• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

পাল্টানো রঙে বাংলাদেশে ঢুকছে ইয়াবা

প্রকাশ:  ২০ এপ্রিল ২০১৯, ১৬:১২ | আপডেট : ২০ এপ্রিল ২০১৯, ১৬:৩১
নিজস্ব প্রতিবেদক

সরকার মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ায় দেশে সর্বাধিক প্রচলিত ইয়াবা ব্যবসায়ীরা বেকায়দায় পড়েছে। দেশের বিভিন্নস্থানে অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করা হচ্ছে লাখ লাখ ইয়াবা বড়ি। এ অবস্থায় নতুন কৌশলে রঙ পাল্টে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আসছে ইয়াবা। প্রাণশক্তি কেড়ে নেয়া ভয়ংকর মাদক ইয়াবা ট্যাবলেটের রঙ লাল। তবে সম্প্রতি কয়েকটি চালান ধরা পড়েছে যেখানে ইয়াবার রঙ সাদা। ফলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দ্বিধায় পড়তে হয়েছে এগুলো সাধারণ বড়ি নাকি ইয়াবা তা শনাক্তে। এখন আবার পাওয়া যাচ্ছে হলুদ ও কমলা রঙের ইয়াবা।

গত কয়েকমাস কক্সবাজার শহর ছাড়াও চট্টগ্রাম ও রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে বিভিন্ন রঙের ইয়াবার চালান ধরা পড়েছে। আইনের চোখ ফাঁকি দিতেই মিয়ানমারের মাদক পাচারকারীরা ক্রমাগত ইয়াবার রঙ পাল্টাচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। মিয়ানমার সীমান্তবর্তী টেকনাফে পুরনো ইয়াবা ব্যবসায়ীদের অনেকেই আত্মসমর্পণ করায় নতুন চোরাকারবারি তৈরি করতে হচ্ছে তাদের।

সীমান্তের একটি সূত্র জানিয়েছে, মিয়ানমার মাদকের বাজার ধরে রাখার কৌশল হিসেবে ইয়াবার রঙ পরিবর্তন করছে। লাল রঙের পাশাপাশি সাদা, কমলা ও হলুদ রঙের ইয়াবা বাজারে মিলছে। তবে নতুন রঙের ইয়াবার চালান কম হলেও এগুলোর এগুলোর মূল্য একটু বেশি। বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে আসছে হরেক রঙের এসব ইয়াবা। এমনকি এ ব্যবসা এখন সামাজিকভাবেও ছড়িয়ে পড়ছে। কিছু পরিবার এই কারবারকে পেশা হিসাবে বেছে নিয়েছে। গত দেড় মাসে প্রায় দশ লাখ পিস ইয়াবার চালান উদ্ধার হয়েছে শুধু কক্সবাজার ও টেকনাফে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, আত্মসমর্পণের উদ্যোগ নেওয়ার পরও মিয়ানমার সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে আসা এই ইয়াবা পাচার ঠেকানো যাচ্ছে না। নতুন নতুন ইয়াবা কারবারি গজিয়ে উঠছে। তালিকাভুক্ত ইয়াবা কারবারিদের সাঙ্গপাঙ্গরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সোর্সদের সঙ্গে আঁতাত করে ইয়াবা নিয়ে আসছে। ইয়াবার চালানের একটি অংশ চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে কক্সবাজারের উখিয়া, টেকনাফ ও বান্দরবানের নাই্যংছড়ি উপজেলার ৩৮টি পয়েন্ট দিয়ে এসব ইয়াবা আসছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ক্ষুদ্র ইয়াবা কারাবারিরা বর্তমানে বেশি সক্রিয়। বেশ কয়েকজন ক্ষুদ্র কারবারি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, কারবারের সঙ্গে পুলিশের সোর্সরা বেশি জড়িত। ইয়াবার কারবারিরা টেকনাফ ও উখিয়া থেকে ইয়াবা নিয়ে আসে। পরে কক্সবাজার শহরে পর্যটকদের কাছে তা বিক্রি করা হয়। আর বড় চালানগুলো ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

স্থানীয়রা জানান, একদিকে অভিযান অন্যদিকে মাদক পৃষ্ঠপোষকদের আত্মসমর্পণের সুযোগে নির্দিষ্ট পয়েন্ট দিয়ে এসব ইয়াবার চালান প্রবেশ করছে। ওইসব পয়েন্টে বিজিবি, পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থার সদস্যদের নজরদারি থাকলেও ইয়াবা আসা অব্যাহত রয়েছে। বিশেষ করে টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপ, নাফ নদীর খুরের মুখ, ঘোলার পাড়া, দণি পাড়া, মাঝের পাড়া সৈকত, সাবরাং কচুবনিয়া, হারিয়াখালী, কাটাবনিয়া, খুরের মুখ, আলীরডেইল, মুন্ডারডেইল, টেকনাফ সদর ইউনিয়নের মহেষখালীয়া পাড়া সৈকত, নোয়াখালী পাড়া, কুনকার পাড়া, বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর, শীলখালী, মাথাভাঙ্গা, বড়ডেইল, উখিয়ার ইনানী, হিমছড়ি, দরিয়ানগর ইত্যাদি পয়েন্ট দিয়ে ইয়াবা আসছে।

ইয়াবা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close