• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

প্রধানমন্ত্রীর কাছে বুলবুলের ছেলের অনুরোধ

‘আব্বাকে বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করার অনুমতি দিন’

প্রকাশ:  ২২ জানুয়ারি ২০১৯, ১৩:১১ | আপডেট : ২২ জানুয়ারি ২০১৯, ১৬:২০
নিজস্ব প্রতিবেদক
ফাইল ছবি

বীর মুক্তিযোদ্ধা, প্রখ্যাত গীতিকার, সুরকার ও সংগীত পরিচালক আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল (৬৩) আর নেই। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মঙ্গলবার ২২ (জানুয়ারি) সকালে তিনি রাজধানীর আফতাবনগরে নিজ বাসায় মারা যান। সকাল সাতটায় আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের ছেলে সামির আহমেদ বলেন, আমার আব্বা আর নেই। তাকে আজই দাফন করতে চাই।

সামির বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি, আব্বাকে মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সংরক্ষিত স্থানে দাফন করার অনুমতি দিন।

তিনি জানান, আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল অনেক দিন থেকেই অসুস্থ। তিনি হৃদ্‌রোগে ভুগছিলেন। তাঁর হার্টের ধমনিতে আটটা ব্লক ছিল। গত বছর মে মাসে রিং পরানো হয়। ইদানীং তাঁর শরীরটা খুব ভালো যাচ্ছিল না। সমস্যা হচ্ছিল। গতকাল সোমবার চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু যেতে পারেননি। আজ ভোর চারটার দিকে তিনি তাঁর রেকর্ডিস্ট রোজনকে ফোন করে নিজেই অসুস্থতার কথা জানান। এরপর সবাই তাঁর কক্ষে ছুটে যান। অ্যাম্বুলেন্স খবর দেন। দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।

জনপ্রিয় এ শিল্পীর ব্যক্তিগত সহকারী রোজেন জানান, ভোর ৪টার দিকে আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল মুঠোফোন থেকে তাকে ফোন করেন। বলেন, তাড়াতাড়ি বাসায় আস, আমার হার্টঅ্যাটাক হয়েছে।

ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. আশীষ চক্রবর্তী বলেন, আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তাঁকে সকাল সোয়া ছয়টা নাগাদ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তখন চিকিৎসকেরা প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। আসলে তিনি বাসাতেই মারা গেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে মারা যান।

গত বছর ১৬ মে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল লিখেছেন, একটি ঘরে ছয় বছর গৃহবন্দী থাকতে থাকতে আমি আজ উল্লেখযোগ্যভাবে অসুস্থ। আমার হার্টে আটটা ব্লক ধরা পড়েছে। এরই মধ্যে কাউকে না জানিয়ে ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলাম। সেখানে সিসিইউতে চার দিন ছিলাম। আগামী ১০ দিনের মধ্যে হার্টের বাইপাস সার্জারি করানোর জন্য প্রস্তুত আছি।তিনি আরও লিখেছেন, কোনো সরকারি সাহায্য কিংবা শিল্পী, বন্ধুবান্ধবের সাহায্য আমার দরকার নাই। আমি একাই যথেষ্ট। শুধু অপারেশনের আগে ১০ সেকেন্ডের জন্য বুকের মাঝে বাংলাদেশের পতাকা আর কোরআন শরিফ রাখতে চাই। এর পর আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের চিকিৎসার দায়িত্ব নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সংগীতজগতে অবদানের জন্য আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল রাষ্ট্রীয় সম্মাননা একুশে পদক, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও রাষ্ট্রপতির পুরস্কারসহ অনেক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধে যখন অংশ নেন, তখন তাঁর বয়স মাত্র ১৫ বছর। সত্তরের দশকের শেষ দিকে ‘মেঘ বিজলি বাদল’ ছবিতে সংগীত পরিচালনার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেন আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। তিনি স্বাধীনভাবে গানের অ্যালবাম তৈরি করেছেন এবং অসংখ্য চলচ্চিত্রের সংগীত পরিচালনা করেছেন। তাঁর সুরে ও সংগীতে বাংলাদেশের প্রথিতযশা শিল্পীদের পাশাপাশি এ প্রজন্মের অনেকে গান গেয়েছেন।

পিবিডি/জিএম

বীর মুক্তিযোদ্ধা,আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল,সংগীত পরিচালক
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close