• মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

নামে মাত্র উৎপাদন চলছে বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র

প্রকাশ:  ০২ ডিসেম্বর ২০১৮, ২০:০৭ | আপডেট : ০২ ডিসেম্বর ২০১৮, ২০:১৭
দিনাজপুর প্রতিনিধি

চাহিদার তুলনায় উত্তোলন কম থাকায় তাই কয়লার অভাবে ৫ মাস থেকে বন্ধ রয়েছে দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা ভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের তিনটি ইউনিটের মধ্যে ২টি ইউনিট। বড়পুকুরিয়া কয়লা দিয়ে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটির তৃতীয় ইউনিটটি চালু রাখলেও, প্রথম ও দ্বিতীয় ইউনিট চালু করার কোন জ্বালানীর উৎস্য নাই। ফলে ৫২৫ মেগওয়াড তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে, বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে মাত্র ১৫০ মেগওয়ার্ড।

এদিকে বড়পুকুরিয়া তাপ বিদুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যাওয়ায়, আসন্ন ইর-বোরো মৌসুমে বিদ্যুৎ ঘাটতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে দিনাজপুনসহ রংপুর বিভাগের আট জেলায়। এছাড়া দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার কারনে ইউনিট দুটির যন্ত্রাংশও ধ্বংস হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সম্পর্কিত খবর

    জানা গেছে, বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের তিন ইউনিটের জ্বালানির জন্য প্রতিদিন ৫ হাজার ২০০ মেট্রিকটন কয়লার প্রয়োজন কিন্তু কয়লা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে প্রতিদিন কয়লা উত্তোলন হচ্ছে গড়ে তিন হাজার মেট্রিকটন। কয়লা খনির উত্তোলিত কয়লা দিয়ে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের তৃতীয় ইউনিটটি আংশিক সচল থাকলেও প্রথম ও দ্বিতীয় ইউনিট দুটি সচল রাখার কোন জ্বালানী নাই। এছাড়া বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি দেশের উত্তারাঞ্চলে হওয়ায় দুরত্ব বেশি হওয়ায় প্রতিদিন ২২০০ মেট্রিকটন কয়লা আমদানী করাও সম্ভাব নয় বলে জানিয়েছেন তাপবিদ্যুৎ কতৃপক্ষ।

    বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল হাকিম বলেন, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে চলতি সনের গত ১৫ জুন থেকে কয়লা উত্তোলন বন্ধ হয়ে যায়, এই কারণে খনি কতৃপক্ষ প্রয়োজন অনুযায়ী কয়লা সরবরাহ করতে না পারায়, গত ২৮ জুন তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রেটির প্রথম ও দ্বিতীয় ইউনিট দুটি বন্ধ করে দেয়া হয়। এরপর জুলাই মাসের ১৯ তারিখ থেকে কয়লা সরবরাহ একেবারে বন্ধ হয়ে যায়, ফলে ওই মাসের (জুলাই) ২২ তারিখে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটির তৃতীয় ইউনিট বন্ধ হয়ে যায়। এতে করে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের তিনটি ইউনিট বন্ধ হয়ে যায়। এরপর চলতি সনের ৭ সেপ্টেম্বর থেকে পুনরায় বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে কয়লা উত্তোলন শুরু হলে, সরবরাহ কৃত কয়লা দিয়ে ওই (সেপ্টেম্বর) মাসের ১৪ তারিখে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের তৃতীয় ইউটি চালু করা হলেও, প্রথম ও দ্বিতীয় ইউটি দুটি সেই সময় থেকে বন্ধ রয়েছে। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটির দুটি ইউনিট বন্ধ থাকায় বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে মাত্র ১৫০ মেগওয়ার্ড।

    এদিকে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের অপারেশন কর্মকর্তাগণ (উৎপাদন কর্মকর্তা) বলছেন, তাপ বিদুৎ কেন্দ্র দির্ঘদিন বন্ধ থাকলে যন্ত্রাংশ মরিচা ধরে নষ্ট হয়ে যায় এই কারণে এই ইউনিট দুটির যন্ত্রাংশ ধ্বংস হওয়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

    এদিকে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফজলুর রহমান বলেন, বর্তমান খনিতে প্রতিদিন তিন হাজার থেকে তিন হাজার ৫০০ মেট্রিকটন কয়লা উত্তোলন হচ্ছে, আপাতকালিন মজুদ রেখে প্রতিদিন প্রায় তিন হাজার মেট্রিকটন কয়লা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে সরবরাহ করা হয়। তিনি আরও বলেন, বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কতৃপক্ষের সাথে প্রথম ও দ্বিতীয় ইউনিটে কয়লা সরবরাহর চুক্তি থাকলেও তৃতীয় ইউনিটে কয়লা সরবরাহর কোন চুক্তি নাই অথচ বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কতৃপক্ষ, সরবরাহ করা কয়লা দিয়ে তৃতীয় ইউনিট চালু রাখলেও প্রথম ও দ্বিতীয় ইউনিট বন্ধ রেখেছে।

    এদিকে বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদুৎ উৎপাদন কমে যাওয়ায় আসন্ন ইরি-বোরো মৌসুমে বিদুৎ ঘাটতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে দিনাজপুরসহ উত্তরের আট জেলায়। বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রতিষ্টান নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানী লিঃ বলছেন রংপুর বিভাগে প্রায় সাড়ে ৬০০ মেগওয়ার্ড বিদ্যুতের প্রয়োজন, সেখানে বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে আসে ৫২৫ মেগওয়ার্ড, এখন বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যাওয়ায় বাহীর থেকে বিদ্যুৎ এসে সরবরাহ করতে হচ্ছে, ফলে বিদ্যুতের ভোল্টেজ কমে যাচ্ছে।

    ওএফ

    সারাদেশ

    অনুসন্ধান করুন
    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close