• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

মিতুর পাসপোর্ট-গ্রিনকার্ড কে নিয়েছে?

প্রকাশ:  ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ২০:৩৫ | আপডেট : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ২০:৪৩
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

আত্মহত্যার পথ বেছে নেওয়া চট্টগ্রামের চিকিৎসক মোস্তফা মোরশেদ আকাশের স্ত্রী তানজিলা হক চৌধুরী মিতুর পাসপোর্ট ও আমেরিকান সিটিজেনশিপের গ্রিনকার্ড খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

আদালতের আদেশে জেলহাজতে যাওয়ার আগে মিতু পুলিশকে জানান, পাসপোর্ট-গ্রিনকার্ড এসব তার শ্বশুরবাড়িতে আছে। অতিজরুরী ওইসব কাগজপত্র উদ্ধার করে তিনি পুলিশের হেফাজতে রাখার জন্য অনুরোধও জানান। চান্দগাঁও থানা পুলিশের পক্ষ থেকে ডা. আকাশের বাড়ি অর্থাৎ মিতুর শ্বশুরবাড়িতে যোগযোগ করা হলে ওই বাড়ির লোকজন বিস্ময় প্রকাশ করেন। মিতুর পাসপোর্ট-গ্রিনকার্ড কে নিয়েছে কিংবা কার কাছে আছে, ডা. আকাশের পরিবারের লোকজন কেউ কিছু জানেন না বলে পুলিশকে জানিয়ে দেন।

সম্পর্কিত খবর

    ডা. আকাশের আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বুধবার মিতুকে তিন দিনের রিমান্ডে থেকে চান্দগাঁও থানায় আনা হবে। এর আগে মিতু সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যে তদন্ত কর্মকর্তা চান্দগাঁও থানার এসআই আবদুল কাদের ডা. আকাশের বাসায় যান। এসময় বাড়ির লোকজনের কাছে তিনি তানজিলা হক মিতুর পাসপোর্ট এবং গ্রিনকার্ড চাইলে তারা এরকম কিছু খুঁজে পাননি বলে জানান।

    তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আবদুল কাদের বলেন, ডা. আকাশের ছোট ভাই নেওয়াজ মোরশেদ মিতুর পাসপোর্ট এবং গ্রিনকার্ডের সম্পর্কে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেছেন, আকাশ মৃত্যুর আগে আমাদেরকে এসব বিষয়ে কিছুই বলে যাননি। এরকম কোনো কিছু তারা খুঁজেও পাননি।

    মিতু আমেরিকা থেকে দেশে আসেন ১৪ জানুয়ারি। এরপর বাবা ও স্বামীর বাড়িতে আসা-যাওয়ার মধ্যে ছিলেন তিনি। সর্বশেষ ৩০ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টায় মিতু আকাশের বাসায় যান। ওই দিন রাতে মিতুর পরকীয়া সম্পর্ক নিয়ে আকাশের সঙ্গে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে মিতু তার বাবাকে ফোন করে ডেকে এনে ভোর ৪টার দিকে বাবার বাসায় চলে যান। মিতুর অভিযোগ, ওই দিন রাতে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে মিতুর পাসপোর্ট ও আমেরিকায় বসবাস করার সিটিজেনশিপ ‘গ্রিনকার্ড’ কেড়ে নেয় স্বামী ডা. আকাশ। বর্তমানে ওইসব শ্বশুরবাড়ির লোকজনের কাছে আছে বলেও মিতুর দাবি।

    আত্মহত্যাকারী চিকিৎসক আকাশের মা জমিরা খানম বাদী হয়ে শুক্রবার বিকালে মিতুসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে চান্দগাঁও থানায় মামলা করেছেন। মামলায় তানজিলা হক চৌধুরী মিতু, তার বাবা আনিসুল হক চৌধুরী, মা শামীম শেলী, বোন সানজিলা হক চৌধুরী, বন্ধু মাহবুবুল হক ও যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ভারতীয় নাগরিক প্যাটেলকে আসামি করা হয়েছে।

    প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার ভোরে নগরীর চান্দগাঁও থানা এলাকায় নিজবাসায় আত্মহত্যা করেন চিকিৎসক আকাশ। এর আগে ফেসবুকে দুটি স্ট্যাটাসে তিনি তার মৃত্যুর জন্য স্ত্রী মিতুকে দায়ী করেন এবং স্ববিস্তারে ঘটনার আবেকঘন বর্ণনা দিয়ে যান। এসময় মিতুর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক স্বীকার করা দেওয়া একটি বক্তব্য সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। দেশজুড়ে মিতুর বিরুদ্ধে ধিক্কার ওঠার একপর্যায়ে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে ডা. আকাশকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেয়ার অভিযোগে আকাশের স্ত্রী তানজিলা হক চৌধুরী মিতু, তার মা শামীম শেলী, পিতা আনিসুল হক চৌধুরী, বোন সানজিলা হক চৌধুরী আলিশা এবং মিতুর দুই বয়ফ্রেন্ড আমেরিকান প্রবাসী প্যাটেল ও ডা. মাহবুবুল আলমসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৩-৪ জনকে আসামি করে মা জোবেদা খানম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। এ মামললা মিতুকে জিজ্ঞাসাবাদে বুধবার কারাগার থেকে থানায় আনা হবে।

    পিবিডি/ এনই

    তানজিলা হক চৌধুরী মিতু
    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close