• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

মাদারীপুরে পানির দরে সবজি, দিশেহারা কৃষক

প্রকাশ:  ১৮ মার্চ ২০১৮, ১১:০৪
মাদারীপুর প্রতিনিধি

যে লাউ প্রতিটি ৮০-১শ টাকা বিক্রি হতো সে লাউ এখন হাক ডাকিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিক্রি হচ্ছে ৫ -১০ টাকা। টমেটোরতো আরো বেহাল দশা উন্নতমানের হওয়া সত্বেও বিক্রি হচ্ছে মাত্র ২-৩ টাকায়। ভাল মানের বেগুন ফলিয়ে মিলছে কেজি প্রতি ৫-৭ টাকা। আর কফিতো পড়ে থাকছে বস্তাবন্দীই। প্রতিটি শাক সবজির মুল্যই নিম্নমুখী। ঠিক এমন পরিস্থিতিই বিরাজ করছে মাদারীপুরের বিভিন্ন হাট বাজারগুলোতে। ভাল ও বাম্পার ফলিয়েও ন্যায্যমুল্য না পেয়ে কৃষকের মাঝে এখন হাহাকার বিরাজ করছে। হাটে এসে পরিবহন ব্যয়ও না উঠায় অনেকে মাঠেই রেখে দিচ্ছেন কষ্টার্জিত ফসল। এমন পরিস্থিতিতে অঞ্চল ভিত্তিক সংরক্ষনাগার ও প্রক্রীয়াজাতকরন শিল্প স্থাপনের দাবী উঠেছে।

পদ্মা আড়িয়াল খাসহ অসংখ্য নদ নদী খাল বিল অধ্যুষিত মাদারীপুরসহ অত্র অঞ্চলের মাটি পলি সমৃদ্ধ । তাই এসকল এলাকায় উন্নত মানের সবজি সর্বত্রই সমাদৃত। চলতি বছর জেলার ৭ শ ৭০ হেক্টর জমিতে লাউ, ২শ ২০ হেক্টর জমিতে টমেটো, ১শ ২০ হেক্টর জমিতে বেগুনসহ প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে সবজি জাতীয় ফসল আবাদ হয়েছে। এছাড়াও অনেকেই বাড়িতে ব্যক্তিগত উদ্যোগে ফসল চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। অনুকুল পরিবেশের ফলে উৎপাদনও হয়েছে বাম্পার। কৃষক পড়েছেন চরম বিপাকে। মাদারীপুরসহ অত্র অঞ্চলে সবজি সংরক্ষনে কোন সংরক্ষনাগার বা কোল্ড স্টোর না থাকায় পানির দরেই বিক্রি করতে কষ্টার্জিত এসকল ফসল। হাট বাজারেও বিক্রি না হওয়ায় কৃষক ফেরি করে গ্রামে গ্রামে মহল্লায় মহল্লায় ঘুরে ঘুরে হাক ডেকে ফসল বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে। অনেকে মাঠেই রেখে দিচ্ছেন টমেটো, লাউ, বেগুন, কফিসহ নানান ফসল। প্রতিটি বড় বড় লাউ বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ৫-১০ টাকা পাইকারি বাজারে দাম আরো নিম্নমুখী। টমেটো ২-৩ টাকা, ভাল মানের বেগুন কেজি প্রতি ৫-৭ টাকা। ফুল কফি বাধা কফি ১০-১২ টাকা করে বিক্রি করলেও তেমন চাহিদা নেই। এছাড়া আলু, পেয়াজ, মরিচসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রতিটি সবজির দামই নিম্নমুখী। তাই লাল, বেগুনের চোখ জুড়ানো সবজি এখন কৃষকের গলার কাটায় রুপ নিয়েছে। সরকারের দীর্ঘস্থায়ী পরিকল্পনা ও নীতিমালার অভাবে প্রতিনিয়ত ভুক্তভোগী হচ্ছেন দেশের কৃষক। তাই ঘাম ঝড়ানো কষ্টার্জিত ফসল বা সবজি সংরক্ষনের ব্যবস্থা না করা গেলে কৃষি থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে কৃষক। তাই সরকারকে কার্যকর ও দীর্ঘস্থায়ী পদক্ষেপ নেয়ার দাবী কৃষকের।

সম্পর্কিত খবর

    কৃষক বাবুল, সামচু, রাসেল, মোতালেব ও বিক্রেতারা ইসমাল, জয়নাল, মকলেছ বলেন, আামাদের দাবী অঞ্চল ভিত্তিক সংরক্ষনাগার , সবজি প্রক্রীয়াজাতকরন শিল্প স্থাপনের। এবং আমাদের দাবী বিদেশে রপ্তানীর ব্যবস্থা করারও। এহন অবস্থায় অনেকেই কৃষি থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন।

    মাদারীপুর কৃষি কর্মকর্তা সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, কৃষকের মতামতের সাথে একমত পোষণ করছি জনগন খাবারের তালিকায় সবজিটাকে বেশী রাখালে ভাল হয়। এছাড়াও আমি সরকারে কাছে দাবী জানাই অঞ্চল ভিত্তিক সংরক্ষনাগার, সবজি প্রক্রীয়াজাতকরন শিল্প স্থাপনের। মাদারীপুর কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর, উপ-পরিচালক, আব্দুল গফুর বলেন, সবজি ভাল হলে একটু দাম কম থাকবে এটাই স্বাভাবিক। তবে অঞ্চল ভিত্তিক সংরক্ষনাগার ও সবজি প্রক্রীয়াজাতকরণ শিল্প স্থাপনের জন্য মন্ত্রণালয় জানানো হবে।

    সারাদেশ

    অনুসন্ধান করুন
    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close