• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

শিক্ষক নিয়োগ ও এমপিওভুক্তিতে দুর্নীতি-জালিয়াতি ফাঁস

প্রধান শিক্ষককে খুন-গুমের হুমকি সহকারী শিক্ষকের

প্রকাশ:  ১৮ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৭:১১
কাঠালিয়া (ঝালকাঠি) সংবাদদাতা

ঝালকাঠী জেলার কাঠালিয়ায় উপজেলায় হত্যা-গুমের হুমকি, জোরপূর্বক নিয়োগপত্র ও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর গ্রহণ প্রচেষ্টার অভিযোগে চেঁচরী রামপুর এম এল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাদী হয়ে রোববার দুইজনের বিরুদ্ধে জিডি দায়ের করেছেন। উপরোক্ত অভিযোগে বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক মো. সরোয়ার হোসেন (সোহরাফ) ও জাল-জালিয়াতীর মাধ্যমে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ প্রাপ্তির দাবীদার ননী গোপালের বিরুদ্ধে উক্ত জিডি দায়ের করা হয়েছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, ডিজির প্রতিনিধিসহ নিয়োগ বোর্ড সদস্যদের স্বাক্ষর জাল জালিয়াতির মাধ্যমে নিয়োগ ও এমপিওভূক্তকরণের ঘটনায় এলাকাজুড়ে সমালোচনার ঝড় বইছে বলে জানাগেছে।

সম্পর্কিত খবর

    চেঁচরী রামপুর এম এল মাধ্যমিক বিদ্যালয় সূত্রে ও আঞ্চলিক উপপরিচালক বরাবরে দেয়া অভিযোগে জানাযায়, নভেম্বর ২০১৭ইং তারিখে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মেহেদী হাসান বরাবরে নতুন এমপিওভূক্ত শিক্ষকদের একটি তালিকা আসলে তাতে অত্র বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসাবে ননী গোপালের নাম অন্তর্ভূক্ত দেখে বিস্মত হন। প্রধান শিক্ষক অত্র বিদ্যালয়ে ২০১৭ সালের এপ্রিল মাসে যোগদানের পর গত ৮ মাসে ননী গোপাল নামে কোনো শিক্ষককে ক্লাস করতে বা শিক্ষক হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে না দেখলেও তাকে এমপিওভুক্তকরণের ঘটনায় তিনি সহকর্মী ও ম্যানেজিং কমিটির সাথে আলোচনা করে বিষয়টি তদন্ত শুরু করেন।

    তাছাড়া তাকে ১০ ডিসেম্বর ২০১৬ ইং নিয়োগ পত্র প্রদান ও ১৫ ডিসেম্বর ২০১৬ যোগদান দেখানো হলেও এসংক্রান্ত ১ জানুয়ারি অবসর নেয়া সাবেক প্রধান শিক্ষক মশিউর রহমানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনিও এ ধরণের কোনো নিয়োগ বা যোগদানের বিষয় সম্পর্কে কিছুই জানেন না বলে নিশ্চিত করেন।

    এ অবস্থায় বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন ফরাজী উক্ত ননী গোপালকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে তৎকালীন সহকারী শিক্ষক সরোয়ার হোসেন (সোহরাফ) এর সহযোগিতায় শিক্ষক পদে যোগদান ও এমপিওভুক্ত হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন।

    এ সময় উপস্থিত বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক অরুন কুমার হালদার, সোহেল জমাদ্দার, হাবিববুর রহমান, আ. মান্নান, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য বাচ্চু হোসেন, মতিউর রহমানসহ বেশ কয়েকজন সাবেক শিক্ষার্থী জানায়, এ ঘটনা ও জালিয়াতির সাথে সরাসরি অত্র বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সরোয়ার হোসেন (সোহরাফ) জড়িত রয়েছে বলে জানান।

    সরোয়ার হোসেন ৮ লাখ টাকা উৎকোচের বিনিময়ে প্রধান শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, ডিজির প্রতিনিধিসহ নিয়োগ বোর্ড সদস্যদের স্বাক্ষর জাল জালিয়াতির মাধ্যমে নিয়োগ ও এমপিওভুক্তকরণের স্বাক্ষর জালজালিয়াতির মাধ্যমে ননী গোপাকে অত্র বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ ও যোগদান দেখিয়ে এমপিও তালিকাভুক্ত করিয়েছে।

    এ শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টি সরেজমিন তদন্ত করলেই সরোয়ার হোসেন সোরাফের সকল অপকর্ম ও দুর্নীতির চিত্র প্রকাশ্যে আনা সম্ভব হবে বলে তারা দাবি করেন।

    এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক মো. মেহেদী হাসান জানান, ননী গোপালকে কে বা কারা নিয়োগ দিয়েছে, কিভাবে বা কতোদিন পূর্বে নিয়োগ দিয়েছে তার কিছুই আমার জানা নেই। প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসাবে আমি আজ পর্যন্ত তাকে কখনো স্কুলে দেখিনি। তাকে নিয়োগ সংক্রান্ত কোনো কাগজপত্র বা রেজুলেশন নেই। শিক্ষক হাজিরা খাতায় আজ পর্যন্ত তার কোনো হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর পাওয়া যায়নি। তাই এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে প্রতিকার চাওয়ায় উক্ত ননী গোপাল ও তার সহযোগী শিক্ষক সরোয়ার হোসেন (সোহরাফ) আমাকে হত্যা-গুমের হুমকি দিচ্ছে। তাই জালিয়াতি চক্রের হাত থেকে তার প্রাণ বাঁচানোর জন্য গত রোববার আমি কাঠালিয়া থানায় একটি জিডি করেছি।

    এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান মো. জাকির হোসেন ফরাজি জানায়, শিক্ষক ননী গোপালের নিয়োগ সম্পর্কে আমাকে কিছু জানানো হয়নি। কিভাবে সে নিয়োগ পেলো তাও আমাদের বোধগম্য নয়।

    তবে তার নিয়োগে দুর্নীতি ও জালিয়াতির অভিযোগ ওঠায় বিদ্যালয়ের রেজুলেশন খাতা ও ২০১৫-২০১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষক হাজিরা খাতা জব্দ করা হয়েছে বলে তিনি বলেন।

    সারাদেশ

    অনুসন্ধান করুন
    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close