রেলের জমিতে অবৈধ স্থাপনা, ভেঙ্গে দিলেন স্থানীয়রা
লালমনিরহাটে রেলওয়ের জমিতে ও মুল সড়কের কার্লভাটের উপর অবৈধ ভাবে নির্মিত মার্কেট, স্থাপনা ভেঙ্গে দিয়েছেন বিক্ষুব্ধ স্থানীয়রা। শনিবার লালমনিরহাট রেলওয়ের পশ্চিমে চাঁদনী বাজার সংলগ্ন রেলের জমিতে অবৈধ ভাবে নির্মিত মার্কেট ও স্থাপনা ভেঙ্গে ফেলে স্থানীয়রা।
এদিকে রেলের জমিতে অবৈধ ভাবে স্থাপনা নির্মান মালিক সিরাজুল শনিবার সন্ধ্যায় মার্কেট নির্মানে বাঁধা এবং স্থাপনা ভেঙ্গে ফেলার অভিযোগ এনে বাদি হয়ে ৬ জনকে আসামী করে লালমনিরহাট সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
সম্পর্কিত খবর
জানা গেছে, লালমনিরহাট শহরের চাঁদনী বাজারে রেলওয়ের ৮৪ শতক কৃষি জমি লিজ নেন নর্থবেঙ্গল মোড়ের মৃত পয়ের উল্লার ছেলে সিরাজুল ইসলাম ও বেলাল হোসেন। কিন্তু‘তারা কৃষির জন্য লিজ নিলেও গায়ের জোড়ে প্রভাবশালী সিরাজুল ও বেলাল হোসেন গত দুই সপ্তাহ ধরে ওই জমিতে মার্কেট নির্মান শুরু করেন। রেলওয়ের নিয়মানুযায়ী কৃষিজ জমি লিজ গ্রহিতা কৃষি চাষাবাদ ব্যতিত অন্য কিছু করতে পারবে না। যা আইনত অপরাধ। ওই মার্কেট নির্মানের ফলে লালমনিরহাট মহেন্দ্রনগর বাইপাস সড়কের উপর নির্মিত কার্লভাটটির পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে আসন্ন বর্ষায় পানি নিস্কাশনে চরম বিপাকে পড়ার আশংকা দেখা দেয় স্থানীয়দের মাঝে।
এদিকে জনদুর্ভোগ লাঘবে প্রথম দিকে স্থানীয়রা মার্কেট নির্মানে বাঁধা দেন। কিন্তু তাতে কোন কাজ না হওয়ায় লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগীয় ম্যানেজার (ডিআরএম) ও রেলওয়ে ভু-সম্পত্তি অফিসারকে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার রেলওয়ের ভু-সম্পত্তি কর্মকর্তা (এস্টেট অফিসার) সুজাউদ্দৌলা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে স্থাপনা সড়ানোর নির্দেশ দেন। ওই স্থাপনা সড়াতে লালমনিরহাট পৌরসভা থেকেও নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়।এত বাঁধা সত্ত্বেও পেশি শক্তির জোরে চালিয়ে যাচ্ছে ১২টি দোকানের বিশাল এ মার্কেট নির্মানের কাজ।
পরবর্তীতে শনিবার দুপুরে লালমনিরহাট পৌর মেয়র তার প্রতিনিধি পাঠিয়ে কাজ বন্ধ করার জন্য বলে। সরকারী কর্মকর্তাদের অভিযোগ দেয়ার পরও মার্কেট নির্মান বন্ধ না করায় ক্ষিপ্ত হয়ে স্থানীয় জনতা জোটবদ্ধ হয়ে শনিবার বিকেলে ওই মার্কেটের কিছু অংশ গুড়িয়ে দেন এবং নির্মান কাজ বন্ধ করে দেন। এছাড়া পুরো অবৈধ মার্কেট গুড়িয়ে দিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন স্থানীয় জনতা।
ওই এলাকার বাসিন্দা জহির উদ্দিন ও আশরাফ আলী জানান, বৈধ জমিতে এ অবৈধ স্থাপনা নির্মানের ফলে পানি নিস্কাশন ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। আসন্ন বর্ষায় ডুবে থাকতে হবে এ এলাকার বাসিন্দাদের। তাছাড়াও সম্পত্তিটা রেলওয়ে কৃষিজ জমি এবং যার খাজনা হয়েছে কৃষিজ হারে। সেখানে মার্কেট করা সম্পুর্ন বে আইনী। তাই উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন এলাকাবাসী। মার্কেট নির্মানকারী বেলাল ও সিরাজুল জানান, রেলওয়ে থেকে লিজ নিয়ে তাদের বৈধ জমিতে মার্কেট করছেন তারা। এর বাহিরে তারা কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
লালমনিরহাট রেলওয়ের ভু-সম্পত্তি কর্মকর্তা(এস্টেট অফিসার) সুজাউদৌলা জানান, অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মার্কেট নির্মানে নিষেধ করা হয়েছে। এরপরও কৃষিজ জমিতে মার্কেট করলে উচ্ছেদসহ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।