Most important heading here
Less important heading here
Some additional information here
Emphasized textSome additional information here
Emphasized textখেলা শুরুর আগে স্টেডিয়ামের জায়ান্ট স্ক্রিনে ভেসে উঠল পরিসংখ্যানটা। জাতীয় দলের জার্সি গায়ে হাঙ্গেরির (স্পেনের হয়ে খেললেও কোনও গোল করেননি) ফেরেঙ্ক পুসকাস ইউরোপে সব চেয়ে বেশি গোল করেছেন। তাঁর গোলের সংখ্যা ৮৪। এ বারের বিশ্বকাপে স্পেনের বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিকের সুবাদে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো ছুঁয়ে ফেলেছেন কিংবদন্তি সেই পুসকাসকে।
বুধবার মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়ামে মরক্কোর বিরুদ্ধে মাঠে নেমে সেই পুসকাসকে টপকাতে রোনাল্ডোর লাগল মাত্র চার মিনিট। পর্তুগালের হয়ে ১৫২ ম্যাচে ৮৫ গোল করে নতুন রেকর্ড গড়ার দিনে অবশ্য আগের দিনের মতো ‘গোটি সেলিব্রেশন’ (থুতনির দাড়িতে হাত বোলানো। যার নেপথ্য বার্তা, আমিই সর্বকালের সেরা) করেননি সিআর সেভেন।
পিছন থেকে ছুটে এসে যে গোলটা রোনাল্ডো করলেন তা দেখে মনে পড়ছিল, জোসে দিনিস আভেইরো-র কথা। পর্তুগাল অধিনায়কের প্রয়াত বাবা। নিদারুণ অর্থকষ্টে জীবন কাটিয়েছেন। রোনাল্ডোর শৈশবে স্থানীয় পানশালায় আকণ্ঠ মদ্যপান করে চিৎকার করে বলতেন, ‘‘দেখবে, আমার ছেলে এক দিন বিশাল বড় ফুটবলার হবে।’’
ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর রঙিন যৌন জীবনের গল্প এখন সবার মুখে মুখে। মাঠে যাঁর হরিণ-দৌড়ে মত্ত হয়ে ওঠে গ্যালারি, তাঁরই শরীরী আবেদনে মুগ্ধ সুন্দরীরা। সেই তালিকায় রয়েছে দুনিয়া কাঁপানো সব নাম। কিম কার্দেশিয়ান থেকে প্যারিস হিলটন। সারা দুনিয়ার পুরুষ হৃদয় মত্ত যাঁদের কটাক্ষে, সেই মেয়েরাই মুগ্ধ রোনাদোর জাদুতে। ফুটবলের জাদুকরকে ঘিরে সেই সব রঙিন সম্পর্কের গল্প উড়ে বেড়ায় প্রজাপতির মতো।
এখনও বিয়ে করেননি রোনালদো। তবে এরই মধ্যে চারটি সন্তান তার। বর্তমান প্রেমিকা জর্জিনা রুদ্রিগেজের গর্ভে জন্ম নিয়েছে একটি কন্যাসন্তান। এছাড়া আরও তিনটি সন্তান রয়েছে রোনালদোর। ২০১০’র জুলাইয়ে এক ছেলে সন্তানের বাবা হন সিআর সেভেন। ২০১৫-এ জানুয়ারিতে আবার সামনে আসে তাঁর যমজ সন্তানের খবর। কিন্তু কোনো ক্ষেত্রেই সন্তানদের মাকে তা প্রকাশ্যে আনতে চাননি রোনালদো।
২০১০ থেকে ২০১৫- ইরিনা শায়েকের সঙ্গে লিভ ইন। তার পর ২০১৬ থেকে জর্জিনা রুদ্রিগেজ। কিন্তু কেবল তো এই দু’জনই নয়। বারে বারে নানাজনের সঙ্গে দেখা গিয়েছে তাঁকে। ছড়িয়েছে নানা গসিপ। কখনও অ্যান্ড্রেসা উরাচ। কখনও গেমমা অ্যাটকিনসন। কিম কার্দেশিয়ান। প্যারিস হিলটন। ডাকসাইটে সুন্দরীদের হৃদয় জয় করেছেন রোনালদো। এর কোনটা গুজব, কোনটা সত্যি তা অবশ্য আমজনতার অজানা। কিন্তু পুরোটাই বানানো এমন দাবি কেউ করেনি।
