রাবিতে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে ছাত্রকে নির্যাতনের অভিযোগ
পরীক্ষার শিটপত্র আনতে গিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক শিক্ষার্থী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হাতে বেধড়ক মারধরের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখ্শ হলে গত শুক্রবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১১টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত আটকে রেখে তাকে নির্যাতন করে রক্তাক্ত করা হয়।
মারধরে ওই শিক্ষার্থীর চোখের কোণে গুরুতর জখম হয়। পরে তাকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে শনিবার (২২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ঘটনাটি জানাজানি হয়। ইন্টারনেট সংযোগ নেওয়াকে কেন্দ্র করে এক শিক্ষার্থীর কক্ষ ভাঙচুরের রেশ না কাটতেই ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে আরেকটি অভিযোগ উঠলো।
সম্পর্কিত খবর
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম আব্দুর রহমান। সে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তার চোখের কোণে চারটি সেলাই দেয়া হয়েছে। অপরদিকে অভিযুক্তরা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক আব্দুল্লাহিল কাফি, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক আসাদুল্লাহিল গালিব ও ছাত্রলীগ কর্মী শুভ্র দেব। বাকিদের পরিচয় জানা যায়নি। তাদের দাবি- আব্দুর রহমান গাঁজা সেবন করে পালাতে গিয়ে সিঁড়ি থেকে পড়ে আঘাত পেয়েছে।
হল সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে মাদার বখ্শ হলে বিভাগের এক বড় ভাইয়ের কাছে পরীক্ষার শিটপত্র আনতে যান আব্দুর রহমান। শিট নিয়ে আসার সময় হলের গেটে পৌঁছুলে কাফি, গালিব, শুভ্রসহ কয়েকজন আব্দু রহমান কোথায় গিয়েছিলো তা জানতে চায়। আ. রহমান শিট নিতে এসেছিলো বলার পর তাকে চলে যেতে বলে পেছন থেকে কোমড়ে লাথি দেওয়া হয়। পরে আ. রহমানকে হলের অতিথি কক্ষে নিয়ে গিয়ে ব্যাপক মারধর করে তারা।
একপর্যায়ে তাকে হলের ওয়াশরুমে নিয়ে রড ও স্ট্যাম্প দিয়ে পেটানো হয়। এ সময় আ. রহমানকে গাঁজা সেবন করেছি মর্মে স্বীকারোক্তি দিতে বলে মারধরকারীরা। ভুক্তভোগী আব্দুর রহমান বলেন, ‘যতোবারই আমি মাদক সেবন করিনি বলেছি ততোবারই আমার ওপর চড়াও হয়েছে গালিব, কাফি ও শুভ্র। আমাকে স্ট্যাম্প ও রড দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে এবং আমার কাছে থাকা পাঁচ হাজার টাকা কেড়ে নেয়। গাঁজা সেবনের বিষয়টি স্বীকার না করলে আমাকে প্রাণনাশের হুমকিও দেয়। ভয়ে আমি বিষয়টি স্বীকার করলে তারা সেটি ভিডিও করে। পরে তারা আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে রেখে চলে যায়।’
আ. রহমানকে মারধর বা কোন ধরনের ভিডিও করা হয়নি বলে দাবি করেন গালিব, কাফি ও শুভ্র। তারা বলেন, ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে রাতে হলে মাদকবিরোধী অভিযান চলছিলো। হলের ছাদে মাদক সেবন করতে দেখে দলের জুনিয়র কয়েকজন কর্মী তাদের ধাওয়া দেয়। এ সময় পালাতে গিয়ে আব্দুর রহমান সিঁড়ি থেকে পড়ে চোখে আঘাত পায়। পরে আমরা তাকে আটক করে চড়-থাপ্পড় দিয়ে হল কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দিয়েছি।’
জানতে চাইলে হল প্রাধ্যক্ষ আব্দুল আলীম বলেন, ‘এক শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়েছে শুনে আমি হাসপাতালে তাকে দেখতে গিয়েছিলাম। আমি খোঁজ-খবর নিচ্ছি। যারা দোষী তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবো।’ উল্লেখ্য, গত শুক্রবার শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে ইন্টারনেট সংযোগ নেওয়ার দ্ব›েদ্ব এক শিক্ষার্থীর কক্ষ ভাঙচুর করে ছাত্রলীগ।