিখেও আর পোস্ট করলাম না।

    এরপর গতকাল চোখে পড়লো আসমাউল হুসনাসহ অনিক নামের একটা ছেলের #metoo! এরা একজন তো সরাসরি দেশে অবস্থান করেও ব্যাপক সেলিব্রেটি প্রকাশকের বিরুদ্ধে মুখ খুললো এবং আরেকজন ছেলে হয়েও তার #metoo শেয়ার করে জানান দিলো এই আন্দোলন কেবল মেয়েদের না, এই আন্দোলন সবার।

    যাই হোক, আমার দ্বিধা অনেকখানিই কাটলো। আমি চাইলাম আমার কথাগুলো এবার বলতে। কিন্তু ভীষণ বাধা আসলো আবারও পরিবার থেকে এই বিবেচনায় যে এই সমাজ এখনও ম্যাচিউর ও সেন্সেটিভ নয়।

    আমি মানতে পারলাম না বিষয়টা। অসম্ভব হতাশায় ছটফট করছিলাম সারাটা রাত। এর মাঝে আমাকে ইনবক্সে আর আমার করা একটা হতাশাপূর্ণ পোস্টে অনেকেই সমর্থন করে সাহস যোগায় সাহসী পদক্ষেপ নিতে। সাহস করে মুখ খুলতে। কৃতজ্ঞতা প্রতিটি সজ্জন প্রিয় মানুষগুলোর প্রতি।

    আমি আর বিভ্রান্ত থাকতে চাই না। আমার এই পোস্টে আমার সাথে ঘটে যাওয়া অভব্যতার কথা আমি প্রকাশ করতে চাই।

    তখন আমি স্নাতক তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী, আবৃত্তি সংগঠন সংবৃতার সপ্তম কর্মশালায় বেশ কয়েকজন বন্ধু-বান্ধবীর সাথে যুক্ত হয়েছি আরেক বন্ধু Apple Ashraf Shiddik এর আমন্ত্রণে।

    প্রথম দিন মাহিদুল ইসলাম, যে কিনা সংগঠনটির প্রধান কারিগর! তার ব্যাপক নীতিবাক্য আর মুগ্ধ করা বক্তব্য এবং ব্যক্তিত্বের ভারে বিগলিত আশপাশ দেখে বোকা হয়ে গেলাম।

    আমার ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় অন্য সিগন্যাল দিলো। লোকটাকে আমার প্রথম থেকেই কেনো জানি না ভালো লাগলো না। কিন্তু আমার বন্ধুরা খুব উচ্ছ্বসিত তার ব্যাপারে, শুধু তারা কেনো, মোটামুটি সবাই।

    আমি বিভ্রান্ত নিজের বিবেচনা নিয়ে। কিন্তু প্রথমদিন ভালো অনুভূতি না হওয়ায় সংগঠনের অন্যান্যদের সাথে আমি মানসিকভাবে একাত্ম হতে পারছিলাম পুরো কর্মশালাজুড়েই!

    যাই হোক, সময় গেলো, আমার অস্বস্তি আরও বাড়ে। আমি আমার বন্ধুদের সাথে অস্বস্তিগুলো শেয়ার করতে থাকি। কিন্তু তারা সেসব আমার অতি কল্পনা বলে উড়িয়ে দেয়। মাহিদুল ইসলাম সবার কাছে যেন পীর জাতীয় কিছু, তাকে নিয়ে এমন সংকীর্ণ ভাবনা ভাবাটা আমার ভাবনার সীমাবদ্ধতা বলে বোঝাতে চাইলো তারা।

    আমিও একটু একটু করে বিভ্রান্ত হতে থাকলাম, কিন্তু মন থেকে মানতে পারছিলাম না যে আমার পর্যবেক্ষণ ভুল। মৃদু করে হলেও আমি বলতে থাকলাম, এড়াতে চাইলাম সংগঠনের সাথে কোনরূপ ঘনিষ্ট সহচর্য সৃষ্টির ব্যাপারে।

    কর্মশালা শেষে আমি প্রথম বলে ঘোষিত হলাম এবং সংগঠনটির নিয়মানুযায়ী প্রথম তিনজনের পরবর্তী কর্মশালার সবার সামনে মঞ্চে আবৃত্তি করার প্রেক্ষাপটে আমাকে এবং আমার আরও দুই সতীর্থকে মাহিদুল ইসলাম কবিতা কোনটা পড়বো তা নির্বাচন করে দিবে বলে জানানো হলো।

