• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

চিনে নিন আড়াই টাকার নোট!

প্রকাশ:  ০৪ জানুয়ারি ২০১৮, ০১:১৪
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

দেশে এখন সবনিম্ন দু’টাকা থেকে শুরু করে হাজার টাকার নোট রয়েছে। সময়ের সাথে সাথে অর্থের মূল্যমান কমেছে। ফলে ব্রিটিশ আমলে যেখানে মধ্যবিত্তের মাসে ২০ থেকে ৫০ টাকা হলেই চলে যেত সেখানে এখন তা ২০ হাজার থেকে ৫০ হাজারে গিয়ে ঠেকেছে। অর্থ লেনদেনের জন্য এখন কাগজের নোট বা ‘পেপার মানি’র গুরুত্ব অনেক। কিন্তু এক সময় কড়ি কিংবা মুদ্রা দিয়েই লেনদেন করতেন সাধারণ মানুষ।

অখণ্ড ভারতের ‘পেপার মানি’র ইতিহাসে একটা উজ্জ্বল অধ্যায় হয়ে রয়েছে আড়াই টাকা বা দু’টাকা আট আনা’র নোট। যা প্রচলিত হয়েছিল ব্রিটিশ শাসনকালে। সেই আড়াই টাকার নোট চালু থাকলে এবছর তা শতবর্ষে পদার্পণ করতো।

সম্পর্কিত খবর

    তৎকালীন এক ডলারের সমতুল্য সেই নোটকে ঘিরে থেকে গিয়েছে অনেক মজার ইতিহাস। এমনকি এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের স্মৃতিও!

    ইতিহাস বলে, ১৯১৪ সালে বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ভারতে রূপার ঘাটতি দেখা দেয়। সেই বছরের ২২ সেপ্টেম্বর জার্মান রণতরি তৎকালীন মাদ্রাজ বন্দরে ভিড়ে ব্রিটিশদের মালিকানাধীন বর্মা অয়েল কোম্পানির স্টোরেজ ট্যাঙ্কে হামলা চালায়।

    ফলে ব্রিটিশদের চালু করা ‘পেপার মানি’, ও ‘কারেন্সি নোটে’র উপর আস্থা হারিয়ে রৌপ্য মুদ্রা মজুত করতে থাকেন ভারতের অধিকাংশ মানুষ। এটিই শুধু একমাত্র কারণ নয়! রূপার এক আনা, আধ আনা’র কয়েন তৈরির খরচ সামলাতেও হিমশিম খাচ্ছিল তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার।

    ফলে রূপার এই সঙ্কট থেকে ঘুরে দাঁড়াতে দু’টাকার সঙ্গে আট আনাকে মিশিয়ে ব্রিটিশরা আড়াই টাকা’র নোট ভারতের বাজারে নিয়ে আসে। সময়টা ছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শেষ পর্যায়ে অর্থাৎ ১৯১৮ সালের ২ জানুয়ারি।

    বিশেষজ্ঞদের মতে, বাজারে চাহিদার সঙ্গে রৌপ্যমুদ্রার সামঞ্জস্য রাখতে না পেরেই ব্রিটিশ সরকার এমন নোট প্রচলনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। আড়াই টাকা মূল্যমানের হলেও এই নোটগুলো ইংল্যান্ড থেকে ছাপা হয়েছিল।

    সাদা রঙের দেখতে ওই নোটে তৎকালীন ব্রিটিশ সম্রাট পঞ্চম জর্জের ছবি এবং ব্রিটেনের তৎকালীন অর্থসচিব এমএমএস গুবে’র স্বাক্ষর ছিল। ভারতের যে সব এলাকায় নোটটি লেনদেনের মাধ্যম হিসাবে ব্যবহার করা হবে, তাও চিহ্নিত করা ছিল নোটে।

    এভাবে মোট সাতটি সার্কেল ছিল নোটের উপর। যেমন, এ সার্কেল মানে ভারতের কানপুর, বি সার্কেল মানে বোম্বে, সি সার্কেল মানে কোলকাতা ইত্যাদি। তবে এই আড়াই টাকার নোট ভারতে খুব বেশি পাঠায়নি ব্রিটিশ সরকার।

    আড়াই টাকা নোট প্রচলনের ৮ বছর বাদে অর্থাৎ ১৯২৬ সালের জানুয়ারি মাসে ভারতে এক টাকা ও আড়াই টাকার নোট বাজার থেকে তুলে নেয় ব্রিটিশ সরকার। যদিও ১৯৪০ সালে এক টাকার নোটকে পুনরায় বাজারে ফিরিয়ে আনা হয়। তবে আড়াই টাকার নোটকে আর তারা ফেরায়নি। সেটি তখন থেকেই ঠাঁই নিয়েছে ইতিহাসের পাতায়!

    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close