• মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

খাইরুলের বিরুদ্ধে আবারও টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

প্রকাশ:  ২৫ এপ্রিল ২০১৮, ১৬:২২ | আপডেট : ২৫ এপ্রিল ২০১৮, ১৬:২৯
রাজশাহী প্রতিনিধি

রাজশাহী জেলার বাগমারা উপজেলার সমবায় অফিসের সহকারী পরিদর্র্শক মোঃ খাইরুল ইসলামে বিরুদ্ধে আবারও দুই লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।

কাজ করে দিবো বলে বিভিন্ন জনের কাছ হতে মোটা অংকের টাকা নিয়ে আর সেই টাকা ফেরত দেয়নি। পরবর্তিতে তার সাথে কথা বলা ও সাক্ষাত করতে চাইলে কাউকেই পাত্তা দেয়নি। এমনকি মোবাইল ফোনে বারবার যোগাযোগ করা হলে কোন সময় ফোন রিসিভ করে দেখা করবো বলে আশ্বাস দেয় আবারও কোন সময় ফোন রিসিভ করে না। আবারও কোন সময় সে কারো কাছে টাকা নেয়নি বলে অস্বীকার করে আসছে। ধৃত এই দুর্নীতিবাজ সমবায় পরির্দশক এভাবে লোকজনকে ঠকিয়ে প্রচুর অর্থবিত্তের মালিক হয়েছে ।

সম্পর্কিত খবর

    এই অসাধু কর্মকর্তার চালবাজি কাজে অতিষ্ঠ হয়ে কোন উপায় না পেয়ে টাকা উদ্ধারের জন্য তার বিরুদ্ধে জেলা সমবায় রাজশাহী বরাবর অভিযোগ দায়ের করেছেন।

    এইসব অভিযোগের অনুলিপি, মহা-পরিচালক, দুর্নীতি দমন কমিশন ঢাকা, উপ-পরিচালক দুর্নীতি দমন কমিশন রাজশাহী, নিবন্ধক ও মহাপরিচালক সমবায় অধিদপ্তর ঢাকা, জেলা প্রশাসক রাজশাহী, যুগ্ন নিবন্ধক বিভাগীয় কার্যালয় রাজশাহী ও উপজেলা সমবায় অফিসার বাগমারা অফিসে অনুলিপি ডাক যোগে পাঠিয়েছে।

    গোদাগাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ রুহুল আমিনের লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানাযায়, সহকারি সমবায় পরিদর্শক মোঃ খাইরুল ইসলাম গোদাগাড়ী উপজেলা সমবায় অফিসে কর্মরত অবস্থায় পরিচয় হয়। সে কেশবপুর মৌজার ৮৮৮ ও ৫৮২ দাগের দুটি পুকুর লিজ করিয়া দেবে বলিয়া সমিতি ও পুকুর লিজ বাবদ ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা নেয়। টাকা নেওয়া ২ বছর পার হয়ে গেলেও গোদাগাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ রুহুল আমিন কে লিজ করে দিতে পারে নি। সে ২০১৬ সালের আগষ্ট/সেপ্টেম্বর মাসে গোদাগাড়ী উপজেলা হতে বাগমারা উপজেলায় বদলি হয়ে যায়। তার কাছে পাওনা টাকা চাইতে গেলে সে গত ২৮ ফেব্রুয়ারী টাকা পরিশোধ করে দেব বলে অঙ্গীকার করে কিন্তু সে এখন পর্যন্ত টাকা পরিশোধ করেনি বরং টাকা ফেরৎ না দিয়ে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করা সহ হুমকি প্রদান করে আসছে।

