বাংলাদেশ অবৈধ অভিবাসনে বিশ্বাস করে না: পররাষ্ট্র সচিব
বাংলাদেশ অবৈধ অভিবাসনে বিশ্বাস করে না মন্তব্য করে পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক বলেছেন,বাংলাদেশে বিশ্বের একাধিক দেশের অভিবাসী রয়েছে।আবার বিশ্বের একাধিক দেশেও বাংলাদেশের অভিবাসীরা রয়েছে। তবে অভিবাসন নিয়ে বাংলাদেশের নীতি পরিষ্কার।
শনিবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ-ইউরোপীয় ইউনিয়ন সম্পর্ক: ভবিষ্যতের সম্ভাবন’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে কসমস ফাউন্ডেশন। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এনায়েতুল্লাহ খান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকায় নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত রেন্সজে তেরিঙ্ক।
সম্পর্কিত খবর
ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুরের ইনস্টিটিউট অব সাউথ এশিয়ান স্টাডিজের (আইএসএএস) প্রিন্সিপাল রিসার্চ ফেলো ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত একাধিক দেশের রাষ্ট্রদূত, সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তারা।
শহীদুল হক বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের একটি অনুকরণীয় রাষ্ট্রে পরিণত হতে যাচ্ছে। অভিবাসন প্রশ্নের বাংলাদেশের নীতি পরিষ্কার। বাংলাদেশ কখনোই অবৈধ অভিবাসনে বিশ্বাস করে না। যে কারণে ইউরোপের একাধিক দেশে অবস্থান করা প্রায় ১ লাখ অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীকে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া অনেক আগেই শুরু হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনেক আগেই অভিবাসন প্রশ্নে বাংলাদেশের নীতি পরিষ্কার করেছেন। টেকসই উন্নয়ন কখনোই অবৈধ অভিবাসনকে সমর্থন করে না। তাই বিশ্বের একাধিক দেশে থাকা অবৈধ অভিবাসীদের দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনেক আগেই নির্দেশ দিয়েছেন।
শহিদুল হক বলেন, রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর সারাবিশ্ব যে চাপে ফেলেছিল, বাংলাদেশ সেই চাপ মোকাবেলা করে পোশাক খাতে শ্রমিকবান্ধব ও নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। পোশাক কর্মীদের অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। বাংলাদেশ এলডিসি (স্বল্পোন্নত দেশ) থেকে অচিরেই উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে প্রবেশ করবে। আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন (এসডিজি) নিশ্চিত করতে পোশাক খাতে ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশের জিএসপি প্লাস সুবিধা প্রয়োজন।
বাংলাদেশ-ইইউ সম্পর্ক নিয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, আমাদের মধ্যে খুবই চমৎকার সম্পর্ক বিরাজ করছে। ২০০১ সালে আমাদের মধ্যে সহযোগিতামূলক সর্ম্পক নিয়ে চুক্তি হওয়ার পর আর পেছনে তাকাতে হয়নি। ২০০৬ সালে আমাদের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা নিয়ে চুক্তি হয়েছে।
ঢাকায় নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত রেন্সজে তেরিঙ্ক বলেন,জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাংলাদেশের প্রতি ইইউ’র সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। ইউরোপে শুধুমাত্র বৈধভাবেই অভিবাসীরা থাকতে পারবে। ইউরোপের অভিবাসী হতে হলে যেসব নিয়ম-নীতি রয়েছে তা মেনেই থাকতে হবে।
তিনি বলেন, অভিবাসী হওয়ার আগ্রহ নিয়ে বাংলাদেশ থেকে অনেকেই ইউরোপে পাড়ি জমিয়ে থাকেন। ইউরোপের যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও ইতালিতে যাওয়ার ঝোঁকই বেশি। অনেকেই অবৈধ চ্যানেল, চোরাকারবারী বা মাদক পাচারকারীদের সহায়তায়ও ইউরোপে প্রবেশ করে থাকেন। তবে শুধুমাত্র অভিবাসী শর্তপূরণ হলেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে থাকা সম্ভব। অন্য কোনোভাবে নয়। এছাড়া অবৈধ অভিবাসীদের ফিরিয়ে আনা একটি জটিল প্রক্রিয়া বলেও অভিমত প্রকাশ করেন তিনি।
পিবিডি/জিএম