আবারও ধর্ষণের অভিযোগ এম জে আকবরের বিরুদ্ধে
আবারও যৌন হেনস্তার ভয়াবহ অভিযোগ উঠল ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও সাংবাদিক এম জে আকবরের বিরুদ্ধে।
যিনি অভিযোগ তুললেন, তিনি আমেরিকা-নিবাসী এক মহিলা সাংবাদিক। দুই দশক আগে আকবরের সঙ্গে কাজ করেছিলেন তিনি। যদিও এম জে আকবরের আইনজীবী এই অভিযোগ নস্যাৎ করে দিয়েছেন বলে জানিয়েছে দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট।
সম্পর্কিত খবর
ন্যাশনাল পাবলিক রেডিওর পল্লবী গগৈয়ের নাম উঠে এসেছে এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে। পল্লবী গগৈ লিখিতভাবে জানান, দুই দশক আগে এম জে আকবর যখন এশিয়ান এজের সম্পাদক ছিলেন, তখন তিনি বাইশ বছর বয়সে সবে যোগ দিয়েছিলেন ওই সংবাদপত্রে।
তিনি বলেন, আকবরের ব্যবহার, ভাষার ব্যবহার, কর্মচারীদের সঙ্গে তার ব্যবহার এবং মুখের কথা দিয়ে অপমান করা- সবকিছুকেই তিনি শিক্ষণীয় হিসেবেই গ্রহণ করেছিলেন। যার ফলস্বরূপ তিনি অচিরেই একটি পাতার সম্পাদক হিসেবে নিযুক্ত হন। কিন্তু তিনি ভাবতেই পারেননি, সেই উত্তরণই তার জীবনে একটি ‘কালো ছায়া’ নামিয়ে আনবে।
ঘটনার কথা উল্লেখ করতে গিয়ে তিনি বলেন, আমি তাকে আমার সম্পাদিত পাতাটি দেখাতে নিয়ে গিয়েছিলাম। তিনি সবটা দেখে আমার খুব প্রশংসা করলেন। তারপরই আচমকা আমাকে চুমু খেতে এগিয়ে আসেন তিনি। আমি হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম। স্থাণু হয়ে দাঁড়িয়েছিলাম কয়েক মুহূর্ত। তারপরই লজ্জা, ঘৃণা এবং একরাশ ভীতি নিয়ে অফিস থেকে বেরিয়ে আসি। আমি ধ্বংস হয়ে গিয়েছিলাম ভিতরে ভিতরে।
এর পরের ঘটনাটি ঘটেছিল কয়েকদিন পরেই। একটি নতুন ম্যাগাজিনের উদ্বোধনের সময়। তিনি বলেন, সেদিনও মুম্বাইয়ের তাজ হোটেলে তিনি আমাকে ডাকেন তার নিজের বিলাসবহুল ঘরে পাতার লে-আউট দেখার জন্য। ওইদিনও আমাকে চুমু খেতে আসেন তিনি। আমি বাধা দিই। ঠেলে সরিয়ে দিই তাকে। তিনি আমার মুখে আঁচড়ে দেন। আমি দৌঁড়ে পালিয়ে আসি অঝোরে কাঁদতে কাঁদতে।
এরপরেও একটি ঘটনা ঘটে জয়পুরের হোটেলে। বলেন, আমি তার সঙ্গে একটা যুদ্ধ করে চলেছিলাম ঠিকই। কিন্তু তিনি শারীরিকভাবে এবং ক্ষমতার দিক দিয়েও আমার থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী ছিলেন।
এই ঘটনার কথা নিজের বন্ধু, সহকর্মী সকলকেই জানিয়েছিলেন। বলেন, আমি শারীরিক-মানসিকভাবে এবং আবেগের দিক থেকেও সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়েছিলাম। এই লেখাটা লিখছি, যে যে মহিলা তাদের সত্যিটা নিয়ে এগিয়ে এসেছেন, তাদের জন্য। আমি এই কথাগুলো লিখছি আমার এখনও আঠারো না হওয়া পুত্র ও কন্যার জন্য। যাতে তারা অন্তত এটুকু বুঝতে পারে, দোষ না থাকা সত্ত্বেও কেউ যদি তাদের দোষী বানানোর চেষ্টা করতে থাকে ক্রমাগত, তাহলে কীভাবে লড়াই করা উচিত। কীভাবেই বা লড়াই করে ফিরে আসা উচিত। যাতে ওই লোকগুলো বুঝতে পারে, কাউকে বিনা কারণে বা নিজের স্বার্থের জন্য দোষী বানালে আখেরে কোনও লাভ হয় না শেষমেশ।
তার বিরুদ্ধে এর আগে একাধিক যৌন হেনস্তার অভিযোগ ওঠায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর পদ থেকে তাকে সরে যেতে হয়।
/অ-ভি