• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

নিখোঁজের ৭ দিন পর কলেজছাত্রের লাশ উদ্ধার

প্রকাশ:  ১৯ আগস্ট ২০১৮, ১৬:৪৭
বাগেরহাট প্রতিনিধি

বাগেরহাটের চিতলমারীতে নিখোঁজের ৭ পর এক কলেজছাত্রের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার (১৯ আগস্ট) দুপুরে চিতলমারী উপজেলা সদরের একটি ডোবা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত ওই কলেজ ছাত্রের নাম সবুজ বিশ্বাস (১৭)।

তিনি উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের কাটাখালী গ্রামের পরিতোস বিশ্বাসের ছেলে। সবুজ চিতলমারীর শেরে বাংলা ডিগ্রি কলেজের বিজনেস ম্যানেজমেন্ট শাখার একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিল। নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় দুই স্কুলছাত্রকে আটক করেছে পুলিশ।

আটককৃতরা হলেন- চিতলমারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের আডুয়াকান্দি গ্রামের আবদুর সালাম খানের ছেলে সাব্বির খান (১৭) ও একই গ্রামের মো. হাসমত খানের ছেলে লিমন খান (১৭)। তারা চিতলমারী এস এম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী। সাব্বির ৯ম শ্রেণিতে এবং লিমন ১০ শ্রেণিতে পড়তো। তারা সবুজের বন্ধু বলে স্থানীয়দের কাছে পরিচিত।

পুলিশ ও পরিবার জানায়, গত ১৩ আগস্ট বিকেলে নিজের মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হন সবুজ বিশ্বাস। এরপর অনেক খোঁজাখুঁজি করেও কোথাও না পেয়ে পরদিন ১৪ আগস্ট তার বাবা পরিতোস বিশ্বাস চিতলমারী থানায় একটি সাধারণ ডায়রি (জিডি) করেন। ওই জিডির তদন্ত করতে গিয়ে গত শনিবার পার্শ্ববর্তী গোপালগঞ্জ জেলা সদর থেকে সবুজের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলসহ দুই জনকে আটক করে পুলিশ। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী শনিবার এস এম মাধ্যমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি ডোবা থেকে সবুজের লাশ উদ্ধার করা হয়।

সবুজের সহপাঠী পার্থ রায় ও আলী আকবর বলেন, আমরা গত ১০ বছর ধরে এক সাথে পড়াশুনা করছি। সবুজ আমাদের ভালো বন্ধুছিল। আমরা তার হত্যার বিচার চাই।

নিহতের মা পুরবী বিশ্বাস বলেন, আমার ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।

তবে স্থানীয়রা বলছেন, নিহত সবুজ এবং তারা কয়েক বন্ধু কিছুটা উশৃঙ্খল ভাবে চলাফেরা করতো। আটক সাব্বির ও লিমন সবুজের সাথে এক সাথে ঘুরতো। ১৩ আগস্ট বিকালেও তাদের এক সাথে মোটরসাইকেলে ঘুরতে দেখা যায়।

চিতলমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অনুকুল চন্দ্র সরকার এই প্রতিবেদককে বলেন, নিহত সবুজ বিশ্বাস এবং আটক সাব্বির ও লিমন পরস্পর পরস্পরের বন্ধু। তারা এক সাথেই ঘুরা ফেরা করতো। গত ১৩ আগস্ট লিমন নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে ওই দুইজন এলাকায় ছিলনা। ১৪ আগস্ট সবুজ বিশ্বাসের বাবা থানায় জিডি করার পর থেকে পুলিশ গুরুত্বের সাথে তদন্ত শুরু করে এরপর শনিবার রাতে গোপালগঞ্জ জেলা সদর থেকে নিহতের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলসহ ওই দুজনকে আটক করা হয়। পরে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদকালে তারা সবুজকে হত্যার কথা স্বীকার করে।

ওসি আনুকুল সরকার বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে আটক দুই কিশোর জানায়, ১৩ আগস্ট বিকেলেই সবুজকে হত্যা করা হয়। ওই দিন বিকেলে তারা তিনজন (সবুজ, সাব্বির ও লিমন) সবুজের মোটরসাইকেলে করে এস এম মাধ্যমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন লালু বিশ্বাসে কোচিং সেন্টারের পেছনে একটি পরিত্যক্ত ঘরে আড্ডা দিচ্ছিল।

একপর্যায়ে সাব্বির ও লিমন হাতুড়ি দিয়ে সবুজের মাথায় আঘাত করে। এতে সবুজ অচেতন হয়ে পড়ে। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে বৈদ্যুতিক তার দিয়ে গলায় ফাঁস দেয় তারা। পুলিশের জ্ঞিাসাবাদে আটক ওই দুই কিশোর বলেছেন, প্রায় তিন মাস আগে স্থানীয় একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে সিগারেট খাওয়াকে কেন্দ্র করে লিমনের সাথে কথা কাটাকাটি হয় সবুজের। ওই ঘটনায় লিমনের হাতে ধারালো ছুরি দিয়ে পোচ দেয় সবুজ। ওই ঘটনার জেরে সবুজকে হত্যার পর লাশ গুম করতে মরদেহ কাঁথা পেচিয়ে কচুরিপানায় ঢাকা ডোবায় ফেলে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

/পি.এস

বাগেরহাট,লাশ উদ্ধার

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close