• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

শোবিজ এখন এজেন্সির দালাল ও চামচাদের দখলে

প্রকাশ:  ০২ জানুয়ারি ২০১৮, ১৬:০৪ | আপডেট : ০২ জানুয়ারি ২০১৮, ১৬:১৯
মাকসুদুল হক ইমু

মডেল ও অভিনয়শিল্পী মৌনিতা খান ইশানার বিরুদ্ধে কোটি টাকার মানহানি মামলা করেছিলেন টিভি নাটকের প্রযোজক ও অভিনেতা প্রেম। প্রেম প্রযোজনা করেছেন বেশ কিছু একক ও ধারাবাহিক নাটক। দীর্ঘদিন পর শোবিজ জগতের নানান বিষয় নিয়ে কথা হল প্রযোজক ও অভিনেতা প্রেমের সাথে।

কেমন আছেন? আর হ্যাঁ আপনার ফেসবুক আইডি অনেকদিন ধরেই ডিএ্যাক্টিভ দেখছি কি কারণে?

সম্পর্কিত খবর

    প্রেমঃ এইতো আল্লাহর কৃপায় আর আপনাদের দোয়াতে ভালই আছি। আর আপনি বলছিলেন ফেসবুক কেন বন্ধ? হাহাহাহা... আসলে আমি যখন বুঝতে পারলাম ফেসবুক আমার অনেক সময় নষ্ট করে দিচ্ছে তখন এটা বন্ধ করে দিয়েছি। আমি আমার ইচ্ছেগুলো প্রায়শই পরিবর্তন হয়। তাই আবার হয়ত যখন ইচ্ছে হবে তখন খুলব আশা করি।

    আপনার প্রযোজিত ধারাবাহিক নাটকগুলোর কি খবর?

    প্রেমঃ নতুন কয়েকটা নাটকের প্রজেক্ট হাতে নিয়েছি। কয়েকটা নাটকের কিছু শ্যুটিংও করা হয়েছে। সামনের মাস থেকে আপনাদের সবাইকে জানিয়েই সবগুলা প্রজেক্ট নিয়ে কাজ শুরু করব ইনশাআল্লাহ্‌। আর বলে রাখা ভাল আমার সামনের বেশ কিছু নাটকে পরিচালক হিসেবে থাকছেন পরিচালক মনন আসাদ। এখন অবশ্য আমি বাইরের কিছু ব্যাবসা সংক্রান্ত কাজ নিয়ে ব্যাস্ত আছি। আর বর্তমান শোবিজ জগতের যে অবস্থা এ রকম পরিস্থিতিতে রেগুলার কাজ করার ইচ্ছেও হারিয়ে ফেলছি।

    আপনি আসলে শোবিজের কোন পরিস্থিতির কথা বলতে চাইছেন একটু বুঝিয়ে বলবেন কি?

    প্রেমঃ ভাইরে কি আর বলবো বলেন, আমাদের মিডিয়াটা তো এখন এজেন্সির দালাল আর চামচাদের দখলে। আমি ২ টা উদাহরণ দেই তাহলেই আপনার বুঝে আসবে বিষয়টা। বেশ কিছুদিন আগের কথা, আমি জানতে পারলাম যে একটা টিভি চ্যানেলের একজন কর্তাব্যাক্তি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। যেহেতু আমি দীর্ঘদিন ধরে কাজ করি সেজন্য আমি মোটামুটি প্রায় সবগুলো চ্যানেলের সাথে কম বেশী পরিচিত। যাই হোক, আমি পরিচয়ের খাতিরেই সেই চ্যনেলের কর্তাব্যাক্তিটিকে দেখতে হাসপাতালে গেলাম। গিয়ে তার রুমে ঢুকে তো আমি অবাক, একজন নাট্য প্রযোজক তার গা হাত পা টিপে দিচ্ছে। যদিও আমার এই দেখে ফেলাতে সেই প্রযোজকের কিচ্ছু আসে যায় না। সেই প্রযোজক এখনো কিন্তু ঐ চ্যানেলে নিয়মিত কাজ করছে। আবার অন্যদিকে কোন একজন প্রযোজক (যেখানেই আড্ডায় যাই সেখানেই শুনি) নাকি দেশের প্রথম সারির ৫ টা টিভি চ্যানেলের অনুষ্ঠান প্রধান অথবা চ্যানেল প্রধানকে ফোন করে কান্না করে আর বলে, ভাই আমি আমার অফিস চালাইতে পারতেছি না, বা, আমার সংসার চালাইতে পারতেছি না। আমাকে একটা কাজ দেন নয়তো বাঁচতে পারবো না। এই একই ভঙ্গিমায় নাকি সে সকলের সাথেই ফোনে বা সাক্ষাতে কান্না করে। এখানে আমার কথা হচ্ছে, একটা শিক্ষিত মানুষ কি করে এত নিচে নামতে পারে বা এ কাজ করতে পারে! আসলে একজন শিক্ষিত মানুষ কখনোই এত নিচে নামতে পারে না। আমি আসলেই তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে সন্দিহান। আবার এই দুই ব্যক্তির একজনতো সবার সামনেই বলে আমি ঢাকা শহর আসছিলাম পকেটে মাত্র ১৭ টাকা নিয়া, আর আজ আমি এই এত্তো টাকার মালিক। আবার এই প্রযোজক এক সময় আমারই পরিচিত একজনের বাসায় কাজের লোক হিসেবে ছিল যা পরে আমি জানতে পেরেছি। এখন বলেন, তাহলে কিভাবে আমরা এই মূর্খদের থেকে ভাল কাজ আশা করতে পারি?

