ভাটির মানুষ হয়ে পাঠকের মনে চিন্তার জোয়ার আনা পীর হাবিবের জন্মদিনে শুভেচ্ছা
২০১২র দিককার কথা, স্কুলের গন্ধ গায়ে থেকে তখনও পুরোপুরি যায় নি। একটু-আধটু রাজনীতি, ছাত্র রাজনীতি নিয়ে মাথা ঘামানো শুরু করেছি। মফস্বলে বাস হওয়ায় ক্লাসের বাইরের পড়াশোনার তেমন সুযোগও পাইনা, ইন্টারনেটও হাতের নাগালে আসেনি। সেই সময়ে জানার প্রধান এবং সহজ মাধ্যম হচ্ছে দৈনিক পত্রিকা।
ধামরাইয়ের বারবাড়ীয়া বাজারে তখন বেশ কয়েকটা পত্রিকা আসে। সকালে বাজারে নাস্তা করার নাম করে সবগুলো পত্রিকা খুটিয়ে খুটিয়ে পড়ি। এই পড়ার মধ্যে কোন কোন লেখা জমিয়ে রাখি, কেটে বাসায় নিই, আবার পড়ি। এমন একদিন এক লেখায় চোখ আটকালো। চোখ আটকালো সেই লেখকের নামে। তারপর থেকে পত্রিকা আসতেই নিয়মিত আগে তার লেখা আছে কিনা খুঁজতাম।
সম্পর্কিত খবর
তার নাম পীর হাবিবুর রহমান।
যিনি আমার মনের অবচেতন চিন্তার অনেকগুলো শব্দ সাজিয়ে গুছিয়ে পত্রিকার পাতায় লিখে ফেলেন।
তার লেখা পড়তে পড়তে একসময় তাকে জানার চেষ্টা করতে থাকলাম। জানলাম, এই মহীরুহের জন্মস্থান সুনামগঞ্জের ভাটি অঞ্চলে।
পীর শব্দের মানে আমার কাছে ছিলো কোন এক পীর, হুজুর টাইপের কিছু একটা। তারা ধর্ম প্রচার করবে, ধর্মীয় ধারা বলবে।অথচ! আমি এমন এক পীরকে চিনলাম, যিনি ক্ষুরধার লেখার মধ্য দিয়ে যুক্তি ভর্তি একেকটা লাইন লিখেন, শব্দে শব্দে তিনি আমার মতো হাজারো পাঠককে সম্মোহিত করেন। আমাদের মগজে নাড়া দিয়ে বিবেকের কাঠগড়ায় আমার অবস্থানকে প্রশ্ন তোলান। সেখানে আমি একজন যুক্তিবাদী রাজনৈতিক আদর্শওয়ালা সাংবাদিককে খুঁজে পাই।
স্বপ্ন দেখতে শুরু করি তার মতো সাংবাদিক হয়ে উঠবার। সেই ২০১২ তে "ডাকসু তথা ছাত্র সংসদের প্রয়োজনীয়তা" দিয়ে শুরু, তারপর থেকে মুক্তিযুদ্ধ, তৎসময়ের রাজনীতি, সংকট, সম্ভাবনা, নতুন আলোচনার উদ্ভাবন, সরকারের সমালোচনা, সংকট সমাধানে তার দেখানো সহজ পথ। এসব নিয়ে তার লেখার মতো লেখবার স্বপ্ন দেখতাম আমিও।
আজ (১২ নভেম্বর) এই সাংবাদিক, আমাদের মতো অনেকের চিন্তার মগজে নাড়া দেয়া এই মানুষটির জন্মদিন।
ভাটির লোক হয়েও পাঠকের মনে ক্রমাগত চিন্তার জোয়ার তোলা এই লেখকের জন্মদিনে জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা,শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আরও শতবছর গণ মানুষের মগজে রাজনৈতিক চিন্তা শান দেয়ার কাজ করে যাবেন সেই প্রত্যাশায় জানাই শুভ জন্মদিন।
শুভ জন্মদিন প্রিয় লেখক পীর হাবিবুর রহমান।
(লেখকের ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)