• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

গৌরব, ঐতিহ্যের, সংগ্রামে ও সফলতার ৭০ বছরে ছাত্রলীগ

প্রকাশ:  ০৪ জানুয়ারি ২০১৮, ০০:২৭ | আপডেট : ০৪ জানুয়ারি ২০১৮, ০০:২৯
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের সবচেয়ে প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ বৃহস্পতিবার। বাংলা ও বাঙালির স্বাধীনতা-স্বাধিকার অর্জনের লক্ষ্যে মূল দল আওয়ামী লীগের জন্মের এক বছর আগে প্রতিষ্ঠা পেয়েছিল গৌরব ও ঐতিহ্যের এ ছাত্র সংগঠনটি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতেগড়া এই সংগঠনটির জন্ম ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বেই ওই দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলে আনুষ্ঠানিকভাবে পথচলা শুরু হয় ছাত্রলীগের।তৎকালীন তরুণ নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের প্রেরণা ও পৃষ্ঠপোষকতায় এক ঝাঁক মেধাবী তরুণের উদ্যোগে যাত্রা শুরু ছাত্রলীগের।

প্রতিষ্ঠার পর থেকেই প্রতিটি গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল সংগ্রামে ছাত্রলীগ নেতৃত্ব দিয়েছে এবং চরম আত্মত্যাগের মাধ্যমে বিজয় ছিনিয়ে এনেছে। গৌরবের ৭০ বছরে বাঙালি জাতির ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা, মুক্তির স্বপ্ন বাস্তবায়ন, স্বাধীনতার লাল সূর্য ছিনিয়ে আনা, গণতন্ত্র প্রগতির সংগ্রামকে বাস্তবে রূপদানের ইতিহাসে ছাত্রলীগের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে।

সম্পর্কিত খবর

    বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে বুকের তাজা রক্তের বিনিময়ে বাঙালির ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা, ’৫৪-এর সাধারণ নির্বাচনে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ পরিশ্রমে যুক্তফ্রন্টের বিজয় নিশ্চিত, ’৫৮-এর আইয়ুব বিরোধী আন্দোলন, ’৬২-এর শিক্ষা আন্দোলনে ছাত্রলীগের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা, ’৬৬-এর ৬ দফা নিয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা দেশের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সারাদেশে ছড়িয়ে পড়া, ৬ দফাকে বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে পাক-শাসকের পদত্যাগে বাধ্য করা এবং বন্দিদশা থেকে বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি, ’৭০-এর নির্বাচনে ছাত্রলীগের অভূতপূর্ব ভূমিকা পালন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে সম্মুখ সমরে ছাত্রলীগের অংশগ্রহণ, স্বাধীনতা পরবর্তী সামরিক শাসনের অবসান ঘটিয়ে গণতন্ত্রের উত্তোরণসহ প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে ছাত্রলীগের অসামান্য অবদান দেশের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।

    ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে বিভিন্ন পর্যায়ে নেতৃত্ব দেয়া সংগঠনের নেতাকর্মীরা পরে জাতীয় রাজনীতিতেও নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং এখনো দিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমান জাতীয় রাজনীতির অনেক শীর্ষ নেতার রাজনীতিতে হতেখড়িও হয় ছাত্রলীগের মাধ্যমে। তবে সংগঠনটি চলার পথ কুসুমাস্তীর্ণও ছিল না। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরপরই সংগঠনটি বড় ধরনের ভাঙনের কবলে পড়ে। মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদান রাখা তৎকালীন ছাত্রলীগের বেশ কজন শীর্ষনেতা সংগঠন ছেড়ে ১৯৭২ সালে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) নামে নতুন রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেন। ওই সময় জাসদ ছাত্রলীগ নামে আলাদা ছাত্র সংগঠনও গড়ে ওঠে, যা আজো ছাত্র রাজনীতির মাঠে সক্রিয়। এরপরও কয়েক দফায় ভাঙা-গড়ার কবলে পড়তে হয়েছে সংগঠনটিকে।

    ৫ দিনের কর্মসূচি : ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বর্ণাঢ্যভাবে পালন করতে পাঁচদিনব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করেছে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদ। বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই তথ্য জানানো হয়। একইসঙ্গে গৌরব, ঐতিহ্য, সংগ্রাম ও সাফল্যের ৭০তম বার্ষিকী উপলক্ষে সবাইকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।

    বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়- বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ছয়টায় সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সকল সাংগঠনিক কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। সকাল সাড়ে সাতটায় রাজধানীর ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করা হবে। এদিন সকাল ১০টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কেক কাটা হবে। ঢাকার মধ্যে অবস্থিত ইউনিটগুলো ছাড়া দেশের সকল সাংগঠনিক ইউনিটে আনন্দ শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে।

    জনদুর্ভোগের বিষয়টি বিবেচনা করে এবং ৫ জানুয়ারি গণতন্ত্রের বিজয় দিবস উপলক্ষে সংগঠনের আলাদা কর্মসূচি থাকায় ৪ জানুয়ারির পরিবর্তে আগামী ৬ জানুয়ারি শনিবার সরকারী ছুটির দিনে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আনন্দ শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে।

    আগামী ৮ জানুয়ারি দুপুর ২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরে দুস্থদের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হবে।

    এছাড়াও আগামী ৯ জানুয়ারি স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি এবং ১১ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলায় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মধ্যে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ কর্মসূচির করা হয়।

    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close