ডাকসুর তফসিল: ছাত্র সংগঠনগুলো যা ভাবছে
দীর্ঘ ২৮ বছর পর চলতি বছরের ১১ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের উদ্দ্যোগ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সোমবার (১১ ফেব্রুয়ারি) নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক ড. এস এম মাহফুজুর রহমান।
সম্পর্কিত খবর
ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর ছাত্র সংগঠনগুলো মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করেছে। ছাত্রলীগ তফসিলকে স্বাগত জানালেও ছাত্রদল, ছাত্র ইউনিয়নসহ ক্যাম্পাসের অন্যান্য ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলো এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে। আর এই বিষয়ে ছাত্রনেতাদের সাথে কথা বলেছে পূর্বপশ্চিম।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণায় আমরা আনন্দিত। আমরা চাই সঠিক সময়ে নির্বাচন হোক। নির্বাচনের জন্যে ছাত্রলীগ প্রস্তুত। এসময় ছাত্রদলের নির্বাচন পেছানোর দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রত্যাখাত হওয়ার আশঙ্কায় ছাত্রদল নির্বাচন পেছানোর দাবি জানাচ্ছে। কেননা তারা অছাত্রদের নিয়ে রাজনীতি করেন। নির্বাচনে প্রার্থী দেওয়ার মত তাদের তেমন কেউ নেই। এখন যদি তারা নির্বাচন পেছানোর দাবি জানান, তাহলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতি অবিচার করা হবে।
ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রাজিব দাস বলেন, ছাত্রদের পক্ষ থেকে যেসকল দাবি উপস্থাপন করা হয়েছিলো, সেগুলো মেনে না নিয়ে প্রশাসন তফসিল ঘোষণা করেছে। প্রশাসনের উদ্যোগে আমরা খুব বেশি আশস্ত হতে পারিনি। সেই জায়গা থেকে আমরা আমাদের দাবির প্রেক্ষিতে আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাব। এর পাশাপাশি আমরা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। শেষ পর্যন্ত যদি প্রশাসন আমাদের দাবি-দাওয়া মেনে না নেয় এবং এই একপাক্ষিক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতেই থাকে তাহলে আমরা নির্বাচনে যাওয়ার বিষয়ে আবার ভাববো।
ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক বাশার সিদ্দিকী বলেন, এই তফসিলকে আমরা প্রত্যাখ্যান করছি। আমরা স্মারকলিপি দিয়ে, আলোচনা করে নির্বাচন পেছানোর কথা বলেছিলাম, কিন্তু আমাদের কোনো কথাই তো শুনলো না। আমরা বলেছি, আগে সহাবস্থানের পরিবেশ তৈরি করতে হবে। কিন্তু সেসব না করেই তফসিল দিয়ে দিল। এ থেকে সুস্পষ্টভাবে এটাই প্রমাণিত হয় যে, ছাত্রলীগকে নির্বাচনে জেতানোর জন্য সব আয়োজন প্রশাসন করে রাখছে।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সালমান সিদ্দিকী বলেন, সকল ছাত্র সংগঠনগুলোর যে দাবি ছিলো, প্রশাসন এখনো তা মেনে নেয়নি। এতগুলো সংগঠনের দাবি মেনে না নিয়ে যে তফসিল ঘোষণা করা হলো- এর মাধ্যমে নির্বাচন হলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। আমরা তড়িঘড়ি করে কোনো নির্বাচন চাই না। আমরা চাই নির্বাচনের সঠিক পরিবেশ নিশ্চিত করে তফসিল ঘোষণা করা হোক।
নির্বাচনী প্রচারণার যথেষ্ট সুযোগ রাখা হয়নি বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, নির্বাচনে প্রচারণার সময়সীমা খুবই কম। ক্যাম্পাসে প্রচারণার জন্য আমরা মাত্র চারদিন পাবো। শিক্ষার্থীদের কাছে পৌছানোর জন্য আমাদের মনে হয় যথেষ্ট সময় রাখা দরকার। এসময় তিনি প্রশাসনের কাছে প্রচারণার জন্যে কমপক্ষে ১৫ দিন সময় রাখার দাবি জানান।
উল্লেখ্য, ১৯৯৪ সালে যখন ডাকসু নির্বাচনের উদ্দ্যোগ নেওয়া হয়েছিল তখন তৎকালিন বিরোধী দল আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ ভোট কেন্দ্র হলের বাহিরে একাডেমিক ভবনে স্থাপনের দাবি জানিয়েছিল।
পিবিডি/টিএইচ/এআইএস