• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

কর্মস্থলে না থেকেও বেতন নিচ্ছেন ১১ চিকিৎসক

প্রকাশ:  ৩০ জানুয়ারি ২০১৯, ১৬:১৮ | আপডেট : ৩০ জানুয়ারি ২০১৯, ১৬:২১
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ইমারজেন্সি মেডিকেল অফিসার ডাঃ আরিফুর রহমান ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে তিনদিনের সিএল (নৈমিত্তিক) ছুটি নিয়ে নিরুদ্দেশ হয়েছেন। তিনি যে কোথায় আছেন, তা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কেউ বলতে পারছে না। তবুও তার চাকরিটি বহাল তবিয়তে আছে।

একই দশা ওই হাসপতালের সার্জারী বিভাগের। সার্জারী কনসালটেন্ট ডাঃ আফরোজা ইসলাম ২০১৮ সালের ১ অক্টোবর তিনদিনের সিএল ছুটি নিয়ে এর পর থেকে হাসপাতালে অনুপস্থিত। আর কর্মস্থলে না থেকে সপ্তাহে দুই/একদিন হাসপাতালে নামমাত্র উপস্থিত হয়ে বেতন ভাতা তুলছেন কমপক্ষে ১১ চিকিৎসক।

যোগদান করেই বদলি হয়ে যাওয়ায় উপজেলায় ৩৪টি পদের মধ্যে ১৪ জন ডাক্তারের পদ শূন্য রয়েছে, ৪জন ডাক্তার প্রেষণে অন্যত্র চাকরি করেছেন, দুইজন ডাক্তার দীর্ঘদিন ধরে অনুপস্থিত রয়েছেন। এভাবেই বছরের পর বছর অনিয়মের ষোলকলা পূর্ণ হয়ে বর্তমানে গফরগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

সরেজমিনে, মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অবস্থান করে ১৪ জন ডাক্তারের মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাসহ ৩ জন ডাক্তারকে পাওয়া যায়। পরে অন্য ডাক্তারগণ কর্মস্থলে এসেছেন কি না জানা যায়নি। ডাক্তারদের জন্য নির্ধারিত কামরাগুলো অধিকাংশই তালাবদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। কয়েকটি কামরা খোলা থাকলেও কামরাগুলোতে কর্মরত ডাক্তার পাওয়া যায়নি। দেখা যায় উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলের শত শত রোগী হাসপাতালে ডাক্তার না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইর্মাজেন্সি মেডিকেল অফিসার ডাঃ ফ্লোরা আফরোজ, ডাঃ তপন কুমার দাশ, ডাঃ আমেন খাতুন মিতা, ডাঃ নুসরাত জাহান, ডাঃ নিয়ামুল হাছান, অর্থোপেডিক এর কনসালটেন্ট ডাঃ মিজানুর রহমানসহ ১১ জন ডাক্তারই কর্মস্তলে অবস্থান না করে রাজধানী ঢাকায় অবস্থান করে ট্রেনে কর্মস্থলে আসা-যাওয়া করেন। হাসপাতাল সংশিষ্ট লোকজন জানায়, রাজধানী ঢাকায় অবস্থানকারী ডাক্তার সপ্তাহে ছয়দিনের পরিবর্তে দুইদিন হাসপাতালে উপস্থিত থাকেন। অনেকের বিরুদ্ধে সপ্তাহে ১ দিন কর্মস্থলে আসারও অভিযোগ রয়েছে। মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে ডাঃ তপন কুমার দাম জানায় তিনি শনিবারে আসবেন। অর্থোপেডিক এর কনসালটেন্ট ডাঃ মিজানুর রহমান সপ্তাহে দুইদিন রোববার ও বুধবার এই হাসপাতালে রোগী দেখে থাকেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রতিদিন অসংখ্য রোগীর ভিড় থাকলেও ডাক্তারদের দিনের পর দিন কর্মস্থলে অনুপস্থিতির কারণে গ্রামাঞ্চলের সাধারণ মানুষ স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

এ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা উপজেলার মুখী গ্রামের হেলাল উদ্দিন জানান (৫৩), ডাক্তার না থাকায় এই হাসপাতাল থেকে প্রায় দিনই চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যেতে হয়।

এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আলম আরা বেগম বলেন, অনুপস্থিতির কারণে এই হাসপাতালের বেশ কয়েকজন ডাক্তারকে শোকজ করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।

/পিবিডি/পি.এস

ময়মনসিংহ,ডাক্তার,কর্মস্থল,বেতন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close