অসহ্য যন্ত্রণা, সেদিন মরে গেলেই ভালো হতো
শরীরে স্প্লিন্টারের ব্যথা আর যন্ত্রণা নিয়ে আজও দুর্বিষহ জীবন কাটাচ্ছেন ভৈরবের নাজিম উদ্দিন। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের জনসভায় ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় তিনি গুরুতর আহত হন। শরীরে ব্যথা যন্ত্রণা নিয়ে ১৪ বছর ধরে কাতরাচ্ছেন নাজিম। এই ব্যথা আর কষ্ট সহ্য করার মতো নয়। তাই তার মনে হয় সেদিন মরে গেলেই ভালো হতো!
অনেক দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে নিজ বাড়িতে বসে এই প্রতিনিধির সঙ্গে কথাগুলো বলেন নাজিম উদ্দিন। পরিবারে মা-বাবা, স্ত্রী আর তিন সন্তান নিয়ে খুবই কষ্টে দিন কাটছে তার। শরীরে এখনো অসংখ্য স্প্লিন্টার রয়ে গেছে তার, এজন্য আরও কয়েকটি অপারেশন করা প্রয়োজন। কিন্ত আর্থিক অভাব অনটনে অপারেশন করতে পারছেন না বলে জানান তিনি।
সম্পর্কিত খবর
ঘটনার দিন বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় নিহত হন ২২ জন এবং আহত হন কয়েকশ। এদিন ভৈরবের কালিকা প্রসাদ ইউনিয়নের আকবর নগর গ্রামের মফিজ উদ্দিন মেম্বারের ছেলে আওয়ামী লীগ কর্মী নাজিম উদ্দিন প্রিয় নেত্রী আইভি রহমানের ওপর গ্রেনেড পড়লে তাকে বাচাঁতে এগিয়ে যান।
এসময় একটু আগালেই নিজের শরীরের পা ও বুকে গ্রেনেড পড়ে তিনিও গুরুতর আহত হন। পরে লোকজন তাকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করে। এরপর আওয়ামী লীগ নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহায়তায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতের পিয়ারলেস হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। তিন মাস চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরে আসেন তিনি। তখন ডাক্তাররা বলেছিলেন শরীরে থাকা আরও স্প্লিন্টার অপসারণ করতে পরবর্তী সময়ে আরও দুই একবার অপারেশন করতে হবে। কিন্ত অর্থের অভাবে এখনো অপারেশন করতে পারছেন না জানালেন তিনি।
ভাগ্যক্রমে সেদিন বেঁচে গেলেও তিনি এখনো পুরোপুরি সুস্থ না হওয়াই শরীরে স্প্লিন্টারের যন্ত্রণা নিয়ে দুর্বিষহ দিন কাটাচ্ছেন। এখনো প্রতিদিন তার ঔষধ খেতে হয়। চিকিৎসার জন্য ব্যয়ভার বহন করতে গিয়ে তিনি সহায় সম্বল হারিয়েছেন। পরিবার নিয়ে অনেক দুঃখে কষ্টে দিন কাটছে তার।
তিনি দুঃখ করে বলেন, ১৪ বছর অতিবাহিত হলেও এখনো ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার বিচার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। সরকার যেন অতি দ্রুত ইতিহাসের নৃংশস গ্রেনেড হামলার প্রকৃত অপরাধীদের দ্রুত বিচারের করে সেটাই প্রত্যাশা করেন নাজিম উদ্দিন ।
/পি.এস