• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো দিয়ে পারাপার

প্রকাশ:  ২০ মার্চ ২০১৮, ১৬:৩৩
লালমনিরহাট প্রতিনিধি

চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি বন্যায় ভেঙ্গে যাওয়ায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলায় চলবলা ইউনিয়নের ৮ গ্রামের মানুষকে বাশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে। এতে করে চরম দুর্ভোগে পড়েছে ৮ গ্রামের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ। তবে ব্রীজ হলেই আর দুর্ভোগ পোহাতে হবে না ওই মানুষ গুলোকে। উপজেলার বারাজান গ্রামের কালীরকুড়া এলাকায় ডোবা নামক শাখা নদীর উপর অবস্থিত একটি সুইস গেটের পাশেই ভেঙ্গে যাওয়া অংশে ওই বাশের সাঁকোটি তৈরি। যেখানে ব্রীজ আছে একটি রাস্তাও ছিলো। কিন্তু বন্যায় ব্রীজের কিছু না হলেও তার পাশেই রাস্তার অনেকটা অংশ ভেঙ্গে যাওয়ার পর থেকে স্থানীয়দেন চলাচলে চরম দূর্ভোগে পড়ে। তাই সবাই মিলে ওই বাশের সাঁকোটি তৈরি করলেও কমেনি দূর্ভোগ। অনেক বেশী দুর্ভোগে পড়েছে স্কুল-কলেজ গামী শিক্ষার্থীরা। এখন শুধু ব্রিজটি ঠিকই আছে, কিন্তু নেই পারাপারের সড়ক।

জানা গেছে, উপজেলার বারাজান গ্রামের ডোবা নদীর ওপর প্রায় ১৬ বছর আগে এ সুইস গেট নির্মাণ করা হয়। সাম্প্রতিক বন্যায় পানির তীব্র স্রোতে সুইস গেট গেট সংলগ্ন সড়কটি ভেঙে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ফলে চলবলা মদনপুর, সোনারহাট, বান্দের কুড়া, দুহুলী, বারাজান ও সুকানদীঘি এলাকার প্রায় ৩০ হাজার মানুষের যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এই এলাকার মানুষের কেউ জীবনের ঝুকি নিয়ে সাঁকোতে করে পার হচ্ছে আর কেউ বা হাটু পানিতে নেমে পার হচ্ছে।শুধু তাই নয় ওই গ্রাম গুলোর কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পন্য শহরের নিয়ে যেতে পারে না। শহরে নিয়ে গেলে ভালো দাম পাওয়া যায়। আর রাস্তা না থাকায় পাইকার এসে কিনে নিয়ে যায় এতে করে ভালো দাম পান তারা। অনেক পরিবারের অসুস্থ্য কাউকে সহজে উপজেলা-জেলা স্বাস্থ্য-কমপ্লেক্সে নিয়ে যেতে পারেন না। তাদেরকে খুবই কষ্ট করতে হয়।

সম্পর্কিত খবর

    এদিকে ৮গ্রামের ৫ শতাধিক স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী ওই সাঁকো দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উপজেলার বারাজান এসসি উচ্চবিদ্যালয়, বারাজান নয়া মহাবিদ্যালয়, তেঁতুলিয়া দাখিল মাদরাসা, উত্তর বাংলা কলেজ, দুহুলী স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং অপর দিকে বান্দেরকুড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর বান্দেরকুড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়, মদনপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাতায়াত করছে।

    এ ব্যাপারে ওই এলাকার বাসিন্দা উপজেলার কাকিনা উত্তর বাংলা কলেজের শিক্ষার্থী আজিজুল ইসলাম জানান, আমরা এই এলাকা থেকে কয়েক শতাধিক শিক্ষার্থী এই বাশের সাঁকো দিয়ে পার হই। তারপর স্কুল কলেজে যাই। বাশের সাঁকোটি ঝুঁকিপূর্ন হলেও কোন কিছুই করার নেই। কারন স্কুল কলেজতো যেতেই হবে। আর যদি এ জায়গায় সড়ক তৈরি করা হয় তাহলে শিক্ষার্থীসহ সর্ব স্তরের মানুষ সস্তি ফিরে পাবে।

    এ ব্যাপারে ওই এলাকার রেজাউল করিম শাহীনসহ অনেকের সাথে কথা হলে তারা জানান, একমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম এ রাস্তাটি দিয়ে কয়েক গ্রামের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ উপজেলাসহ জেলা শহর এমননি বিভিন্ন জরুরী কাজে বাইরে যায়। ওই সব মানুষই নয় অনেক সময় অসুস্থ রোগীকে হাসপাতালে নিতে গিয়ে রোগীর পরিবারকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। তাই এর দ্রুত সমাধান করলে এমন দুর্ভোগ থেকে সকলেই মুক্তি পাবেন। ওই এলাকার কৃষক হামিদুল ইসলাম জানান, রাস্তা না থাকায় ভ্যান বা কোন যানবাহন এই এলাকায় আসতে পারে না। ফলে আমাদের উৎপাদিত সবজি থেকে সকল প্রকার ফসল আমরা বাজারে নিতে পারি না। অনেক কষ্ট করতে হয়। আর পাইকার এসে নিয়ে গেলে তারা অনেক কম দামে নিয়ে যায়। ফলে আমাদের তেমন মুনাফা হয় না। রাস্তাটি সংস্কার হলে আমাদের আর লোকসান গুনতে হবে না।

    চলবলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজু জানান, ওই সড়ক দিয়ে প্রতিনিয়ত স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রী, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ চলাচল করেন। কৃষকেরা তাদের উৎপাদিত ফসল হাটবাজারে নিয়ে যান। তাই দ্রুত সড়কটি সংস্কার প্রয়োজন। রাস্তাটি দ্রুত সংস্কারের পদক্ষেপ নেয়ার জন্য এর মধ্যে কথাও বলেছি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে। এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী কর্মকর্তা পারভেজ নেওয়াজ খান জানান, গত বন্যায় সড়কটির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বাজেটে পেলে সড়কটির দ্রুত সংস্কার করা হবে।

    সারাদেশ

    অনুসন্ধান করুন
    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close