ভৈরবে গত বছরে ট্রেনে কাটা পড়ে ১২০ জনের মৃত্যু
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে গেল বছর ট্রেনে কাটা পড়ে ১২০ জনের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্য ৮৯ জন পুরুষ এবং ৩১ জন মহিলা। গত ২০১৮ সালের জানুয়ারী মাস থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। নিহতদের মধ্য অধিকাংশই অজ্ঞাত লাশ হিসেবে পুলিশ নিজ দায়িত্ব বেওয়ারিশ হিসাবে কবরস্থানে দাফন করে।
রেলওয়ে পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ভৈরব-টঙ্গী ও ভৈরব-সরারচর রেলওয়ে পথে দুর্ঘটনায় তারা নিহত হয়েছে। তবে ট্রেনে ভ্রমণ করতে গিয়ে অসতর্কতার কারনেই এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার শিকার হয় তারা।
সম্পর্কিত খবর
ভৈরব রেলওয়ে থানা সূত্রে জানা যায়, ভৈরব-টঙ্গি ও ভৈরব-সরারচর রেলওয়ে পথে ট্রেন ভ্রমনের সময় অনেক যাত্রী অসতর্কতার কারণে প্রায় সময়েই প্রাণ হারাতে হয়। এপর্যন্ত যারা নিহত হয়েছে তারা চলন্ত ট্রেনে উঠানামা, রেলপথ পারাপার, ট্রেনের ছাদে ভ্রমণ, দুই বগীর সংযোগস্থলে বসে ভ্রমণ করা, ট্রেনের হাতলে ঝুলন্ত অবস্থায় ভ্রমণ ও ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যু। ট্রেনের ছাদে ভ্রমণ নিষিদ্ধ হলেও বগি স্বল্পতায় অনেকেই লোকাল ট্রেনে ছাদে ভ্রমণ করে থাকে।
অনেক যাত্রী রেললাইন পারাপারে ওভারব্রীজ ব্যবহার না করার ফলে তাই অসতর্কতায় ট্রেনে কাটা পরে মৃত্যু হয়। অনেক নারী পুরুষ রেললাইনে দাঁড়িয়ে ইয়ারফোন কানে লাগিয়ে মোবাইলে গান শুনার সময়ও ট্রেনে কাটা পরেছে বলে রেলওয়ে পুলিশ জানায়। অনেক সময় বিভিন্ন স্টেশনে আন্তঃনগর ট্রেনের বিরতি না থাকলেও যাত্রীরা ঝুঁকিপূর্ণভাবে স্টেশনে নামতে গিয়েও দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে।
রাতের বেলা অনেক যাত্রী ট্রেনের হাতল ধরে দাঁড়ানো অবস্থায় ঘুমের ঘুরে নিচে পরে মৃত্যু হয়েছে এমন ঘটনাও কম নয় বলে পুলিশ জানায়। আবার অনেকে ট্রেনের নিচে পরে আত্মহত্যা করেছে এই ঘটনাও রয়েছে। এমনিভাবে ২০১৮ সালে ১২০ জন নারী পুরুষ অস্বাভাবিকভাবে নিহত হয়।
এসব ঘটনায় ভৈরব রেলওয়ে থানায় সবগুলি ইউডি (অস্বাভাবিক মৃত্যু) মামলা হয়েছে। তবে দুটি ঘটনায় হত্যা মামলা করেছে নিহতের পরিবার। নিহতদের ময়না তদন্তের পর বেশীরভাগই অজ্ঞাত লাশ হিসেবে পুলিশ কবরস্থানে দাফন করে। কিছু কিছু লাশ সনাক্ত করার পর তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত মাষ্টার মোঃ ইছব আলী জানান, ট্রেনের যাত্রীদের সতর্ক করতে প্রতিদিন স্টেশনের মাইকে ঘোষণা করা হয়। ছাদে ভ্রমণ নিষিদ্ধ, রেললাইন পারাপারে সতর্কতা অবলম্বনসহ বিভিন্ন বিষয়ে মাইকে সতর্ক করলেও যাত্রীরা নিষেধ উপেক্ষা করে বলেই এসব দুর্ঘটনা ঘটে।
ভৈরব রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ মো.আবদুল মজিদ জানান, প্রতিবছরই এভাবে রেলওয়ে পথে দুর্ঘটনা ঘটছে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ প্রতিনিয়ত মাইকে সতর্ক করলেও যাত্রীরা এসবের তোয়াক্কা করেনা বলেই এই দুর্ঘটনা ঘটছে। নিহতের লাশ নিয়ে পুলিশ বিপাকে পড়ে। অধিকাংশ লাশ পরিচয়হীনভাবে দাফন করতে হয় বলে তিনি জানান।
পিবিডি/ওএফ