৩ লাখ মানুষের জন্য ৩ ডাক্তার, খাবারও মানসম্মত নয়
নওগাঁর পোরশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে সেবা দিচ্ছে মাত্র ৩জন ডাক্তার। এছাড়া বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ নানা সমস্যায় জর্জরিত সরকারি এই সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানটি। এদিকে রোগীদের অভিযোগ; স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স থেকে দুই/একটি ওষুধ পেলেও বাকিগুলো বাহির থেকে কিনে নিতে বলা হয়। আর সেই সাথে প্রতিদিন আবাসিক রোগীদের যে সব খাবারগুলো দেয়া হয়; তার মান যথেষ্ট খারাপ এমন অভিযোগ তাদের।
সূত্রে জানা, ৩১ শয্যা থেকে গত ৫ বছর পূর্বে ৫০ শয্যায় কাগজ কলমে পোরশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি উন্নিত করা হলেও এখন পর্যন্ত তার কার্যক্রম শুরু হয়নি। তাই খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। দেখার কেউ নেই। কোন ডাক্তার এসে এই ঠাঁ ঠাঁ বরেন্দ্র অঞ্চলে থাকতে চায় না। সবাই তাদের পছন্দ মতো শহরে চলে যায়। তাহলে এই সব প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষদের সেবা প্রদান করবে কারা?
সম্পর্কিত খবর
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, পোরশা নওগাঁর সবচেয়ে দূরবর্তি, ঠাঁ ঠাঁ বরেন্দ্র অঞ্চল ও ভারত সীমান্ত ঘেষা উপজেলা। এই উপজেলার অধিকাংশ মানুষই অত্যন্ত গরীব ও অসহায়। বর্তমানে পোরশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি নিজেই ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে রয়েছে। হাসপাতাল আছে নেই চিকিৎসক।
সরকারি নীতিমালা অনুসারে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ১৫ জন চিকিৎসক ও ২৪ জন সেবিকা থাকার নির্দেশনা থাকলেও বর্তমানে মাত্র ৩ জন চিকিৎসক ও ১২ জন সেবিকা রয়েছে। যারা প্রতিদিন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা শত শত রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। এতে করে সাধারণ মানুষরা হতাশায় ভুগছেন। তারপরও যে ৩ জন ডাক্তার রয়েছেন তারা বদলী নিয়ে তাদের পছন্দ মতো জায়গায় যেতে মরিয়া।
হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রহিমা বিবি নামের এক রোগী অভিযোগ করে বলেন, হাসপাতালের খাবারের মান খুব খারাপ। ভালো মানের খাবার হাসপাতাল থেকে দেয়া হয় না। কোন রকমে দায়সারাভাবে খাবার দেয়া হয়। এছাড়া হাসপাতালে এলে চারটি ওষুধ লিখে দেয়া হলেও মাত্র একটি ওষুধ হাতে ধরে দিয়ে বলে বাকিগুলো বাহির থেকে কিনতে হবে।
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা লুৎফর রহমান, খোতেজা বেগমসহ অনেকেই বলেন, সরকার থেকে যে সকল ওষুধ বিনামূল্যে রোগীদের দেয়ার কথা রয়েছে তারা সেগুলো দেন না। যে ৩ জন ডাক্তার রয়েছে তারাও নিয়মিত অফিসে আসেন না; চিকিৎসাও দেন না। আমরা গরীব মানুষ বাহিরে চিকিৎসা নেওয়ার মতো সামর্থও নেই। আমাদের একমাত্র ভরসা এই হাসপাতাল। এখানেও এসে মিলছে না সুচিকিৎসা তাহলে আমরা কোথাই যাবো নাকি বিনা চিকিৎসায় মরবো?
পোরশা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ ইবনে ইমাম বলেন, লোকবল সংকটের কারণে প্রায় ৩ লাখ মানুষের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন তিনি। আর গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পদে কম সংখ্যক জনবল দিয়ে এতোগুলো মানুষের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা কঠিন কাজ বলে জানালেন এই কর্মকর্তা।
তিনি আরো বলেন, কোন চিকিৎসক এসে এই প্রত্যন্ত অঞ্চলে থাকতে চায় না। দুই বছর হলেই তারা তদবির করে নিজেদের পছন্দ মতো স্থানে চলে যায়।
ওএফ