• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

হাতি নিয়ন্ত্রণে হার্ডলাইনে প্রশাসন, মানুষের মৃত্যু হলে হত্যা মামলা

প্রকাশ:  ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ২০:১৭
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

বিগত কয়েকদিন যাবত কুলাউড়া ও জুড়ি উপজেলায় হাতিদের আক্রমণে বিভিন্ন জনপদের মানুষ আহত এমনকি নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে এহেন পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রশাসনকে বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখী হতে হয়েছিলো।

উক্ত পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে মৌলভীবাজার জেলা অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (কুলাউড়া সার্কেল) আবু ইউসুফের উদ্যোগে এই অঞ্চলের হাতি মালিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করেন।

সোমবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টার দিকে কুলাউড়া থানার একটি হলরুমে এই সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। কুলাউড়ায় প্রায় ২৭ টি এবং জুড়ীতে প্রায় ২০ টি ব্যক্তি মালিকানাধীন হাতি রয়েছে।

এসময় পোষ্য হাতিদের যন্ত্রনায় অতিষ্ঠের কারন এবং এর প্রতিকার, বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের নির্দেশনা সঠিকভাবে পালন হচ্ছে কিনা, হাতি কর্তৃক বেআইনী কর্মকান্ড গঠিত হলে আইনের প্রয়োগ যথাযথভাবে প্রয়োগ হবে, পোষ্য হাতি কর্তৃক কোন মানুষ মারা গেলে ওই হাতির মালিকের বিরুদ্ধে ফৌজদারী হত্যা মামলা রুজু করা ইত্যাদি বিষয়ে উন্মুক্ত আলোচনা করা হয়।

হাতি মালিকদের পক্ষে আব্দুল মজিদ মনু, মো. ফরিদ মিয়াসহ কয়েকজন বক্তব্য রাখেন। এসময় মো. ফরিদ মিয়া হাতি পালনের ক্ষেত্রে আইনের বিভিন্ন বাধ্যবাধকতা সম্পর্কে বেশীরভাগ ক্ষেত্রে অজ্ঞ বলে উপস্থিত সকলে জানান। তিনি বলেন, হাতি পালনের আইনের বিষয়ে অত্যন্ত কম জানি। বাপ-দাদা হাতি পালন করতেন, তারই ধারবাহিকতায় আমি হাতি পালন করছি। তিনি এও নিশ্চিত করেন, ভবিষ্যতে তিনি এবিষয়ে ভালো করে জানবেন এবং বুঝবেন।

হাতি মালিকরা বলেন, পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে তারা হাতির মালিক। ২০০৭/০৮ সাল থেকে বন বিভাগ থেকে নিবন্ধন ও প্রতি বছর তা নবায়ন করতে হয়। হতি ব্যবহার করে পাহাড়ের গাছ পরিবহণ করা হয়। সার্কাসের লোকেরাও হাতি ভাড়া নেয়। বছরে ১/২ বার পুরুষ হাতি উগ্র হয়। এই সময় হাতিকে শিকলবন্ধী করতে না পারলে ক্ষতি সাধন এবং মানুষকে হত্যা করে। কুলাউড়া ও জুড়ীতে প্রতি বছর ২/৩ জন করে মানুষ হাতির আক্রমনে মারা যায়।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন, কুলাউড়া সার্কেলের ইন্সপেক্টর শামসুল ইসলাম, কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শামীম মুসা, জুড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ মো. জাহাঙ্গির হোসেন, কুলাউড়া থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) সঞ্জয় চক্রবর্তী।

মতবিনিময়ের সময় জেলা অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (কুলাউড়া সার্কেল) আবু ইউসুফ বলেন, বিগত কয়েক বছরে হাতির আক্রমণে কুলাউড়া ও জুড়ি উপজেলার অনেক মানুষ মারা গেছেন। সদ্য কুলাউড়ার একজন পরিচিত মানুষ গত হয়েছেন। বিষয়টি এখন আমাদের ভাবাচ্ছে। এখন সাধারণ মানুষ এর প্রতিকার চায়। তারা প্রশাসনের দিকে আঙ্গুল তুলছে। যদিও বিষয়টি দেখভাল করার দায়িত্ব বন বিভাগের। কিন্তু এখন আর আমরা বসে থাকতে পারিনা।

হাতি মালিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আজকের এই মতবিনিময় সভা থেকে আপনারা শপথ করুন, আপনাদের অবহেলায় যাহাতে কোন হাতি ভাবিষ্যতে মানুষ না মারে। আর যদি একটি মৃত্যুর ঘটনা ঘটে সেক্ষত্রে আমরা আর অপমৃত্যু মামলা রুজু করবো না, সরাসরি হত্যা মামলা দায়ের করবো।

হাতি,প্রশাসন,মৌলভীবাজার

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close