ভোলায় এক সপ্তাহে হাসপাতালে ভর্তি দেড় শতাধিক
শিশুদের ঠান্ডাজনিত রোগ বাড়ছে
ভোলায় তীব্র শীতে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শিশুদের ঠান্ডাজনিত রোগ। প্রতিদিন নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, এলার্জিসহ ঠান্ডাজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে অনেক শিশু। গত এক সপ্তাহে ভোলা সদর হাসপাতালে প্রায় দেড় শতাধিক শিশু ভর্তি হয়েছে। এদের মধ্যে বেশীর ভাগ শিশু নিউমোনিয়া ও ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত। ভর্তিকৃত শিশুদের মধ্যে গত বুধবার খিচুনি রোগে মো. মমিন নামের ১ মাস ২২ দিনের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে হাসপাতালে বেড সংকটের কারণে একেক বেডে তিন থেকে চারজন শিশুর চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। অতিরিক্ত রোগীর চাপে চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে নার্স, ডাক্তার ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। একই অবস্থা আউটডোরে। সেখানেও প্রতিদিন গড়ে ৮০ থেকে ৯০ জন শিশু চিকিৎসা সেবা নিতে আসে। এদের মধ্যে বেশির ভাগ শিশুর বয়স দুই বছরের নিচে। মাত্র একজন শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দিয়ে এত রোগীর চিকিৎসা সেবা দিতে চরম বিপাকে পড়তে হয় বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
সম্পর্কিত খবর
শনিবার দুপুরে ভোলা সদর হাসপাতাল গিয়ে দেখা যায়, শিশু ওয়ার্ডের প্রতিটি বেডে দুই তিনজন করে শিশু ভর্তি রয়েছে। কেউ নিউমোনিয়া রোগে আক্রান্ত আবার কেউ বা আক্রান্ত ঠান্ডজনিত রোগে। নানা রোগে আক্রান্ত অনেকে ৫-৭ দিনে ধরে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে অনেক শিশু। এতে করে বেড সংকটে পড়তে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।
হাসপাতালে শিশুদের জন্য বরাদ্দকৃত ২০টি বেডের বিপরীতে ভর্তি রয়েছে অর্ধশতাধিক শিশু।
আউটডোরে গিয়ে দেখা যায়, ডাক্তারের রুমের সামনে প্রায় ৪০ থেকে ৫০ জন রোগীর সিরিয়াল। তারা সবাই বিভিন্ন ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত।
হাসপাতালে ভর্তি তিন মাসের শিশু সাইফুল ইসলামের মা ইয়াছমিন বেগম জানান, তিনি দৌলতখান থেকে শুক্রবার ছেলেকে নিয়ে হাসপাতালে আসছে। গত কয়েকদিন ধরে সাইফুল ইসলাম শ্বাসকষ্ট রোগে ভুগছে। এখনও ভালো হয়নি।
বোরহানউদ্দিন থেকে আসা মো. নুরুদ্দিন নামের একজন জানান, তিনি তার শিশু পুত্র আশরাফুল ও মেয়ে মুনতাহাকে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। এদের একজনের থেলাসেমিয়া ও আরেকজনের শ্বাসকষ্ট। পাঁচ দিন ধরে তারা দু’জন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।
মো. আরিফুর রহমান নামের এক অভিভাবক জানান, তার শিশু পুত্র ইউছুফ রহমান বমি করায় তাকে নিয়ে শনিবার সকালে হাসপাতালে এসেছেন। কিন্তু হাসপাতালে কোনো বেড খালি নেই। কোনো মতে একটি বেডে জায়গা পেয়েছেন। তবে এ অবস্থায় শিশুদের চিকিৎসা করানো সম্ভব না বলেও জানান তিনি।
ভোলা সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের ইনচার্জ মোসা. শাহনাজ খান জানান, তীব্র শীতে ভোলায় শিশু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। গত এক সপ্তাহে হাসপাতালের ২০টি বেডের বিপরীতে প্রায় দেড় শতাধিক শিশু ভর্তি হয়েছে। বর্তমানে ভর্তি রয়েছে অর্ধশতাধিক শিশু। অতিরিক্ত রোগীর চাপে চিকিৎসা সেবা ব্যহত হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ সার্জন ডা. আব্দুল কাদের জানান, বেশীরভাগ শিশু রোগাক্রান্ত হচ্ছে শীতকালে গোসল না করানোর কারণে। তাই শীতে বাচ্চাদের প্রতিদিন সঠিকভাবে গোসল করানোর পরামর্শ দেন এই শিশু বিশেষজ্ঞ। সাথে সাথে বাবা-মাকে শিশুদের প্রতি আলাদা নজর রাখতেও বলেন তিনি।
/পিবিডি/আরাফাত