• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

প্রধানমন্ত্রীর সামনে প্রমাণ দিতে হবে আমি আপনার দলীয় লোক!

প্রকাশ:  ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ২০:৫৪ | আপডেট : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৩:১২
মোস্তফা ফিরোজ

বেখবরঃ প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন। এটা রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সব টিভি চ্যানেল সরাসরি সম্প্রচার করে। সবারই আগ্রহ থাকে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পিএম কি বলেন তার দিকে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে এই সংবাদ সম্মেলন কোন কোন সাংবাদিকের আচার আচরণে পেশাদার সাংবাদিকরা বিব্রত হন। সাধারণ মানুষও সাংবাদিকদের এমন আচরণে হতাশ হন। তারা সাংবাদিকদের নিয়ে ঠাট্টা মশকরা করেন। নানা রকম শব্দ প্রয়োগ করে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেন, সেসব আমি আর নাই বললাম।

অথচ এই প্রধানমন্ত্রী যখন দেশের প্রথম বেসরকারি টিভির লাইসেন্স দেন, সেই একুশে টেলিভিশনের পক্ষ থেকে আমি তার নানা কর্মসূচি কাভার করতাম। একজন রিপোর্টার হিসাবে যখনই আমি সুযোগ পেতাম সব প্রটোকল ভেদ করে আমি প্রধানমন্ত্রীর সামনে মাইক্রোফোন হাতে তার পথ রোধ করে প্রশ্ন করেছি। এসব রেকর্ড ইটিভিতে এখনো আছে। আমার প্রশ্নের জবাবে তিনি যেসব বলতেন তা নিয়ে কেবল ইটিভি নয়, বিভিন্ন মিডিয়াতে শিরোনাম হতো। এটা ১৯৯৯ থেকে ২০০১ সালের কথা বলছি। সরাসরি প্রশ্ন করতাম। কোন ঘোরপ্যাচ না। কোন ছলা কলা না। কোন প্রশংসা না। সরাসরি। প্রধানমন্ত্রীও হাসিমুখে জবাব দিতেন। কই তিনিতো কখনো বিরক্ত হননি। হলে আমি কি আর তার বিট কাভার করতে পারতাম?

সম্পর্কিত খবর

    আর এখন কি এমন দেশে হয়ে গেলো যে প্রধানমন্ত্রীর সামনে যেয়ে আগে প্রমাণ দিতে হবে আমি আপনার দলীয় লোক। তারপর ইনিয়ে বিনিয়ে ছলাকলা করে প্রশ্ন করার নামে বক্তৃতা করতে হবে? আমিতো দেখলাম নোবেল প্রাইজ নিয়ে একজন প্রয়াত সাংবাদিক প্রধানমন্ত্রীকে যে কথা বললেন তাতে তিনি বিব্রত হচ্ছিলেন। তিনি তার কথায় বাঁধা দিচ্ছিলেন। তারপর তিনি নিবৃত্ত হননি। তিনি বলছিলেন নোবেল পাওয়ার জন্য সরকার যেনো লবিষ্ট নিয়োগ করেন। বোঝেন তার জ্ঞানের গভীরতা! ওই প্রস্তাব দিয়ে তিনি কি পিএম এর মর্যাদা বাড়ালেন? ভাবলাম এটাই মনে হয় শেষ তৈলাক্ত প্রশ্নের অধ্যায়। এর থেকে সবাই শিক্ষা নেবে। কিন্তু কিসের কি? আরও যেনো উৎসাহ বাড়লো কারো কারো।

    তার আগেও পিএম হাসিমুখে দু' একজনকে লজ্জা দিয়ে বলেছেন, তাহলে আপনার কোন প্রশ্ন নাই?

    এখন সিনিয়রদের পথ অনুসরণ করে জুনিয়াররাও এমন পাল্লা দিতে শুরু করেছেন তাতে মনে হয় তেলবাজ সিনিয়াররা দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছেন। তারা হয়তো ভাবছেন, তাদের সময় ফুরিয়ে আসছে।

    কিন্তু এসব করে না সরকার, না রাষ্ট্রের কারো উপকার হচ্ছে না। বরং জনমনে বিরুপ প্রতিক্রিয়া হচ্ছে। এখন এতো চ্যানেল। এতো সাংবাদিক। কিন্তু কিছু সাংবাদিকের ব্যক্তিগত মতলবের কারণে সবার সম্মান মর্যাদা নষ্ট হচ্ছে। প্লিজ এসব বাদ দিন। আর ক্ষতি করবেন না। এসব স্থুল প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রীর প্রিয় পাত্র হওয়া যাবে না।

    লেখক: হেড অব নিউজ বাংলাভিশন (ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকে )

    মোস্তফা ফিরোজ
    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close