• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

কাঁটাতার উপেক্ষা করে সীমান্তে বৈশাখী মিলনমেলা

প্রকাশ:  ১৬ এপ্রিল ২০১৯, ০০:৩৪
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে দেশের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোর বিভিন্নস্থানে জমেছিল দুই বাংলার মানুষের মিলনমেলা।

স্বজনদের এক নজর দেখার জন্য এবং তাদের সঙ্গে কথা বলার জন্য এদিন দুই বাংলার লাখো মানুষ সীমান্তে জড়ো হন। একে অপরের সঙ্গে আলিঙ্গন করতে না পারলেও দীর্ঘদিন পর প্রিয়জনকে দেখার আনন্দে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন অনেকে।

সোমবার ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল ও হরিপুর উপজেলার সীমান্তে এবং পঞ্চগড় সদর উপজেলার অমরখানা ও বোদাপাড়া সীমান্তে বসেছিল এমনই মিলনমেলা।

প্রতি বছর পহেলা বৈশাখের পরদিন সীমান্তের তাঁরকাটার এপারে-ওপারে ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে অনুষ্ঠিত হয় মানুষের এ মিলনমেলা। সোমবার সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত রানীশংকৈল মোলানী গ্রেরাডাঙ্গী এবং হরিপুর উপজেলার হরিপুর কাড়িগাঁও বিওপি, কান্ধাল, মলানী, ডাবরী, বেতনা, বুজরুক সীমান্তে এবং ভারতের মালদখন্ড, বসতপুর, শ্রীপুর, নারগঁও, কাতারগঞ্জ ও বোররা সীমান্তে ৩৫৫, ৩৫৬, নং পিলার থেকে শুরু করে ৩৭২ নং পিলার এলাকায় সীমান্তের তাঁরকাটারের এপার-ওপারে দুই দেশের লাখ লাখ মানুষের উপস্থিতিতে মিলনমেলায় পরিণত হয়।

তাঁরকাটার গেট না খুললেও অনানুষ্ঠানিকভাবেই তাঁরকাটার এপারে-ওপারে দাড়িয়ে স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে ছুটে যায় স্বজনরা। এসময় প্রিয়জনকে কাছে পেয়ে অনেকে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তারকাটার কারণে প্রিয়জনকে ছুয়ে দেখতে পারেন না আগতরা। এ অবস্থায় তাঁরকাটার উপর দিয়ে প্রিয়জনকে খাবারসহ অন্যান্য সামগ্রী বিনিময় করেন তারা।

স্বজনদের সাথে দেখা করতে আসা দেবীগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা আনুফা বেগম সমকালকে বলেন, ভারতের শিলিগুড়িতে চাচা থাকেন। ফোনে যোগাযোগের মাধ্যমে এখানে এসে চাচার সঙ্গে দেখা হয়ে অনেক ভাল লাগছে।

হরিপুর উপজেলার গেদুরা গ্রামের বৃদ্ধ মোতালেব আলী বলেন, এবার দেখা হয়েছে ভাইয়ের সঙ্গে। যুদ্ধের সময় থেকে তারা ভারতের মাল্দা জেলার রতুয়া থানার চাঁনমনি গ্রামে বসবাস শুরু করে। এখন আমার ভাই ভাবীকে কাপড় ও মিষ্টি দিয়ে বেশ আনন্দ ভোগ করি।

মিলন মেলায় ঘুরতে আসা অনেকেই তাদের আত্নীয়-স্বজনদের সঙ্গে দেখা করে খাবারসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র আদান-প্রদান করেন। তবে দু-দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর উর্ধতন কতৃপক্ষের মৌখিক অনুমতির প্রেক্ষিতে বিজিবি ও বিএসএফ’র কঠোর নিরাপত্তা ও উপজেলা প্রশাসনের বিশেষ নজরদারীর মধ্য দিয়ে এই মেলা শান্তি পূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়।

একই রকম মিলনমেলা জমেছিল পঞ্চগড় সদর উপজেলার অমরখানা ও বোদাপাড়া সীমান্তে। প্রতি বছর পহেলা বৈশাখে এ মিলনমেলা হয়ে আসছিল। ওপারে ভারতের জলপাইগুড়ির রায়গঞ্জ থানার খালপাড়া, ভিমভিটা, গোমস্তাবাড়ী ও বড়ুয়াপাড়া গ্রাম। বিজিবি-বিএসএফের গ্রিন সিগন্যালের পরই উভয় দেশের লাখো মানুষ ছুটে গিয়ে কাঁটাতারের বেড়ার দুপাশে অবস্থান নেন। শুরু হয়ে যায় দুই বাংলার মিলনমেলা।প্রায় ৩ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে কাঁটাতারের বেড়ার দুপাশ হয়ে যায় লোকে লোকারণ্য থাকে দিনভর।

সীমান্তে,মিলনমেলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close