মাহমুদউল্লাহ দুঃসময়ে!
প্রচারের আলোয় আশা নিয়ে তার তেমন আগ্রহ নেই। যে কারণে আড়ালে আবঢালেই থেকে চেষ্টা করেন নিজের সেরাটা দেয়ার। বিশেষ করে দলের প্রয়োজনে নিজেকে বিলিয়ে দিতেও দ্বিধা করেন না মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
শ্রীলংকার বিপক্ষে অবিশ্বাস্য এক জয়ের ম্যাচে নায়ক মাহমুদউল্লাহ। সারা দেশে তিনি এখন প্রশংসার বন্যায় ভাসছেন। শুক্রবার কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে ১৬০ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে টপঅর্ডারের ব্যাটসম্যানরা যখন প্যাভিলিয়নে মাথা নিচু করে চলে যাচ্ছিলেন, টাইগার সমর্থকরা তখন আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিল।
সম্পর্কিত খবর
শেষ দিকে বাংলাদেশের জয়ের জন্য তখন ৩৬ বলে প্রয়োজন ৫৬ রান। এমন কঠিন অবস্থা থেকে দলকে জয়ের স্বপ্ন দেখান তিনি। শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিলো ১২ রান। ওভারের প্রথম দুই বল বাউন্স দেন ইসুর উদানা। লেগ আম্পায়ার নো বলের কল করলেও সেই সুবিধা পায়নি বাংলাদেশ। যেটা নিয়ে অনেক নাটক হয়।
ওভারের প্রথম দুই বল থেকে রান নিতে না পারায় জয়ের জন্য ৪ বলে প্রয়োজন হয় ১২ রানের। তৃতীয় বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে সমর্থকদের আশা জাগিয়ে তুলেন। পরের বলে রুবেল হোসেনকে দুই রান নিলে ম্যাচ হেলে যায় বাংলাদেশের পক্ষে। এবার দুই বলে ৬। যেকোনো কিছু হতে পারে। উত্তেজনার পারদ যখন সর্বোচ্চ অবস্থানে ঠিক ওই সময় কোনো সুযোগ দেননি মাহমুদউল্লাহ। বোলার উদানাকে উড়িয়ে মেরে সীমানা পার করে দলের বিজয় ঝাণ্ডা উড়ান। তখনও এক বল বাকি, ফাইনালে বাংলাদেশ।
২০১৫ সালের বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টানা দুটি সেঞ্চুরি করে ইতিহাসের পাতায় নাম লেখান টাইগারদের নির্ভরতার প্রতীক মাহমুদউল্লাহ। এর আগে ওয়ানডে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যানের সেঞ্চুরি ছিল না। মাহমুদউল্লাহর এ কীর্তিতে বাংলাদেশ উঠে যায় বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে। এখন পর্যন্ত এটিই টাইগারদের সর্বোচ্চ সাফল্য।
টি-টোয়েন্টি কাঁপানো মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের টেস্টে বাংলাদেশের অন্যতম নির্ভরতার প্রতীক। টেস্টে তার অভিষেক হয় ২০০৯ সালের ৯ জুলাই। আর্নোস ভ্যাল স্টেডিয়ামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত ১ম টেস্টে তার টেস্ট অভিষেক ঘটে। অভিষেক টেস্টেই রিয়াদ বিপক্ষ দলের পাঁচজনকে আউট করে কৃতিত্ব দেখান। ফলে তিনি তৃতীয় বাংলাদেশি বোলার হিসেবে টেস্ট অভিষেকেই পাঁচ উইকেট লাভ করেন। তার ওই নৈপুণ্যে বাংলাদেশ দল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্টে জয়লাভ করে।
২০১৬ সালে এশিয়া কাপেও পাকিস্তানের বিপক্ষে অসাধারণ এক জয় উপহার দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। টি-টোয়েন্টির সেই টুর্নামেন্টে আগে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ১২৯ রান করে শহিদ আফ্রিদির পাকিস্তান। জবাবে ১০৪ রানে ৫ উইকেটে হারিয়ে বিপদে পড়ে যাওয়া বাংলাদেশকে টেনে তুলেন রিয়াদ। তার হার না মানা ঝড়ো ইনিংসে (১৫ বলের ২২ রান) বাংলাদেশকে আরও একটি অবিস্মরণীয় জয় এনে দেয়!সূত্র: যুগান্তর