‘শপথ নিলে তাদের ধরে টুকরো টুকরো করতে পারে জনগণ’
সুলতান মোহাম্মাদ মনসুরের সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেওয়া প্রসঙ্গে বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, আজকে যারা শপথ নিতে চাচ্ছেন, জনগণের বিপক্ষে গেলে তাদের রাস্তায় ধরে টুকরো টুকরো করে ফেলতে পারে।
তিনি বলেন, তাঁকে নিয়ে খুব আলোচনা হচ্ছে। এখানে তাঁর শপথ নেওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। তিনি ভাবতে পারেন যে শপথ নিতে পারেন। কিন্তু জনগণ ভাবতে পারেন না তারা নির্বাচিত ও শপথ নিতে পারেন। জনগণ ৩০ ডিসেম্বর ভোট দিতে পারে নাই, ওই দিন কোনো ভোট হয় নাই। সেজন্য সেই নির্বাচনে কোনো প্রার্থী নির্বাচিত হয় নাই। তাই তাদের শপথ নেওয়ার কোনো কথা আসে না।
সম্পর্কিত খবর
শনিবার (২ ফেব্রুয়ারি) মতিঝিলে বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দলের বর্ধিত সভা শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, কয়েক দিন যাবত খুবই আলোচনা হচ্ছে গণফোরামের দুই প্রার্থী- সত্যিকার অর্থে গণফোরামের দুই প্রার্থী নয়, এক প্রার্থী। তার নাম মোকাব্বীর। আরেকজন সুলতান মুহাম্মদ মনসুর-মুক্তিযুদ্ধে কোথায় ছিল জানি না। কিন্তু বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদের সময় সে আমার সহকর্মী ছিল, আমি তাকে অত্যন্ত স্নেহ করি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিপি ছিল। তাকে নিয়ে খুব আলোচনা হচ্ছে, শপথ নেওয়া না নেওয়ার ব্যাপারে।
তিনি বলেন, এই দেশে বুনিয়াদী গণতন্ত্রের নামে আইয়ুব খান একটা ভোটের পদ্ধতি আবিষ্কার করেছিলেন। সেইখানে দেশের জনগণ ভোট দিয়ে মেম্বর তৈরি করতেন। সেই মেম্বররা দেশের যত নির্বাচন হতো সেই নির্বাচনে প্রতিনিধি নির্বাচন করতেন।এতে দেশের মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে নির্বাচিত দু’চারজনকে ধরে ইট দিয়ে মাথায় আঘাতের পর আঘাত করে মেরে নদীতে ফেলে দিয়েছে। এটা হলো গণবিক্ষোভ।
তিনি আরও বলেন, আমরা বুঝি না যে, বিএনপির সংসদ সদস্যরা সংসদে যাবেন কী যাবেন না, তা নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের এত মাথা ব্যথা কেন। আমরা বুঝি না, প্রধানমন্ত্রীর কেন মাথা ব্যথা হবে বিএনপি যদি সংসদে না যায় নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে,তা নিয়ে। এ কথা তিনি কেন বলবেন? এ কথাটা তো নির্বাচনের আগেই মনে রাখা উচিত ছিল।
সরকারকে আদার সাইড দেখার আহ্বান জানিয়ে বঙ্গবীর বলেন, অনতিবিলম্বে এই নির্বাচন বাতিল করে নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনুন।
তিনি বলেন, এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ আর কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না। কথা ছিল পরাজিত প্রার্থীরা নির্বাচন ট্রাইব্যুনালে যাবে। কিন্তু কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ এই ট্রাইব্যুনালে যাওয়ার পক্ষে নয়। কারণ, সরকার, নির্বাচন কমিশন, আইন-আদালত আজ্ঞাবহ হিসেবে তাদের পরিচয় দিয়েছে। তাই ট্রাইব্যুনালও হয়তো তাদের সিদ্ধান্ত দেওয়ার জন্য বসে আছে যে, মামলা যথাযথভাবে উপস্থাপন হয়নি।
কাদের সিদ্দিকী বলেন, ভবিষ্যৎতে এমন কোনো দিন আর আসবে না, যে জনগণের সত্যিকার ভোটে আওয়ামী লীগ কখনো জয়ী হতে পারবে। এ রকম দিন আর আওয়ামী লীগ কখনই খুঁজে পাবে না। হতে পারে ডাকাতি, জোরজুলুম করে তারা নির্বাচন করতে পারে। কিন্তু মানুষের ভোটে কোনোদিন নির্বাচন করতে পারবে না। আমি সরকারকে বলব অনতিবিলম্বে এই নির্বাচন বাতিল করে নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনুন।
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অধীনে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ আর কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। দলীয় সরকারের অধীনেও কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না।
পিবিডি/জিএম