    এছাড়াও একই দুর্নীতিবাজ সমবায় পরিদর্শক খাইরুলের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ তুলে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ পত্র পাঠিয়েছেন গোদাগাড়ী ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের সদস্য মোঃ রফিকুল ইসলাম। রফিকুল ইসলাম অভিযোগ পত্র হতে জানাযায়, এই অসাধু কর্মকর্তার সাথে গোদাগাড়ীতে থাকা অবস্থায় ইউপি সদস্য কে তিনিটি মৎস্যচাষী সমিতি তার অফিস হতে নিবন্ধন করে দিবে তার বিনিময়ে ৬০ হাজার টাকা লাগিবে। যেহেতু সে একজন চাকুরীজীবি এবং তার অফিসে রিজিষ্ট্রেশন হবে তাই তার কথায় রাজি হয়ে ৬০ হাজার টাকা দেয়। সেই সময় খাইরুল জানায় ১ মাসের মধ্যে সমিতি রেজিস্ট্রেশন হয়ে যাবে কিন্তু দুই বছর অতিবাহিত হয়ে গেলেন আজও সমিতি রেজিস্ট্রেশন হয়নি । পরবর্তিতে একাধিকবার তার কাছে টাকা ফেরত চাইতে গেলে আজদেব কাল দেব বলে কালক্ষেপন করে আসছে।

    দুর্নীতিবাজ এই সমবায় পরিদর্শন মোঃ খাইরুল ইসলাম শুধু এই দুজনের কাছে হতে নই বহু জনের নিকট হকে পুকুর লিজ ও সমিতি নিবন্ধন করে দিবো বলে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

    এর আগে গোদাগাড়ী পৌর এলকার মোঃ আকবর আলীর নিকট হতে এই দুর্নীতিবাজের কর্মকর্তা ভূয়া জাল দলিল করে গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের স্বাক্ষর জাল করে পুকুর লিজের নামে দেড় লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়।

    কিছু দিন আগে গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিস হতে পুনরায় পুকুর লিজ প্রদানের তালিকা প্রকাশ করলে সেই পুকুর আবারও তালিকায় আসে । সেটি অনুসন্ধান করে জানাযায় পুকুর লিজের দলিলটি ছিলো জাল।

    তার বিরুদ্ধে জেলা সমবায় অফিস সহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দাখিল করে আকবরের কাছে সে নিজে ছুটে গিয়ে ভূয়া জাল দলিলের কথা স্বীকার করে টাকা ফেরতের জন্য দুটি চেকে ৭৫ হাজার টাকা করে ফেরত প্রদানে রাজি হয়। ইতোমধ্যে সে দেড় লাখের মধ্যে ৭৫ হাজার টাকা প্রদান করেছে।

    এছাড়াও গোদাগাড়ী পৌর এলাকার শিষ মোহাম্মদ, জাহিদুল ও আবুল মতিনের নিকট হতে মৎস্য চাষি সমিতি নিবন্ধনের নামে ৬০ হাজার টাকা নিলেও সেই টাকাও আতœসাত করে আছে।

    এসব বিষয়ে বাগমারা উপজেলার সমবায় অফিসের সহকারি পরিদর্শক মোঃ খাইরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এসব অভিযোগ কিছুই না তারা আমার পেছনে লেগে আছে। সবাই কেন পিছু লেগেছে প্রশ্ন করতেই তিনি উত্তেজিত কণ্ঠে বলেন, আমার চাকুরী করার ইচ্ছা নাই যা খুশি তাই করো । আরো কিছু প্রশ্ন করতেই দ্রুত ফোনটি কেটে দেয়।

    অভিযোগ কারি গোদাগাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ রুহুল আমিন ও ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, দুর্নীতিবাজ খাইরুলের জ্বালাই আমরা অতিষ্ঠ কাজ লোকজনের কাজ করে দিবো বলে তাকে টাকা দিয়ে নিজেরাই লজ্জাই পড়ে গেছি কোন উপায় না পেয়ে বিভিন্ন দপ্তরের অভিযোগ করতে বাধ্য হয়েছি।

    রাজশাহী জেলা সমবায় অফিসার মোহাম্মদ হাসিবুর রহমান মোল্লাহ্ সাথে সার্বিক বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি খাইরুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন। গত রাতে আমি অভিযোগটি পেয়েছি আমি এই মহুর্তে ব্যস্ত আছি তবে সে কেন এমনটি করেছে তার জন্য কারণ দর্শানো নোটিশ করবো বলে জানান।

    ওএফ

    দুর্নীতিবাজ পরিদর্শক খাইরুলের,বিরুদ্ধে আবারও,লাখ টাকা আত্মসাতের

    সারাদেশ

    অনুসন্ধান করুন
    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close