    কিন্তু দেখলাম সেই মঞ্চে যারা পড়বে বলে নির্ধারণ করা হলো, তাদের মাঝে আমি আছি, দ্বিতীয় হওয়া সাথী নামের একটা নিরীহ মেয়ে আছে এবং তৃতীয় হওয়া আমারই ছোটবেলার বান্ধবীকে বাদ করে দিয়ে চতুর্থ স্থান অধিকারী Romzanul Haque ভাইকে।

    আমার সন্দেহ বাড়লো, বললাম বান্ধবীদের, কেনো তৃতীয়কে বাদ দিয়ে চতুর্থকে নির্বাচন করা হলো? আমাকে একা কোন ফাঁদে ফেলবে নাকি! আমার বান্ধবীরা তখন মাহিদুল ইসলামকে এতটাই শ্রদ্ধার চোখে বিবেচনা করে যে, আমার আশঙ্কাকে তারা এক লহমায় অতিকল্পনা বলে উড়িয়ে দিলো।

    এর পরদিন Tuhin Hossain ভাইয়াকে দিয়ে মাহিদুল ইসলাম যখন আমাকে খবর পাঠালো, প্রোগ্রাম পরেরদিন এবং ভাইয়ের যেহেতু ব্যক্তিগত ব্যস্ততার কারণে সময় নাই তাই দুপুরের দিকে আমি যাতে তার ব্যক্তিগত অফিসে গিয়ে কবিতাটা বুঝে নিয়ে আসি। আমি সাথে সাথে প্রত্যাখ্যান করলাম এ জাতীয় কোন আমন্ত্রণ রক্ষা করা আমার পক্ষে সম্ভব না।

    কিছুক্ষণ পর ভাইয়াকে দিয়ে আবারও আমাকে ফোন করানো হলো এটা জানিয়ে যে, অফিসে যাওয়ার আমন্ত্রণ কেবল আমাকে একা করা হয়নি। নির্ধারিত তিনজনকেই ডাকা হয়েছে। আমি জানি না কথাগুলো জেনে বুঝে তুহিন ভাই সেদিন বলেছিলেন কিনা! মানুষটাকে আমি এখনও বিশ্বাস করি নিরীহ বোকা মানুষ হিসেবে, কিন্তু সত্যটা তিনি নিজেই বলতে পারবেন।

    যাই হোক, আমি এবারেও অফিসে যেতে অস্বীকৃতি জানালে ভাইয়া আমাকে সরাসরি মাহিদুল ইসলামের মোবাইল নাম্বার দিয়ে আমার না যেতে চাওয়ার কথা নিজেই জানাতে পরামর্শ দিলেন। আমি লোকটাকে ফোন দেয়ার কোন প্রয়োজন মনে করলাম না এবং আমার ঘন্টাখানেক কোন প্রতিক্রিয়াহীন নিরবতার পর, তুহিন ভাইয়ের শেষ কলটা আসলো।

    আমাকে জানানো হলো মাহিদুল ইসলাম বিশ মিনিটের জন্য সন্ধ্যার পর টিএসসিতে আসবে শত ব্যস্ততাকে বাদ দিয়ে কেবল আমার গোয়ার্তুমির কারণে, কারণ সংগঠনটা তার তৈরি! নতুন হিসেবে আমার সংগঠনের প্রতি সেই কমিটমেন্ট না থাকলেও, সেতো এই সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা!!

    আমাকে এবং অন্যদেরকেও ইতিমধ্যে জানানো হয়েছে শিডিউল, সুতরাং আমি এবার আসবো কিনা? আমি আবার আমার বন্ধুদের দ্বারস্থ হলাম না যাওয়ার জন্য সমর্থন পাওয়ার আশায়, কিন্তু তারা আমাকে এ ধরনের হীনমন্য চিন্তা করে না উপস্থিত হয়ে লোকটাকে অপমান না করতে পরামর্শ দিলো উলটো। শুধু আমার সেসময়কার বন্ধুকে এবং বর্তমানে আমার জীবনসঙ্গী Kiron S. Kundu কে পরামর্শ দিলো টিএসসির আশেপাশে থাকতে।

    আমি গেলাম টিএসসিতে, আমাকে যে রুমটা তুহিন ভাই এবং Mustafa Sarwar Nitol সেদিন অনুশীলনের জন্য নির্ধারণ করা আছে বলে জানালো সেই রুমটা কর্মশালা চলার সময়ে অনুশীলনের জন্য কোনদিনই আমাদের জন্য নির্ধারিত ছিলো না!

