কাকে বলে সুপারমুন?
আমাদের কাছে অনেকের কাছেই সুপারমুন শব্দটি বেশ পরিচিত। কিন্তু সুপারমুন শব্দটি কীভাবে এলো বা সুপারমুন বলতে কী বোঝায়? এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে আধুনিক বিজ্ঞান। আধুনিক বিজ্ঞান বলছে- বছরের বিশেষ বিশেষ কিছু সময়ে চাঁদ পৃথিবীর খুব কাছাকাছি অবস্থান করে। এ সময় চাঁদকে প্রায় ১৪ % বড় এবং প্রায় ২০ % উজ্জ্বল দেখায়। এই চাঁদকেই ইউরোপে সুপারমুন বলা হয় ।
বাংলা মুন শব্দের অর্থ চাঁদ কিন্তু সুপারমুন শব্দের প্রচলিত বাংলা নেই। তবে এটাকে অনেকে অতিকায় চাঁদ বলে থাকেন। বিজ্ঞান বলছে, পৃথিবী-চন্দ্র-সূর্য সিস্টেমে অতিকায় চাঁদের টেকনিক্যাল নাম হচ্ছে perigee-syzygy। আবার সুপারমুন শব্দটার উৎপত্তি আধুনিক জ্যোতির্বিদ্যার সঙ্গে এর কোনও যোগসূত্র নেই। আমরা জানি চন্দ্র, সূর্য, অবস্থানের কারণে পৃথিবীতে জোয়ার ভাঁটা হয়। সুপারমুনের কারণে পৃথিবীতে ভূমিকম্প ও আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের মত প্রাকৃতিক দূর্যোগ সংঘটিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত এই ধরণের কোন দূর্যোগের সংবাদ পাওয়া যায়নি।
সম্পর্কিত খবর
১৯৯৩ সালের সুপারমুন সাধারণ চাঁদ থেকে ২০ গুণ অধিক উজ্জ্বল এবং ১৫ গুণ বড় ছিল। সুপারমুনের বিপরীত দশা মাইক্রোমুন যা টেকনিক্যালি apogee-syzygy নামে পরিচিত। সুপারমুনের রাতে জ্যোছনায় পৃথিবী প্লাবিত হয়। অন্যদিকে মাইক্রোমুনে পৃথিবী থাকে অন্ধকারাচ্ছন্ন। তাই মাইক্রোমুন সুপারমুনের মত এত পরিচিতি পায়নি। অনুসদ্ধানে জানা যায়, ২৬ জানুয়ারী, ১৯৪৮ সাল থেকে পৃথিবীর সবচেয়ে নিকটতম সুপারমুন দেখা যায়।
এদিকে বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) পৃথিবীর দিন রাত থাকবে সমান। আজ রাতেও দেখা যাবে সুপারমুন। মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসার মতে, আজ পূর্ণিমা রাতে আকাশে যে চাঁদ উঠবে সেই সুপারমুনকে দেখাবে স্বাভাবিকের চেয়ে ১৪ শতাংশ বড়। আজ রাতে চাঁদকে দেখা যাবে পূর্ণ আলোকিত, এর ঔজ্জ্বল্য থাকবে ৩০ শতাংশ বেশি। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন না থাকলে পৃথিবীর যে কোনো প্রান্ত থেকেই সুপারমুনের সৌন্দর্য উপভোগ করা যাবে। চলতি বছর এটাই হবে সর্বশেষ সুপারমুন। এছাড়া বিশ্ববাসী আবারো আরেকটি সুপারমুন দেখতে পাবেন ২০৩০ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি।
অন্যদিকে পৃথিবী সূর্যের চারদিকে পরিক্রমণকালে পৃথিবীর মেরু রেখা ধ্রুবতারামুখী হয়ে কক্ষপথের সঙ্গে সব সময় ৬৬.৫ ডিগ্রি কোণ করে হেলে থাকে। আবার নিরক্ষ রেখা বা বিষুব রেখার সমতল কক্ষপথের সঙ্গে ২৩.৫ ডিগ্রি কোণে হেলে থাকে। এ কারণে প্রতি বছর ২১ মার্চ ও ২৩ সেপ্টেম্বর সারা পৃথিবীতে দিন রাত সমান হয়ে থাকে। এ সময় পৃথিবীর দুই গোলার্ধেই দিনের বেলা ১২ ঘণ্টা করে আলো পায় এবং ১২ ঘণ্টা পায় না। অর্থাৎ দুই গোলার্ধেই দিন-রাত সমান হয়ে থাকে।
পিবিডি/রবিউল