• বুধবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৩, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩০
  • ||

হাজারো স্মৃতি বহন করে যে বাস

প্রকাশ:  ১৬ নভেম্বর ২০২৩, ১৮:৩৩
পূর্ব পশ্চিম ডেস্ক

তিতুমীর কলেজের লাল বিআরটিসি দেখে মহাখালির আশেপাশে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া অনেক শিক্ষার্থীই মনে মনে চাইতে পারে একদিন আমিও এই বাসের যাত্রী হব। আবার অফিস যাওয়ার পথে সাবেক কোনো শিক্ষার্থী ঢাকার যানজটে বসে ক্যাম্পাস জীবনের বিআরটিসি বাসের দিকে তাকিয়েই স্মৃতিকাতর হতে পারেন। হয়ত ভাবেন, আহা, কী সুন্দর মধুময় দিন ছিলো!

সম্পর্কিত খবর

    ক্যাম্পাসে যাওয়া-আসার এই যানবাহন নিয়ে আবেগ-রোমাঞ্চ শুধু মহাখালীতে নয়, ঢাকার অন্যান্য ক্যাম্পাস ও বাইরের জেলা বা শহরগুলোতেও আছে। একেকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের লাল, নীল, আকাশি, ধূসর কিংবা সবুজ রঙের বাসগুলো অনেক শিক্ষার্থীর স্বপ্ন ফেরি করে বেড়ায়। যারা এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়েন, তাদের অনেকের একটা বড় সময় কাটে এই বাসে বসে। তাই বাস যাত্রার সঙ্গে জড়িয়ে থাকে হাজারো স্মৃতি। ওই বাসের কোনো যাত্রীর সঙ্গে কথা বলে দেখুন, তার ঝোলায় গল্পের শেষ নেই।

    সামান্য একটি যানও যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের রোল মডেল হতে পারে, তার বড় উদাহরণ এই লাল বিআরটিসি। যদিও বাসগুলোর নামের গা ঘেঁষে বেশ বড় করেই লেখা থাকে তিতুমীর কলেজ। তবু কেন যেন লেখাটার দরকার পড়ে না, দূর থেকে দেখেই চেনা যায়।

    এছাড়াও ক্যাম্পাসের বাসে যাতায়াত করাটা নারী শিক্ষার্থীদের জন্য একটু বেশি সুবিধাজনক। ক্যাম্পাসের বাসে যাতায়াত করলে আলাদা অনুভূতি যেমন কাজ করে, তেমনি একজন নারী শিক্ষার্থী নিজেকে অনেক বেশি নিরাপদও বোধ করে। সেজন্য কখনো কখনো একটু বেশি অপেক্ষা করে হলেও ক্যাম্পাসের বাসেই যাতায়াত করেন অধিকাংশ নারী শিক্ষার্থীরা।

    বাসগুলোর প্রতি শিক্ষার্থীদের ভালোবাসা কেমন, তা বোঝা যায় ক্লাস শেষে মাঠে ও বাসে অপেক্ষারতদের দেখলে। বাসের সামনে দাঁড়িয়ে দল বেঁধে ছবি তোলার চিত্র দেখা যায় নিয়মিত। বিশেষ করে, প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য তো এটি রীতিমতো ‘অবশ্যকর্তব্য’। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে নিজেদের এই আনন্দ সবার সঙ্গে ভাগ করে নেন শিক্ষার্থীরা।

    বাসের নামগুলোও চমকপ্রদ। যেমন- সম্পর্ক, সোনার তরী, অগ্নিবীণা, চলন্তিকা, অনিন্দ্য, সৌহার্দ্য প্রভৃতি। এ নামগুলো শুনলে যে কেউ ভাবতে পারেন, হয়তো কবি বা সাহিত্যিকের কলমের ডগায় সৃষ্ট ভেলা।

    যাত্রীরা প্রায় সমবয়সী হওয়ায় বাসের জন্য অপেক্ষার সময়টি যেমন আড্ডা মুখর হয়। আবার কখনো কখনো চলন্ত বাসেই জমে ওঠে গানের আসর।

    ক্যাম্পাসের বাসে দল বেঁধে যাতায়াত করতে করতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটি আলাদা বন্ধনও তৈরি হয়। বাসকেন্দ্রিক গড়ে ওঠে আলাদা যোগসূত্র। অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একটা সখ্যতা সৃষ্টি হয়।

    যারা অনাবাসিক শিক্ষার্থী, তাদের জন্য এটি একটি বড় সুযোগ। দেখা যায়, দুজন দুই বিভাগের শিক্ষার্থী, সেশন আলাদা। অথচ বাস যাত্রার সুবাদে তারা হয়ে ওঠেন একে অপরের আপনজন। এই বন্ধুত্ব ও বন্ধনই ক্যাম্পাস জীবনের সবচেয়ে বড় সম্পদ।

    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close