    আমি দ্বিধান্বিত বোধ করে কিছু বলার আগেই জানানো হলো আমি একা নই, সাথীও উপরে যাবে আমার সাথে অনুশীলনের জন্য। রমজান ভাই নেই কেন জানতে চাইলে আমাকে জানানো হয়; তিনি নাকি আগেই অফিসে গিয়ে কবিতা বুঝে নিয়ে এসেছেন!

    আমি এরপর টিএসসির তৃতীয় তলায় (জনতা ব্যাংকের পাশের সিঁড়ি দিয়ে) সেই রুমের দিকে যাই। গিয়ে দেখি সাথী রুমে বিছানো পাটিতে এক কোণায় বসে আছে এবং রুমের অপর প্রান্তে মাহিদুল ইসলাম চেয়ারে বসে আছে।

    আমাকে রুমে ঢোকার পর সাদর অভ্যর্থনায় সম্ভাসিত করলো সে এবং জানালো আমি নাকি এই আবৃত্তি অঙ্গনের সব চাইতে সম্ভাবনাময়ী কন্ঠস্বর! আমার মাঝে সে তার মতন প্রতিভা দেখতে পায়। সে আমাকে এমন আবৃত্তির টেকনিক শেখাবে, যা অনন্য এবং অতুলনীয়।

    আমি ভীষণ অস্বস্তি নিয়ে ঢুকেছি এবং এসব কথা শুনে আমার অস্বস্তি আরও কয়েক ধাপ বেড়ে গেলো। খেয়াল করছিলাম পাশেই দ্বিতীয় হওয়া সাথীকে সে কোন গোনাতেই ধরছে না এবং সুযোগ বের করে ওকে ব্যাপক তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে যাচ্ছে। আমি এবার বিচলিত বোধ করলাম।

    আমাকে সে একটার পর একটা কবিতা দিয়ে আবৃত্তি করে যেতে বলছিলো~

    যেসব ছেলেদের আবৃত্তি করার মতন কবিতা, মেয়েদের নয়। যেখানে নারী দেহের বর্ণনা করা আছে, যৌনতা আছে, কামনা-বাসনার কথা ছেলেদের পয়েন্ট অব ভিউ থেকে বলা আছে সেসব আবৃত্তি করতে বলা হচ্ছিলো।

    আমি এবার রীতিমতন ভয় পেলাম, দাঁড়িয়ে আবৃত্তি করার সময় সেদিন আমার ভয়ে হাঁটু কাঁপছিলো। আমার মনে হচ্ছিলো~ কখন মুক্তি মিলবে! কিছুতেই আবৃত্তি করতে পারছিলাম না ঠিকঠাক!

    কিন্তু ভয়ানক প্রশংসার বাক্যে ভেসে যাচ্ছিলাম, আর সাথী বেচারা খুব ভালো আবৃত্তি করা সত্ত্বেও ওকে চরম অপমান করা হচ্ছিলো একের পর এক বাক্যবাণে!

    শেষ সিদ্ধান্ত হলো আমি পড়বো 'বারবারা বিডলার' বা এই জাতীয় কী একটা কবিতা, যেটা Shamsu Doha ভাই মঞ্চে খুব ভালো পড়েন। আর সাথী পড়বে স্বাধীনতা নিয়ে একটা কবিতা।

    আমাকে তার পায়ের কাছে ডেকে নিয়ে গালে হাত বুলিয়ে আশীর্বাদ(!) করে দিলো, আর সাথীকে রুমের বাইরে গিয়ে একশ বার ওর কবিতাটা চিৎকার করে অনুশীলন করতে নির্দেশ দিলেন।

    এদিকে সাথী বাইরে গেলে, আমাকে ভীষণ উঁচুস্বরে কবিতাটা ততক্ষণ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার আওড়াতে বললেন একের পর এক যতক্ষণে না আমি ক্লান্ত হয়ে যাই, আমি তখন রীতি মতন হাঁপাচ্ছিলাম!