যেমন প্রাক্তন ‘মিস বামবাম’ নাতাশা। জর্জিনা রুদ্রিগেজেরে গর্ভে রোনালদোর মেয়ে সন্তানের জন্ম নেওয়ার ঠিক আগে আগেই নাতাশা বিস্ফোরণ ঘটান। তিনি বলেন, ইরিনা শায়েকের সঙ্গে বিচ্ছেদের পরে রোনালদো নাকি মেয়েদের সঙ্গে ‘ওয়ান নাইট স্ট্যান্ড’ করে বেড়াতেন! ঠিক সেইভাবেই নাকি নাতাশাকেও তিনি কাছে পেতে চেয়েছিলেন। নাতাশা তাঁর খোলামেলা ছবি পাঠাতেন রোনালদোকে। রোনালদো সেই ছবি দেখে নানা রকম আদিরসাত্মক মন্তব্য করতেন।
ক্রমে সম্পর্ক আরও গভীরে যায়। জর্জিনা যখন কয়েক মাসের অন্ত্ব:সত্ত্বা, সেই সময়ে নাকি তাঁরা শরীরী মিলনে লিপ্ত হয়েছিলেন, এমনই দাবি ছিল নাতাশার।ক্ষুব্ধ নাতাশা জানান, এর পরেই তাঁর সঙ্গে সম্পর্কে ইতি টানেন রোনালদো। তাঁর নম্বর ব্লক করে দেন তিনি। নাতাশার বক্তব্য, এরপরই নাকি তিনি বুঝতে পারেন গত দু’বছর ধরে তাঁর সঙ্গে প্রেমের খেলা খেলেছেন রোনালদো। তার পর প্রয়োজন ফুরলে ছুড়ে ফেলে দিয়েছেন। হতাশ নাতাশা বলেন, রোনালদো আমার জীবন নষ্ট করে দিয়েছেন।
নাতাশার দাবি আদৌ কতটা সত্যি, তা জানা যায়নি। কিন্তু এমনই নানা কিসসা জড়িয়ে রয়েছে রোনালদোকে। মাঠে তাঁর নিখুঁত ড্রিবলিং, চকিত পাস আর তিনকাঠি চেনার ক্ষমতার মতোই মাঠের বাইরেও বারে বারে জীবন জুড়ে যৌনতার উদযাপনের কাহিনি।
কেবল নারীসঙ্গ নয়, রোনালদো বাই সেক্সুয়াল, এমন গুঞ্জনও শোনা গিয়েছে। মরক্কোর কিক বক্সার-এর সঙ্গে তাঁর সমকামী সম্পর্ক রয়েছে খবরে শিরোনাম হয়েছে। উড়েছে রসালো গল্প। তবে তার সত্যাসত্য নিয়ে মুখ খোলেননি রিয়াল-তারকা।
অর্থাৎ রোনালদোর মধ্যে নানা সত্তা। কখনও তিনি ক্যাসানোভা আবার কখনও তিনি সমলিঙ্গে উৎসাহী। কিন্তু সেই বিচার নেহাতই সরলরৈখিক। পর্তুগালের মেগাস্টার ফুটবলারের বাৎসল্য মাখা পিতৃত্বকেও তো ফেলে দেওয়া যায় না।
তিন-তিনজন সন্তানের বাবা হিসেবে নিজে পরিচয় দেওয়া, তাদের প্রতিপালন করা, আর কখনওই তাদের মায়েদের নাম সামনে না আনা এই ব্যাপারটা ভাবলে কিন্তু স্পষ্ট, যৌনতামুখী এক উদাস প্রেমিক মাত্র নন রোনালদো। তার বাইরেও অনেক কিছু। তাঁর ব্যাপ্তি মাপা অত সহজ নয়। বক্সের ভিতরে তিনি যেমন, ব্যক্তিজীবনেও তাই আনপ্রেডিক্টেবল।
শোনা যায়, ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডে থাকাকালীন এক মার্কিন হোটেল কর্মীর সঙ্গে শরীরী সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন রোনালদো। তারই ফলশ্রুতি জুনিয়রের জন্ম। শোনা যায়, ওই নারী অন্ত:স্বত্ত্বা হয়ে পড়ার পরে যোগাযোগ করেন রোনাদোর সঙ্গে। ডিএনএ পরীক্ষায় রোনালদোর পিতৃত্ব যখন নিশ্চিত হয়, তখনই পর্তুগিজ মহাতারকা বিষয়টি মেনে নেন। ১ কোটি পাউন্ড ওই নারীকে দিয়ে রোনালদো ছেলেকে নিজের কাস্টডিতে নিয়ে নেন। ছেলের সঙ্গে এখন দারুণ সম্পর্ক রোনালদোর। /এস কে