বরগুনায় চকলেট চুরির অভিযোগে শিশু নির্যাতন

বরগুনায় চকলেট চুরির অভিযোগে শিশু সদনের রাজিব (৮) নামের এক শিশুকে নির্যাতন করেছে জসীম নামের একজন ব্যবসায়ী। সোমবার বিকেলে বরগুনার স্টেডিয়াম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহতাবস্থায় এলাকাবাসী শিশুটিকে উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেছে পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিমে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় ব্যবসায়ী জসিমকে আটক করেছে পুলিশ। রাজিব বরগুনা শিশু সদনের তত্ত্বাবধানে গগণ মেমোরিয়াল বিদ্যালয়ে ২য় শ্রেণিতে অধ্যায়নরত।

প্রত্যক্ষদর্শিরা জানান, রাজিব বরগুনা সদর উপজেলার যুগিয়া এলাকার মামুন ও রেখা দম্পতির সন্তান। বাবা মা’র বিচ্ছেদের পর গত চার বছর ধরে সে বরগুনা এতিমখানা শিশু সদনের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। সোমবার বিকেলে শহরের গগন আলী সড়কের বাসিন্দা ও স্টেডিয়াম এলাকার ব্যবসায়ী জসীম চকলেট চুরির অপবাদে তার দোকানের সামনে শিশু রাজিবকে বেধড়ক মারধর করে ফেলে রাখে। অচেতন অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে বরগুনা হাসপতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করে। শিশু সদনের অপর একজন বাসিন্দা সবুজ জানান, খবর পেয়ে আমরা রজিবকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপতালে নিয়ে আসি। সেসময় থেকে এখনো পর্যন্ত রাজিব অজ্ঞানবাস্থায় রয়েছে।

ঘটনার পরপর বরগুনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জসীমকে আটক করেছেন। বরগুনার সিভিল সার্জন ডা. হুমায়ুন হাসান শাহীন বলেন, ঘটনাটি হৃদয় বিদারক। শিশুটির শরীরে বাহ্যিক কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তার শরীরের অভ্যন্তরে আঘাত পরীক্ষার করা হচ্ছে। তবে সে মানসিকভাবে চরম বিপর্যস্ত এটা আমরা নিশ্চিত। পরীক্ষা নীরিক্ষার করে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

বরগুনা সরকারি শিশু পরিবারের উপ-তত্ত্বাধায়ক লায়লা আনজুম তানিয়া বলেন, খবর পেয়ে আমরা শিশুটিকে উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপতালে ভর্তি করিয়েছি। সেখানকার চিকিৎসকদের পরামর্শে রাজিবকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালে পাঠানোর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। অপরদিকে তাদের পক্ষ থেকে বরগুনা থানায় অভিযোগও প্রকৃয়াধাীন রয়েছে বলে তানিয়া জানান। বরগুনার জেলা প্রশাসক মোঃ মোখলেছুর রহমান বরগুনা হাসপতালে পরিদর্শনে এসে চিকিৎসাধীন শিশুটির শারীরিক অবস্থার খোঁজ খবর নিয়ে তাঁকে প্রয়োজনীয় সব ধরনের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়াও পুলিশকে যথাযথ আইনী পদক্ষেপ নেয়ার অনুরোধ করেছেন।

বরগুনার পুলিশ সুপার বিজয় বসাক বলেন, খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক বরগুনা থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করে এবং ঘটনায় জড়িত ব্যবসায়ী জসীমকে আটক করে। আমরা শিশুটির চিকিৎসার সব ধরনের সহায়তা নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি। তাকে আমাদের পক্ষ থেকে সব ধরনের আইনি ও মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করা হবে।