• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

ব্যারিস্টার রাজ্জাকের জামায়াত ত্যাগে যা বললেন বিএনপি নেতারা

প্রকাশ:  ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:৫২
নিজস্ব প্রতিবেদক

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী ভূমিকার জন্য দেশের মানুষের কাছে ‘ক্ষমা না চাওয়ায়’ জামায়াতে ইসলামী থেকে পদত্যাগ করেছেন দলের সিনিয়র নেতা ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক। বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের বড় শরিক জামায়াতে ইসলাম। বিতর্কিত এই দলটিকে জোটে রাখা নিয়ে বিএনপিকে নানা সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে শীর্ষ জামায়াত নেতাদের আইনজীবী দলের ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাকের দল থেকে পদত্যাগের বিষয়টি নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপি থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। তবে বিএনপি বেশ কয়েকজন নেতা ব্যরিস্টার রাজ্জাকের পদত্যাগ স্বাগত জানিয়েছেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অবসরপ্রাপ্ত লে. জেনারেল মাহবুবুর রহমান বলেছেন, আমি মনে করি রাজ্জাক সাহেব দল থেকে পদত্যাগ করে জামায়তকে একটা পথ দেখালেন। উদাহরণ সৃষ্টি করলেন। জামায়াতে যদি একাত্তরের কর্মকাণ্ডের জন্য নিজেদের ভুল স্বীকার না করে তাহলে দলটিতে বিবেকসম্পন্ন যারা আছেন তাদের রাজ্জাক সাহেবকে অনুসরণ করা উচিত। উনি তো জ্ঞানীগুণী শিক্ষিত মানুষ।

সম্পর্কিত খবর

    তিনি বলেন, জামায়াত একটি স্বাধীনতা বিরোধী দল। সেই দল থেকে ব্যারিস্টার রাজ্জাক পদত্যাগ করেছেন এটা তার শুভবুদ্ধির উদয় হয়েছে। যারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করেছে তারা জাতিকে ভালো কিছু দিতে পারবে না।

    বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, আমি সব সময়ই বলে এসেছি, জামায়াত মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী একটি দল। একাত্তরে তারা অনেক বিতর্কিত কর্মকাণ্ড করেছে। তারা যদি তাদের অতীত কর্মকাণ্ডের জন্য ভুল স্বীকার করে মাফ চায় তাহলে ঠিক আছে। ক্ষমা চাওয়া চেয়ে তো বড় কোনো কথা নেই। যদি তারা সেটা করেন নিশ্চয়ই জনগণ তাদের ক্ষমা করবে। আমরা তো এতো কৃপণ নই। নিশ্চয়ই জনগণ ক্ষমা করবে।

    বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ব্যারিস্টার রাজ্জাক সাহেবের পদত্যাগটা তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। জামায়াতের শীর্ষনেতার দণ্ডপ্রাপ্ত হয়োর পার তিনি দলটিকে সাংগঠনিকভাবে সক্রিয় রাখাতে গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। দেরিতে হলেও ব্যারিস্টার রাজ্জাক সাহেব নিজের ভুল বুঝতে পারায় তাকে ধন্যবাদ। এ বিষয়ে খুব বেশি কিছু বলার নেই।

    প্রসঙ্গত, জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির প্রথম সখ্যতা তৈরি হয় ১৯৯১ সালে সরকার গঠনের সময়। ১৭টি আসন পেয়ে বিএনপিকে সমর্থন করার পরই দলের হাইকমান্ড তাদেরকে আস্থায় নেয়। ১৯৯৬ সালে বিএনপির বিরুদ্ধে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জামায়াত যুগপৎ আন্দোলন গড়ে তোলে। ওই বছর সরকার গঠনের পর স্বাধীনতা বিরোধীদের ব্যাপারে আওয়ামী লীগ সরকারের অনমনীয় অবস্থানের কারণে ফের বিএনপির সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধে দলটি।

    ২০০১ সালের নির্বাচনে চারদলীয় জোট গঠন করে বিএনপি-জামায়াত বিজয়ী হয়। বিএনপির পৃষ্ঠপোষকতায় রাষ্ট্রক্ষমতায় শরিক হওয়ার সুযোগ পায় জামায়াতে ইসলামী। স্বাধীনতা বিরোধী এই দলটির দুই নেতাকে মন্ত্রী করা হয়। বহুবার বির্তকের মুখে পড়লেও জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির সেই সম্পর্ক এখনও বজায় আছে। বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শরিক এখন জামায়াত। দলীয় প্রতীক ও নিবন্ধন বাতিল হওয়ার পর একাদশ জাতীয় নির্বাচনে জামায়াতের ২৫ নেতা ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেয়। বিশ্লেষকরা মনে করেন, জামায়াতের সঙ্গে বিএনপি সম্পর্ক ত্যাগ করতে না পারায় নির্বাচনের আগে গঠিত সরকার বিরোধী প্লাটফর্ম জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সার্বজনীন ও সফল হয়ে ওঠতে পারেনি।

    পিবিডি-এনই/

    ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক,ব্যারিস্টার রাজ্জাক
    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close