• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করছে কোমলমতি ছাত্রছাত্রী

প্রকাশ:  ২৪ মার্চ ২০১৮, ১০:০৭
গাইবান্ধা প্রতিনিধি

গাইবান্ধা সদর উপজেলার কামারজানী ইউনিয়নের কলমু এফএনসি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনটি ব্রহ্মপুত্র নদীতে বিলীন হয়েছে ৮ মাস হলো। কিন্তু আজও হয়নি নিজস্ব একটি জায়গা, গড়ে ওঠেনি অবকাঠামো। এখন কামারজানী উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মাঠে চটে বসে পাঠদান করানো হচ্ছে এই বিদ্যালয়ের দেড়শ শিক্ষার্থীকে। এতে করে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে কোমলমতি এসব ছাত্রছাত্রীদের।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বিদ্যালয় ১৯৪৫ সালে স্থাপিত হয়। সরকারিকরণ করা হয় ১৯৭৩ সালে। শিক্ষক-কর্মচারি রয়েছেন ৪ জন এবং শিক্ষার্থী রয়েছে ১৫১ জন। ২০১৭ সালের ১৭ জুলাই বিদ্যালয়টির ভবন ব্রহ্মপুত্র গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এরপর থেকে কামারজানী উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মাঠে পাঠদান করানো হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। এসব শিক্ষার্থীদের পাঠদানের সময় উড়ে আসা ধুলোবালি ও রোদের কারণে গরমে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। দেখা গেছে, কামারজানী উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে মাঠের উত্তর পাশের নিচু জায়গায় বাঁশের খুঁটি পুঁতে তার উপরে টিন দিয়ে ছায়ায় বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা বাড়ি থেকে আনা প্লাস্টিকের বস্তার উপরে বসে ক্লাস করতে হয় তাদের। রাস্তা দিয়ে মোটরসাইকেল চলাচলের সময় রাস্তার ধুলো-বালি উড়ে এসে গায়ে পড়ছে শিক্ষার্থীদের। রোদ থেকে রক্ষা পেতে প্রতি ঘণ্টায় ঘণ্টায় জায়গা বদল করে শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া এখন যেখানে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করছে সে জায়গাটা নিচু। সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি জমে থাকে। তখন পাঠদান বন্ধ রাখতে হয় এসব কোমলমতি শিক্ষার্থীদের। এসব সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে জরুরি নিজস্ব অবকাঠামো নির্মাণ করে বিদ্যালয়টি স্থানান্তর করা প্রয়োজন। কিন্তু শিক্ষা বিভাগের পক্ষ থেকে বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণের উদ্যোগ না নেওয়ায় অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন।

সম্পর্কিত খবর

    পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী কুইল মিয়া, ইশিতা ও আক্তার, তৃতীয় শ্রেণির চম্পা রানী, মাহিয়া মাহবুবা ও ফুয়াদ মিয়া জানায়, আমাদের নিজেদেরকে বাড়ি থেকে বস্তা এনে বসে পড়াশোনা করতে হচ্ছে। রোদের কারণে পড়ায় মনোযোগ নষ্ট হচ্ছে। এছাড়া জায়গা কম থাকায় বসে লিখতে ও পড়তে সমস্যা হচ্ছে। রাস্তা দিয়ে সাইকেল-মোটরসাইকেল, ঘোড়ার গাড়ি চলাচলের সময় ধুলোবালি উড়ে এসে চোখে-মুখে পড়ে। আমরা খুব সমস্যায় আছি।

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক বলেন, বিদ্যালয়টির সভাপতি জমির ব্যবস্থা করবেন বলে শুধু সময়ক্ষেপণ করছেন। তিনি প্রকৃতপক্ষে বিদ্যালয়ের জমি ও অবকাঠামো নির্মাণের জন্য কোনো উদ্যোগই নিচ্ছেন না। এভাবে পড়াশোনা করার কারণে ছাত্রছাত্রীদের পড়ায় মনোযোগ থাকে না। তারা পিছিয়ে যাচ্ছে।

    প্রধান শিক্ষক মোছা. আফরোজা বেগম বলেন, শিক্ষার্থীদের পাঠদান করানো নিয়ে আমাদের সমস্যায় পরতে হচ্ছে। রাস্তা দিয়ে মোটরসাইকেল চলাচলের সময় ধুলো উড়ে এসে চোখে-মুখে পড়ে। আমরা এখন যেখানে আছি বৃষ্টি হলেই সেখানে পানি জমে। ফলে পড়ালেখা বন্ধ রাখতে হয়। খুব তাড়াতাড়ি নিজস্ব জায়গা ও ভবন দরকার আমাদের। বিদ্যালয়টির সভাপতি মো. শফিউল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ের জন্য ২৮ শতাংশ জমি ক্রয় করা হয়েছে। আগামী মাসে দলিলের কাজ শেষ করতে পারলে ওই জায়গায় মাটি ভরাট করে উঁচু করা হবে ও অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে।

    জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আমিনুল ইসলাম মন্ডল বলেন, বিদ্যালয়টির বিস্তারিত তথ্য আমরা অধিদপ্তরে পাঠিয়েছি। সামান্য কিছু বরাদ্দ এসেছে। যা দিয়ে অস্থায়ী ঘর নির্মাণ করে পাঠদানের ব্যবস্থা করা হবে।

    সারাদেশ

    অনুসন্ধান করুন
    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close