• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

শপথ নিয়ে দোটানায় সুলতান মনসুর!

প্রকাশ:  ০২ জানুয়ারি ২০১৯, ২১:৫৫ | আপডেট : ০২ জানুয়ারি ২০১৯, ২২:০০
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

রাত পোহালেই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ীদের শপথ। ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশন গেজেট প্রকাশ সম্পন্ন করেছে। বৃহস্পতিবার সংসদ ভবনের নিচতলা শপথ কক্ষে সকাল ১১টায় এ শপথ হবে। পরাজয়ের পর বিএনপির দলীয় ফোরামে বিজয়ী প্রার্থীদের শপথ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে ঐক্যফ্রন্ট এ ব্যাপারে কোনো আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত এখনও নেয়নি।

তাই চাপে আছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা সদ্য নির্বাচিত সাংসদ সুলতান মোহাম্মদ মনসুর। শপথে অংশ নিবেন কি, নিবেন না এনিয়ে নির্বাচনী এলাকায় চলছে নানা গল্প-কাহিনী। কেউ কেউ ক্ষোভ ঝাড়ছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। আর সুলতান সমর্থক ও বিএনপির অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ চেয়ে আছেন সুলতানের সিদ্ধান্তের দিকে থাকিয়ে। শপথের ব্যাপারে ব্যাপক চাপ দিচ্ছেন স্থানীয় নেতা-কর্মী। কেননা নির্বাচনে জততে অনেক চড়াই-উৎরাই পার হতে হয়েছে সুলতান মনসুরকে। সাথে নেতাকর্মীরা পরিশ্রমের সাথে হেনস্তার শিকার হয়েছেন দ্বিগুন। এই অবস্থায় নির্বাচিত হয়েও শপথ না নিলে নেতাকর্মী ও সমর্থকরা হতাশ হয়ে পড়তে পারেন। এতে ভবিষ্যতে মাঠ ধরে রাখা কঠিন হয়ে যাবে। তাই শপথ নেওয়ার চাপ রয়েছে মৌলভাবাজার-২ (কুলাউড়া) আসনে জয়ী গণফোরামের প্রার্থী সুলতান মনসুরের উপর।

সম্পর্কিত খবর

    তবে সুলতান মনসুর বলছেন সবার সঙ্গে কথা বলেই শপথের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

    এক সময় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সরাসরি সস্পৃক্ত সুলতান মোহাম্মদ মনসুর গণফোরামে যুক্ত হলেও মৌলভীবাজার-২ আসনের নির্বাচনে নিজেকে 'বঙ্গবন্ধুর সৈনিক' হিসেবে উল্লেখ করেন। ধানের শীষের প্রার্থী হলেও আনুষ্ঠানিক প্রচারের শেষদিন মৌলভীবাজারে সংবাদ সম্মেলনেও জাতির পিতার প্রতি নিজের আনুগত্যের কথা জানান। গণফোরামের নেতা হিসেবে তিনি ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেন। এ আসনে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রথম এমপি হওয়ার ২২ বছর পর ৩০ ডিসেম্বরের ভোটযুদ্ধে আবারও জয়ী হলেন সাবেক ডাকসু ভিপি সুলতান মনসুর।

    জানা গেছে, নীতিগতভাবে শপথ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। তবে এতে দ্বিমত ঐক্যফ্রন্ট তথা ড. কামাল হোসেনের গণফোরামের। ঐক্যফ্রন্টের শরীক গণফোরামের দুই নির্বাচিত সংসদ সদস্য শপথ নিতে চান। তাদের মতে সংসদের বাইরে শুধু নয় সংসদের ভেতরে থেকেও সরকারের সমালোচনা করা প্রয়োজন। এই যুক্তিতে শপথ নিতে চান তারা।

    শপথের ব্যাপারে সাবেক তিনবারের সাংসদ ও জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য এড. নওয়াব আলী আব্বাস খান বলেন-‘দেশের বর্তমান পরিবেশ পরিস্থিতির উপর বিবেচনা করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সমউপযোগী সিদ্ধান্ত নিবে। ৩ জানুয়ারী শপথ অনুষ্ঠানে অংশ নিতে হবে এমন কোন বাধ্য বাধকতা নেই। আরও সময়ে আছে। ঐক্যফ্রন্টের নেতৃবৃন্দ শিগগিরই সিদ্ধান্ত জানাবেন।’

    মৌলভীবাজার-২ আসনের একাধিক ভোটার জানান- ‘এলাকার মানুষের প্রত্যাশা পূরণে সুলতান মনসুর এমপি হিসেবে শপথ নেওয়া উচিত।’

    স্থানীয় সাংবাদিকরা বলেন-‘অনেক প্রতিকূলতার মধ্যে মামলা-মোকদ্দমা নিয়ে মানুষ ভোট দিয়ে সুলতান মনসুরকে নির্বাচিত করেছেন। তাদের আমানত রক্ষার দায়িত্ব নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির। এমপি হিসেবে শান্তি-শৃঙ্খলা ও উন্নয়নের দায়িত্ব তার ওপর।’

    এ প্রসঙ্গে সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ বলেন- ‘সবার সঙ্গে কথা বলে এ সিদ্ধান্ত নেব। এক প্রশ্নের উত্তরে সাবেক এ ডাকসু ভিপি বলেন-‘ জনপ্রতিনিধি হিসেবে প্রথম ও প্রধান লক্ষ্য মানুষের আশা-আকাঙ্খাক্ষার বাস্তবায়ন।’

    প্রসঙ্গত, ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচেন আওয়ামী লীগ নৌকা মার্কা ২৫৯টি আসন, জাতীয় পার্টি লাঙ্গল ২০, বিএনপি ধানের শীষ ৫, গণফোরাম ২, বিকল্পধারা বাংলাদেশ ২, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) ২, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি ৩, তরিকত ফেডারেশন ১টি, জাতীয় পার্টি (জেপি) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী ৩টি আসনে জয় লাভ করেছে।

    পিবিডি/আরিফ

    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close