• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

সোনাগাজীর সেই ওসির মামলা পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ

প্রকাশ:  ১৫ এপ্রিল ২০১৯, ১৭:৫৭ | আপডেট : ১৫ এপ্রিল ২০১৯, ১৮:০৭
নিজস্ব প্রতিবেদক
ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন। ফাইল ছবি

অগ্নিসন্ত্রাসের শিকার হয়ে নিহত মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির বক্তব্য ভিডিও ধারণ করায় ও তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ায় সোনাগাজীর সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

সোমবার (১৫ এপ্রিল) বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মাদ আসসামছ জগলুল হোসেনের আদালতে মামলার আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।

ট্রাইব্যুনাল বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর ২৬, ২৯ ও ৩১ ধারায় করা অভিযোগটি পিটিশন মামলা হিসেবে গ্রহণ করেন। সেই সঙ্গে মামলাটি পিবিআইয়ের ডিআইজি পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তাকে তদন্ত করে আগামী ৩০ এপ্রিল প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির মৃত্যুর পর ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে বেশকিছু অভিযোগ ওঠে। নিহত নুসরাতের পরিবারকে সহযোগিতা না করার অভিযোগে ইতোমধ্যে সোনাগাজী থানা থেকে তাকে প্রত্যাহারও করা হয়েছে।

গত ২৭ মার্চ ওই ছাত্রীকে অধ্যক্ষ শ্রেণিকক্ষে নিয়ে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ করলে দুজনকে থানায় নিয়ে যান ওসি মো. মোয়াজ্জেম হোসেন। ওসি নিয়ম ভেঙে জেরা করার সময়ে নুসরাতের বক্তব্য ভিডিও করেন। মৌখিক অভিযোগ নেয়ার সময় দুই পুরুষের কণ্ঠ শোনা গেলেও সেখানে নুসরাত ছাড়া অন্য কোনো নারী বা তার আইনজীবী ছিলেন না। ভিডিওটি প্রকাশ হলে অধ্যক্ষ ও তার সহযোগীদের সাথে ওসির সখ্যতার বিষয়টি স্পষ্ট হয়।

আলোচিত এ ভিডিওতে দেখা যায়, থানার ওসির সামনে অঝোরে কাঁদছিলেন নুসরাত। সেই কান্নার ভিডিও করছিলেন সোনাগাজী থানার ওসি। নুসরাত তার মুখ দু’হাতে ঢেকে রেখেছিলেন। তাতেও ওসির আপত্তি। বারবারই ‘মুখ থেকে হাত সরাও, কান্না থামাও’ বলার পাশাপাশি তিনি এও বলেন, ‘এমন কিছু হয়নি যে এখনও তোমাকে কাঁদতে হবে।’

এ মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ওসি মোয়াজ্জেম অনুমতি ছাড়া নিয়মবহির্ভূতভাবে নুসরাতকে জেরা করেন এবং তা ভিডিও ধারণ করেন। পরবর্তীতে ওই ভিডিও ফেসবুক ও ইউটিউবসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়।

আলোচিত ভিডিওটিতে আরোও দেখা যায়, ওসি মোয়াজ্জেম অত্যন্ত অপমানজনক ও আপত্তিকর ভাষায় একের পর প্রশ্ন করে যাচ্ছেন নুসরাতকে। নুসরাতের বুকে হাত দিয়ে শ্লীলতাহানি করা হয়েছে কি না- এমন প্রশ্নও করেছে ওসি মোয়াজ্জেম।

গত ২৭ মার্চ নুসরাত জাহান রাফিকে নিজ কক্ষে নিয়ে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে আটক করে পুলিশ। এঘটনার পর থেকে সে কারাগারে আটক রয়েছে।

রাফির মা শিরিন আক্তার এ ঘটনায় বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন। গত ৬ এপ্রিল সকালে রাফি আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসায় যান। এ সময় মাদরাসার এক ছাত্রী তার বান্ধবী নিশাতকে ছাদের ওপর কেউ মারধর করছে- এমন সংবাদ পেয়ে সে বিল্ডিংয়ের চার তলায় যান। সেখানে মুখোশ পরা চার-পাঁচজন তাকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে মামলা ও অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়। রাফি অস্বীকৃতি জানালে তারা তার গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে গত ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু বরণ করে নুসরাত জাহান রাফি।


পিবিডি/এসএম

সোনাগাজী,ফেনী,নুসরাত হত্যা,আদালত
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close