রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ বন্ধে সর্বোচ্চ সতর্ক সীমান্ত
রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ বন্ধে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ এবং বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বর্ডার র্গাড বাংলাদেশ (বিজিবি)। মিয়ানমারে নতুন করে সহিংসতা শুরু হওয়ায় বৌদ্ধ ও হিন্দুসহ বিভিন্ন জাতি ও ধর্মীয় গোষ্ঠীর সদস্যরা নিরাপত্তার জন্য বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করছে। এজন্য এই বাড়তি সর্তকতা নেওয়া হয়েছে ।
বিজিবি সূত্র জানায়, গত ৪ জানুয়ারি মিয়ানমারের স্বাধীনতা দিবসে রাখাইনে বৌদ্ধ বিদ্রোহীরা চারটি পুলিশ পোস্টে হামলা চালায়। এ হামলায় দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর ৭ সদস্য নিহত হন। এর পর সেখানে নতুন করে সহিংসতা শুরু হয়।
সম্পর্কিত খবর
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে মিয়ানমার থেকে কয়েকটি রাখাইন পরিবার বান্দরবনের রুমা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে চইখ্যং বমপাড়ায় প্রবেশ করে। অনুপ্রবেশকারী ৩৫ পরিবারের ১৬০ জনের একটি তালিকাও করা হয়েছে। এখন গ্রামবাসী চাঁদা তুলে তাদের খাবার জোগান দিচ্ছে।’
এ ব্যাপারে কক্সবাজার–৩৪ বিজিবির ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর ইকবাল আহমেদ বলেন, ‘মিয়ানমারে নতুন করে কিছু সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। এর জেরে দেশটির কোনও লোকজন যাতে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করতে না পারে, সে জন্য সরকারের উচ্চপর্যায়ের নতুন নিদের্শনা পেয়েছি; নাইক্ষ্যংছড়ি ও উখিয়া সীমান্তে কঠোর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।’
একই কথা জানিয়েছেন টেকনাফ–২ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ আছাদুদ জামান চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘নতুন করে মিয়ানমার থেকে যাতে কোনও লোকজন টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ করতে না পারে, সেজন্য বিজিবি সর্তক অবস্থানে রয়েছে।’
এ ব্যাপারে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ আবুল কালাম বলেন, মিয়ানমারের নতুন কোনও নাগরিক যাতে ঢুকতে না পারে, সেজন্য সীমান্তে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বিজিবি।’ তিনি আরও জানান, গত ডিসেম্বর মাসের শুরুর দিকে ভারত থেকে প্রায় একহাজার চারশ’ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে; যারা এখন উখিয়া রোহিঙ্গা শিবিরে রয়েছে।
এদিকে, বুধবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিকালে বাংলাদেশ সফররত জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) বিশেষ দূত অ্যাঞ্জেলিনা জোলি ও জাতিসংঘ মহাসচিবের মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত ক্রিস্টিন এস বার্গনারের সঙ্গে বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের জানান, মিয়ানমার থেকে যাতে আর কেউ অনুপ্রবেশ না করতে পারে, সেজন্য বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারে সামরিক বাহিনী মুসলমান রোহিঙ্গা অধ্যুষিত রাখাইন রাজ্যে নির্বিচারে গণহত্যা ও নির্যাতন চালানোর কারণে দেশটি থেকে কমপক্ষে সাত লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে। এর আগেও বিভিন্ন সময়ে দেশটি থেকে আরও চার লাখের বেশি রোহিঙ্গা এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।
পিবিডি/জিএম