• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

নতুন ধান উঠলেও কমছে না চালের দাম

প্রকাশ:  ১৮ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৮:১৮
দেবাশীষ দত্ত, কুষ্টিয়া

নতুন ধান উঠলে উর্ধ্বমুখী চালের বাজার কিছুটা হলেও নিম্নমুখী হবে এমনটাই প্রত্যাশা ছিল ভোক্তাদের। বাজারে নতুন ধান উঠেছে ঠিকই কিন্তু কমেনি দাম বরং বেড়েছে। প্রায় সব রকমের চালে কেজিতে বেড়েছে ১-২টাকা। চালকল মালিকদের দাবি ধানের দাম বেশি হওয়ায় চালের দাম কমছে না। আর খুচরা বিক্রেতারা বলছে বাজারের নিয়ন্ত্রণ এখনো চালকল মালিকদের হাতেই। তাদের কারসাজিতেই কমছেনা চালের দাম। এই যখন অবস্থা তখন ভোক্তারা পড়েছেন বেকায়দায়। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষের যেন বেঁচে থাকা দায় হয়ে পড়েছে। উচ্চবিত্তদের সমস্যা না হলেও নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্তরা এখন কঠিন বাস্তবতার সম্মুখীন।

কুষ্টিয়া পৌরবাজারে চালকিনতে আসা চায়ের দোকানী আলম হোসেন জানান, সারা দিনে যা আয় হয় তার বড় অংশই চলে যায় চালের ওপর। তড়িতরকারীসহ অন্য জিনিসপত্র কেনার উপায় কোথায়। শুনেছি নতুন ধান উঠলে নাকি চালের দাম কমবে, কিন্তু নতুন ধান উঠলেও চালের দাম কমার লক্ষণ নেই।

সম্পর্কিত খবর

    কুষ্টিয়া শহরের সুখনগর বস্তির বাসিন্দা রিক্সাওয়ালা রফিকুল ইসলামেরও অবস্থা একই। সারাদিন রিক্সা চালিয়ে যা আয় হয় তা দিয়ে রিক্সা মালিককে ভাড়া দিব কি আর চাল ডালই বা কিনব কি দিয়ে? তার মতে চালের দাম কিছুটা কমলে অন্তত পরিবার নিয়ে খেয়ে পরে বাঁচতে পারতাম।

    চায়ের দোকানী আলম আর রিক্সাওয়ালা রফিকের তো চালের দাম বৃদ্ধি কিংবা কমার কার জানার কথা নয়। তবে তারা এটুকু বলতে পারেন নতুন ধান উঠলে চালের দাম কমার কথা। কিন্তু সেই লক্ষণও তারা দেখছেন না।

    পৌরবাজারের পাইকার ব্যবসায়ী আকবর আলী বলেন মোকামেই চালের দাম বেশি। বেশি দামে সেখান থেকে চাল কিনতে হচ্ছে। তিনি জানান ধানের দাম বেশি থাকায় চালকল মালিকরা বলছেন চালের দাম বেড়েছে। তবে নতুন ধান উঠায় চালের দাম বৃদ্ধির কথা নয় বলে মনে করেন এই পাইকার ব্যবসায়ী।

    কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বিআইডিসি বাজারের খুচরা বব্যসায়ী সাইফুল ইসলাম বলেন, মোকামেই চালের দাম বেশি তাই আমরাও বেশি দামে চাল বিক্রি করছি। এতে আমাদের কিছু করার নেই।

    দেশের অন্যতম বৃহত্তম চালের মোকাম কুষ্টিয়ার খাজানগরের চালকল মালিক ফ্রেশঅ্যাগ্রো’র স্বত্ত্বাধিকারী ওমর ফারুক অবশ্য দাবি করেন খুচরা বাজারে যে হারে চালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে সেই হারে আমাদের মোকাকে চালের দাম বাড়েনি। খুচরা বিক্রেতারা অধিক মুনাফা লুটছে বলেও দাবি করেন তিনি।

    তিনি জানান, তার মিলে মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৬ টাকা কেজিতে। কিন্তু খুচরা বিক্রেতারা বিক্রি করছেন ৫৮-৫৯ টাকা। তার হিসেব মতে চালের দাম কেজিতে বেড়েছে ১টাকা। কিন্তু খুচরা বাজারে ২-৩টাকা কেজিতে বাড়িয়েছে।

    কুষ্টিয়া চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদিন সাধু জানান, বেশি দামে ধান কিনতে হচ্ছে তাই চালের দামও বেশি। তবে খুরচা বিক্রেতারা ইচ্ছেমত দরে বিক্রি করছে চাল। তিনি মনে করেন নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হলে চালের বাজার স্থিতিশীল থাকবে। তবে ধানের দাম যেহারে বাড়ছে তাতে করে চালের দাম আরো বাড়তে পারে বলেও মনে করছেন চালকল মালিকদের সংগঠনের এই নেতা।

    অবশ্য জেলা বাজার নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন চালের বাজার নিয়ন্ত্রনেই রয়েছে। নিয়মিতই বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে। বিক্রেতাদের ইচ্ছেমত দাম হাঁকানোর সুযোগ নেই। বিক্রেতাদের মূল্যতালিকা টাঙানোরও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

    বাজারে মিনিকেট চাল প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৮- টাকায়, কাজললতা-৫২টাকা, আটাশ-৫০ টাকা, মোটা-৪০টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

    সারাদেশ

    অনুসন্ধান করুন
    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close