    আচ্ছা আপনার মতে এ থেকে পরিত্রাণ পাবার উপায় কি?

    প্রেমঃ এ থেকে পরিত্রাণের উপায়তো গুরুজনেরা বলতে পারবে। আমিতো শুধু যা জানি তাই বলেছি মাত্র। তবে আমার অভিজ্ঞতায় যতটুকু বুঝি এতে বলতে পারি, আমাদের দেশের নামকরা টিভি চ্যানেলগুলাতে প্রখর বুদ্ধিদীপ্ত ও চৌকস অনুষ্ঠান প্রধান প্রয়োজন। যারা চ্যানেল মালিকের বা চ্যানেলের অন্য কর্তাদের কথা না শুনে নিজের ও তার নিজস্ব টিমের মতামতের ভিত্তিতে ভাল কাজ ও অনুষ্ঠান নিয়ে চ্যানেল পরিচালনা করবেন। আর একজন চ্যানেল মালিক কিন্তু অনুষ্ঠান নিয়ে খুব বেশি একটা ধারণা থাকে না। উনি বুঝেন ব্যাবসা। উনি দিনশেষে তার ব্যাবসার লাভ বুঝে নিবেন এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমাদের এখানে হয় উল্টো। একজন চ্যানেল মালিক যখন সম্পর্কের খাতিরে একটা নিম্নমানের প্রোডাকশন নিয়ে নেন তখন আসলে চ্যানেলের অনুষ্ঠান প্রধান বা অনুষ্ঠান বিভাগের কিচ্ছু করার থাকে না। সেজন্য অনুষ্ঠান প্রচার সম্প্রর্কিত কাজ থেকে চ্যানেলের মালিকদের দূরে থাকতে হবে আর পাশাপাশি সুবিধাভোগী এজেন্সির দালালদের দূর করতে হবে। বলে রাখা ভাল, এজেন্সির এসকল দালালেরা কিন্তু খুব বড় মাপের মোটিভেটর আর এজন্যই তারা দালাল। তারা ভাল করেই জানে কোন গোপন অস্ত্র প্রয়োগ করলে চ্যানেল মালিক অথবা চ্যানেলের অনুষ্ঠান প্রধানের থেকে কাজ বাগিয়ে নেয়া যায়। তবে যাই হোক, এত খারাপের ভিড়েও বাংলাদেশের টিভি চ্যানেলগুলাতে এখনো কয়েকজন ভাল অনুষ্ঠান প্রধান আছেন। এদের মাঝে কেউ কেউ আবার চ্যানেলে যোগদান করেই চ্যানেলের আয় ২ কোটি থেকে ৮ কোটিতে নিয়ে গেছেন তাদের নিজস্ব কর্মদক্ষতা ও বিচক্ষণতার ফলে। আমি তাদের সকলকেই অনেক শ্রদ্ধা করি। তাই আমার মতে, চ্যানেলগুলাতে প্রখর বুদ্ধিদীপ্ত ও চৌকস অনুষ্ঠান প্রধান যখন কাজ শুরু করবে তখন থেকে আর এসব দালালেরা সুযোগ নিতে পারবে না।

    ধন্যবাদ,আপনার কথা শুনে অনেক ভালো লাগল, ভালো থাকবেন।

    প্রেমঃ আপনাকেও ধন্যবাদ, আপনিও ভাল থাকবেন।

    /এটিএম ইমু

    আন্তর্জাতিক তারুণ্যের চলচ্চিত্র উৎসব জানুয়ারিতে

    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close