মধ্যপাড়া খনিতে পাথর বিক্রিতে ভাটা, মজুদ সাড়ে ৪ লাখ মে.টন
দিনাজপুরের মধ্যপাড়া খনিতে পাথর বিক্রিতে ভাটা পড়েছে, খনির পাথর ইয়ার্ডে বর্তমানে অবিক্রিত পাথরের মজুদ সাড়ে ৪ লাখ মেট্রিক টন। দিনদিন বাড়ছে এই মজুদের পরিমাণ।
খনি সূত্রে জানা গেছে, গত ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত খনি থেকে পাথর উত্তোলন করা হয়েছে ১১ লাখ ৬৫ হাজার ৯৬৬ মেট্রিকটন। সেখানে পাথর বিক্রি হয়েছে ৭ লাখ ৩৩ হাজার ২২মেট্রিকটন। অবশিষ্ট ৪ লাখ ৩২ হাজার ৯৪৪ টন পাথর মজুদ রয়েছে। বর্তমানে চলতি সালে প্রতিদিন গড়ে ৫ হাজার টন পাথর উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে বিক্রি কম হওয়ায় পাথরের মজুদ দিন-দিন বেড়েই চলেছে।
সম্পর্কিত খবর
খনি কর্তৃপক্ষ বলছে, ব্যবসায়ীরা অন্য জায়গা থেকে আমদানীকৃত পাথর ওভার লোড নিয়ে পরিবহন করতে পারছে, এতে তাদের পরিবহন খরচ কমে যাচ্ছে, এই কারণে তারা খনির পাথর না নিয়ে আমদানীকৃত পাথর কিনতে আগ্রহী হচ্ছে। কিন্তু খনির পাথর অতিরিক্ত বহন করার অনুমতি না থাকার কারণে খনির পাথর বিক্রি কিছুটা কমেছে বলে দাবি খনি কর্তৃপক্ষের।
কয়েকজন পাথর ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমদানী ত পাথর একটি টু-এক্সেল ট্রাকে ৩২ টন ও একটি ত্রি-এক্সেল ট্রাকে ৫৫ টন পর্যন্ত পরিবহন করা যায়, এতে তাদের পাথর পরিবহনের খরচ কমে যায়। অথচ খনি কতৃপক্ষ একটি টু-এক্সেল ট্রাকে ২২ টন ও একটি ত্রি-এক্সেল ট্রাকে ৩২ টনের বেশি লোড ও পরিবহনের অনুমতি দেয় না। এতে পাথরের পরিবহন খরছ বেশি হয়ে যায়।
ট্রাকের চালকদের নিকট থাকা পাথর আমদানীকারকদের দেয়া পাথরের চালানে দেখা যায়, সেখানে একটি টু-এক্সেল ট্রাকে ৩২ টন ও একটি ত্রি-এক্সেল ট্রাকে ৫৫ টন পাথর লোড দিয়েছে। ট্রাক চালকরা জানায়, এই লোড নিয়ে তারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যাতায়াত করেছে কোন অসুবিধা হয়নি।
মধ্যপাড়া গ্রানাই মাইনিং কোম্পানী লিঃ এর মহা-ব্যবস্থাপক (অপরেশন) আবু তালেব ফরাজি বলেন, বাংলাদেশে সড়ক ও সেতু বিভাগের নিয়ম অনুযায়ী একটি টু-এক্সেল ট্রাকে ২২ টন ও একটি ত্রি-এক্সেল ট্রাকে ৩২ টন পর্যন্ত। এই নিয়ম মেনে মধ্যপাড়া খনি কতৃপক্ষ ট্রাকে পাথর পরিবহনের অনুমতি ও লোড দিয়ে থাকে। কিন্তু পাথর আমদানীকারকেরা, সরকারের এই নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গলী দেখিয়ে, একটি টু-এক্সেল ট্রাকে ৩২ টন ও একটি ত্রি-এক্সেল ট্রাকে ৫৫ টন পর্যন্ত বহন করছে। এতে পাথর ব্যবসায়ীদের পরিবহন খরছ কমে যাচ্ছে এই জন্য তারা খনির পাথর না নিয়ে আমদানীকৃত পাথর কিনতে আগ্রহী হচ্ছে।
মধ্যপাড়া গ্রানাইড কোম্পানী লিঃ এর এই কর্মকর্তা আরও বলেন, সড়ক ও সেতু কতৃপক্ষ যদি ওভার লোড পরিবহন করা রোধ করতে পারে তাহলে খনিতে পাথর বিক্রি বৃদ্ধি পাবে। বাজারের তুলনায় মধ্যপাড়া খনির পাথর গুনে-মানে ভাল ও দামও কম।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, দেশে পাথরের চাহিদা অনেক, সেখানে দেশি পাথরের তুলুনায় আমদানীকৃত পাথর এর উপর চাপ বাড়ায়, পাথর আমদানী বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতেকরে বৈদাশিক মুদ্রার উপর চাপ বাড়ছে। অপরদিকে অতিরিক্ত পাথর পরিবহন করায় সড়কের ক্ষতি হচ্ছে এই জন্য তারা দেশি পাথরের বাজার ধরে রাখার জন্য অতিরিক্ত পাথর পরিবহন বন্ধ ও আমদানীকৃত পাথর ব্যবহারে নিরুৎসাহী করার তাগিদ দেন।
/পিবিডি/আরাফাত