    এবার থামতে বলে আমার দিকে সহানুভূতির স্বরে কথা বলতে বলতে এগিয়ে এলেন এটা বলতে বলতে যে, চিৎকার করে আমি হাঁপিয়ে উঠেছি দেখে তার খারাপ লাগছে।

    সে নাকি আমাকে এমন টেকনিক শিখিয়ে দিবে, যাতে যতই উঁচু স্বরে আমি আবৃত্তি করি না কেন আমার কোন কষ্ট হবে না!

    তার চেয়ার ছেড়ে এগিয়ে আসাটা আমার স্বাভাবিক না মনে হওয়ায় আমি নিজের মধ্যে কুঁকড়ে গিয়েছিলাম সাথে সাথেই, কোনরকম নিরাপত্তা বলয় নিজের মাঝে সৃষ্টি করার আগেই সে আমার কাঁধ দু'হাত দিয়ে আঁকড়ে ধরে নিজের দিকে টান দেয়। আমি শুধু ক্ষিপ্র প্রতিক্রিয়ায় নিজের দু'টো হাত দিয়ে আমার মুখ আর শরীরের সামনের অংশ আড়াল করতে সক্ষম হলাম প্রথমে।

    এরপর সে শক্ত হাতে আমাকে জড়িয়ে ধরে চুমু খাওয়ার চেষ্টা করলে কিছুতেই যখন আমি আমার মুখ থেকে হাত সরাচ্ছিলাম না, তখন মাথায় একটা চুমু খেয়ে আরও শক্ত করে আমাকে ধরার চেষ্টা করে।

    আমি তখন চিন্তাশুণ্য, এরপর আপ্রাণ শক্তি দিয়ে আমি মুঠোবদ্ধ করলাম দু'টো হাত মুখ থেকে সরিয়ে নিয়ে এবং ঠেলে সরিয়ে দিতে চাইলাম শুয়োরটাকে। কিন্তু আমার শারীরিক সক্ষমতা বদমাশটাকে সরিয়ে দিতে না পারলেও, ঐ মুহুর্তে সাথীর কাকতালীয় উপস্থিত হওয়াটা আমাকে আরও বড় কোন যৌন নিগ্রহ থেকে বাঁচিয়ে দিয়েছিলো সেদিন।

    দরজায় তখন সাথী ভেতরে ঢোকার জন্য নক করলে, সেদিন আমি ওই পিশাচটার কাছ থেকে নিস্তার পেয়েছিলাম। এর কিছুক্ষণ পর তুহিন ভাই আর নিটোল ভাই রুমে চলে আসলে, ইতরটা স্বাভাবিক সুন্দর কথাবার্তায় আমাকে বিদায় জানালে আমি কিছু না বলে নীচে নেমে আসি।

    ফেরার পথে কিরণ আমাকে এগিয়ে দেয়ার সময়ও আমি মুখ ফুটে ওকে কিছু বলতে পারছিলাম না কী হয়েছে একটু আগে আমার সাথে, কেবল নির্বাক হয়ে চুপচাপ বাসায় ফেরার বাসে চড়েছিলাম সেদিন।

    এর মাঝে আমার কাছে শয়তানটা একটা মেসেজ করে, আমি ভেবেছিলাম সে দুঃখপ্রকাশ করবে নিজের কৃতকর্মের জন্য!

    না! ভুল ভেবেছিলাম আমি! সে মেসেজে লিখে পাঠিয়েছিলো 'কেমন অনুভূতি হয়েছে তোমার?'

    অপমানে-অক্ষম রাগে-তীব্র ক্ষোভে আমি যখন হু হু করে কান্না করে উঠি, আমার হাত থেকে মোবাইলটা নিয়ে সর্বপ্রথম আমার উপর হয়ে যাওয়া অন্যায়টা জানতে পারে কিরণ!

    তাই আজকে তার সমর্থনটা আমার জন্য জরুরি ছিলো। এই প্রতিবাদ অনেক আগেই করতে পারতাম, কিন্তু কেন পারিনি সেই ইতিহাস আজকে আর টানলাম না।

    শুধু আমার #metoo আমি আজ জানাতে সাহস করলাম। আমি চাইনা কোন অনিচ্ছুক মানুষকে তার সায় ব্যতীত কোন ধরনের যৌন অভব্যতার শিকার হতে হোক। কোন মেয়েকেও না, ছেলেকেও না, ট্রান্স জেন্ডারের কেউকেও না, তৃতীয় লিঙ্গের কাউকে না, শিশু-কিশোর-বৃদ্ধ কাউকেই না!’

    me-2
    • নিউজ ট্যাগ:
    • me-2
    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close