সুনামগঞ্জে দলে দলে বিএনপি ছেড়ে আ’লীগে যোগ দিচ্ছে নেতাকর্মীরা
আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দল বদলের হিড়িক পড়েছে সুনামগঞ্জ জেলায়। দলে দলে বিএনপি নেতা-কর্মীরা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগে যোগ দিচ্ছেন। নির্বাচনের শেষ মূহুর্তে এমন দলবদলের ঘটনা নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
বিভিন্ন উপজেলায় বিএনপি নেতাকর্মীরা দল বেঁধে আওয়ামী লীগে যোগ দিচ্ছেন। তেমনি মনোনয়ন বঞ্চিত নেতাদের সমর্থকরাও মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ তুলে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করছেন। এর ফলে তৃণমূল বিএনপিতে অস্থিরতা বিরাজ করছে।
সম্পর্কিত খবর
গত শুক্রবার সুনামগঞ্জ-২ আসনে বিএনপির অর্ধ শতাধিক নেতাকর্মী আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। স্থানীয় সাংসদ ও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ড. জয়া সেনগুপ্তার হাত ধরে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে নৌকার পক্ষে কাজ করার অঙ্গিকার করেন তারা।
একইদিন সরমঙ্গল ইউনিয়নের জারুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত সমাবেশে যুবদল নেতা জুহান মিয়ার নেতৃত্বে অর্ধ শতাধিক নেতাকর্মী আওয়ামী লীগে যোগ দেন।
শনিবার জামালগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়ালী উল্লাহ সরকারের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন।
রোববার দুপুরে জামালগঞ্জে ৫০ জন নেতাকর্মী আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন। তারা এমপি মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের হাত ধরে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে নৌকাকে বিজয়ী করার অঙ্গিকার করেছেন।
এদিকে শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে নিজের আইডি থেকে পোস্ট দিয়ে ছাতক উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক ও পৌর কাউন্সিলর জসিম উদ্দিন সোমেন পদত্যাগ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, গত ২২ বছর ধরে তিনি বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয়। কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতারা এবার টাকার বিনিময়ে সুনামগঞ্জ-৫ আসনে মনোনয়ন দেওয়ায় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, খালেদ জিয়াকে জেলে রেখে কেন্দ্রীয় নেতারা মনোনয়ন বাণিজ্য করে প্রকৃত নেতাদের মনোনয়ন দিচ্ছেনা। এ কারণে তিনি দল ছাড়ার ঘোষণা দেন।
ওইদিন সন্ধ্যায় মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ এনে নেতাকর্মীরা ছাতক শহরে ঝাড়ু-মিছিলও করেছেন।
জানা গেছে, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের একটি গ্রুপ শিগগিরই আওয়ামী লীগে যোগ দিতে যাচ্ছে। যেকোনো সময় আনুষ্ঠানিকভাবে তারা আওয়ামী লীগে যোগ দিবেন। এ ব্যাপারে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গেও আলোচনা হয়েছে।
এসব ঘটনায় স্থানীয় বিএনপির রাজনীতিতে বিরাট প্রভাব ফেলেছে বলে করছেন নেতাকর্মীরা। এতে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে ভোট ও জনমত বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
এ ব্যাপারে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাডভোকেট বুরহান উদ্দিন বলেন, বিভিন্ন উপজেলা থেকে বিএনপির শীর্ষনেতারা পদত্যাগ করে শান্তি ও উন্নয়নের সংগঠন আওয়ামী লীগে যোগ দিচ্ছেন। স্বাধীনতার নেতৃত্ব দানকারী সংগঠনের পক্ষের ছাতাতলে আদর্শ মেনে যারাই আসবেন তাদেরকেই আমরা বরণ করব।
/পিবিডি/আরাফাত