চবি শিক্ষক আনোয়ার কারাগারে, প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয় অবরোধ
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ সম্পাদক দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর হত্যা মামলায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাবেক সহকারী প্রক্টর আনোয়ার হোসেন চৌধুরীকে কারাগারে পাঠনোর প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয় অবরোধ করেছে ছাত্রলীগ। সোমবার দুপুর ১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় মূল ফটকে প্রায় শতাধিক ছাত্রলীগ নেতাকর্মী দুপুর ১টার দিকে জড়ো হয়। এ সময় তারা বিশ্ববিদ্যালয় মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়। দুপুর দেড়টার শহরগামী শাটলট্রেনের চাবি কেড়ে নেয় তারা। এ কারণে বিশ্ববিদ্যালয় রুটে শাটল চলাচল বন্ধ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশন চত্বরে সড়কের উপর টায়ার তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শহরমুখী বাসগুলো আটকে দেয় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। এ কারণে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শহরমুখী কোন বাস ছেড়ে যায়নি। ফলে আটকা পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা কর্মচারীরা।
সম্পর্কিত খবর
চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আজম নাছির উদ্দিনের অনুসারী ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ইফতেখার উদ্দিন আয়াজ পূর্বপশ্চিমকে জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের একটি ঘটনায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে শিক্ষক আনোয়ার হোসেন চৌধুরী, ছাত্রলীগ সভাপতি টিপু, সাবেক সভাপতি জামশেদসহ আজম নাছির উদ্দিন ভাইয়ের অনুসারী সিনিয়র নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দিয়াজের মা ও বোন মামলায় জড়িয়েছে। আজকে এ মিথ্যা মামলায় একজন সম্মানিত শিক্ষককে কারাগারে যেতে হয়েছে। তার প্রতিবাদে ছাত্রলীগসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছে। অবিলম্বে এই শিক্ষককে মুক্তি দিতে হবে। না হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে লাগাতার অবরোধের মত কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
চবি শিক্ষক আনোয়ার হোসেন চৌধুরীর পক্ষের আইনজীবি এডভোকেট কামরুল হোসেন জানান, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ সম্পাদক দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় দুই নম্বর আসামী করা হয় চবি সমাজতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক আনোয়ার হোসেন চৌধুরীকে। ২০১৬ সালের ২৩ নভেম্বর দায়ের হওয়া সিআর মামলাটি গত ২৬ অক্টোবর মামলাটি এফআইআর করার আদেশ দেয় আদালত। এফআইআর করার পর শিক্ষক আনোয়ার হোসেন চৌধুরী উচ্চ আদালত থেকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন নেন। রোববার এ জামিনের মেয়াদ শেষ হলে তিনি নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে আদালত তা না মঞ্জুর করেন।
উল্লেখ, গত বছরের ২০ নভেম্বর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় দুই নম্বর গেইটের বাইরে বাজার সংলগ্ন একটি বাসায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদেও সহ সম্পাদক ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুর পর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে দিয়াজের মৃত্যুকে আত্মহত্যাজনিত বলে উল্লেখ করে।
ঘটনার পর ২৩ নভেম্বর দিয়াজের মা জাহেদা আমিন চৌধুরী বাদি হয়ে আদালতে একটি মামলা রুজুর আবেদন জানিয়ে অভিযোগ দাখিল করে। এ অভিযোগের ভিত্তিতে আদালত দিয়াজের মরদেহের দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত করতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধানকে নির্দেশ দেন।
দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে দিয়াজের মৃত্যু শ্বাসরোধজনিত হত্যাকান্ড বলে মতামত দেন ফরেনসিক ডাক্তাররা।