• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

১ মাস ২২দিন পর বড়পুকুরিয়ায় বিদুৎ উৎপাদন শুরু

প্রকাশ:  ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৮:৪৪ | আপডেট : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৯:১৪
দিনাজপুর প্রতিনিধি

বাংলাদেশের একমাত্র কয়লা ভিক্তিক দিনাজপুরের পার্বতীপুর বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি একমাস ২২দিন কয়লার অভাবে বন্ধ থাকার পর আবারও উৎপাদন শুরু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৫ টার দিকে একটি ইউনিট চালু করা হয়। এর আগে চলতি বছরের ২২ জুলাই কয়লা সংকটের কারণে বন্ধ হয়ে যায় দেশের একমাত্র কয়লা ভিক্তিক এই বড়পুকুরিয়া ৫২৫ মেগওয়াট তাপ বিদুৎ কেন্দ্রটি। এতে বিদুৎ সংকটে পড়ে দিনাজপুরসহ রংপুর বিভাগের আট জেলা।

বড়পুকুরিয়া তাপ বিদুৎ কেন্দ্রের ম্যানেজার (উৎপাদন) মাহাবুববুর রহমান জানান, বিকেল ৫টায় তাপ বিদুৎ কেন্দ্রটির ষ্টিমে আগুন দেয়া হয়েছে, তবে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়ে গ্রীডে যোগ হতে রাত্রী ১০টা বাজবে।

বড়পুকুরিয়া তাপ বিদুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল হাকিম বলেন, কয়লা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানী লিঃ (বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি) কর্তৃপক্ষ কয়লা সরবরাহ করতে না পারায়, গত ২২ জুলাই রাত সাড়ে ১১ টায় তাপ বিদুৎ কেন্দ্রটি বন্ধ করতে বাধ্য হয় তারা।

গত ৮ সেপ্টেম্বর থেকে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে কয়লা উৎপাদন শুরু হওয়ায়, কয়েক দিনের কয়লা মজুদ করে তাপ বিদুৎ কেন্দ্রটির ২৭৫ মেগাওয়াটের একটি ইউনিটে উৎপাদন শুরু করা হয়েছে, কয়লা সরবরাহ বৃদ্ধি হয়ে পর্যায়ক্রমে ১২৫ মেগাওয়াড করে ২৫০ মেগাওয়াটের বাকি দুটি ইউনিট চালু করা হবে।

উল্লেখ্য, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে উত্তোলনকৃত কয়লা মধ্যে এক লাখ ৪৪ হাজার টন কয়লা ঘাটতি হওয়ায় গত ১৯ জুলাই বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী হাবিব উদ্দিন আহম্মদ ও কোম্পানীর সচিব (জিএম প্রশাসন) আবুল কাশেম প্রধানিয়াকে প্রত্যাহার করেছে খনিটির নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলা। একই কারণে মহাব্যবস্থাপক ( মাইনিং এন্ড অপরেশন) এটিএম নুরুজ্জামান চৌধুরী ও উপ-মহাব্যবস্থাপক (স্টার) খালেদুল ইসলাম দুই কর্মকর্তাকে সাময়িক বহিস্কার করেছে। যদিও খনির কর্মকর্তাদের দাবি এক লাখ ৪৪ হাজার টন কয়লা সিস্টেম লস। তাদের দাবি গত ২০০৭ সাল থেকে খনিটিতে বাণিজ্যিক ভাবে কয়লা উত্তোলন শুরু হয়েছে। এই পর্যন্ত খনি থেকে এক কোটি ১০ লাখ মে.টন কয়লা উত্তোলন করা হয়েছে। এর মধ্যে এক লাখ ৪৪ হাজার টন কয়লা সিস্টেম লস হয়েছে।

কয়লা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি কর্তৃপক্ষ কয়লা সরবরাহ করতে না পারায় গত ২২ জুলাই বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যায়। এতে করে বিদ্যুৎ সংকটে পড়ে দিনাজপুরসহ দেশের উত্তারাঞ্চরের আট জেলা।

বিদ্যুৎ সরবরাহ কারী প্রতিষ্ঠান নর্দান ইলেক্ট্রি সাপ্লাই কোম্পানী লি. নেসকো এর রংপুর জোন এর প্রধান প্রকৌশলী শাহাদৎ হোসেন সরকার বলেন, রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় প্রতিদিন ৬৫০ মেগাওয়াট বিদুতের প্রয়োজন, এর মধ্যে ৫২৫ মেগাওয়াড বিদুৎ আসে বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে। কিন্তু কয়লা সংকটের কারণে গত একমাস ২২ দিন থেকে বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রেটি পুরোপুরি বন্ধ থাকায়, বাহির থেকে বিদ্যুৎ এনে এই আট জেলায় সরবরাহ করা হয়েছে, এই কারণে গত এক মাস থেকে বিদ্যুতের কিছু ঘাটতি দেখা দেয়, এখন তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে উৎপাদন পুরোপুরি শুরু হলে বিদুৎতের ঘাটতি পুরণ হয়ে যাবে।

এদিকে তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন রেজিস্টার সুত্রে জানাগেছে, বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি ৫২৫ মেগাওয়াট হলেও সেখানে কোনদিন ৫২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়নি, গত ২০১৭ সালের সর্বোচ্চ উৎপাদন হয়েছে ৩৯৭ মেগাওয়াট।

তাপ বিদুৎ কেন্দ্রে কর্মরত একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির তিনটি ইউনিটে প্রতিদিন (জ্বালানী) কয়লার প্রয়োজন হবে পাচঁ হাজার ২শ’ টন কয়লা, সেখানে কয়লা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে প্রতিদিন কয়লা উৎপাদন হয় তিন হাজার ৫শ’ থেকে চার হাজার টন। ফলে বড়পুকুরিয়া তাপ বিদুৎ কেন্দ্রটিতে প্রতিদিনে এক হাজার ৫শ’ থেকে দুই হাজার টন কয়লা ঘাটতি থাকে। যার ফলে প্রতিদিনে তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির একটি করে ইউনিট বন্ধ থাকে। এছাড়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে যন্ত্রাংশর মেয়াদ কমে যাওয়ায় আশানুরূপ উৎপাদন হচ্ছে না ফলে ৫২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র হলেও উৎপাদন হয়, তিনশ থেকে সাড়ে তিনশ মেগাওয়াট।

/রবিউল

দিনাজপুর,বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close