যুক্তরাষ্ট্রে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করলেন ট্রাম্প
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। এর ফলে কংগ্রেসকে এড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ নিশ্চিত করতে পারবেন তিনি। তবে ওই ঘোষণার মধ্য দিয়ে তিনি আইনী চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে পারেন এবং নিশ্চিত ভাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা সীমিত করার বিষয়ে তা সাহায্য করতে পারে।
শুক্রবার হোয়াইট হাউজের রোজ গার্ডেনে ট্রাম্প টিভিতে সম্প্রচারিত এক ঘোষণায় বলেন, মেক্সিকো থেকে দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলের সীমান্ত দিয়ে মাদক, অপরাধী এবং অবৈধ অভিবাসীর ঢল ঠেকিয়ে দেশকে সুরক্ষিত রাখতেই তিনি জরুরি অবস্থার আদেশে সই করছেন।
সম্পর্কিত খবর
মার্কিন প্রেসিডেন্ট মনে করেন, মেক্সিকো সীমান্তে যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ নেই। তিনি বলেন, মাদক, মানব ব্যবসায়ী সব কিছুই আমাদের সীমানা দিয়ে অবাধে প্রবেশ করছে। সব ধরণের অপরাধী চক্র প্রবেশ করছে। আমরা আমাদের নিজের সীমানা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছি না। এটা খুব বড় সমস্যা।
তিনি বলেন, জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা নতুন কিছু নয়। এর আগেও বহুবার এরকম জরুরি অবস্থায় স্বাক্ষর করা হয়েছে। ১৯৭৭ সাল থেকে অন্য প্রেসিডেন্টরাও এটিতে স্বাক্ষর করেছেন। এভাবেই তারা ক্ষমতা পেয়েছেন।
ট্রাম্পের দাবি, মেক্সিকো সীমান্তের বর্তমান অবস্থাই ‘জরুরি অবস্থা’ জারির পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। গত নভেম্বরে প্রতিদিন দুই হাজারের বেশি অভিবাসনপ্রত্যাশীকে ওই সীমান্ত থেকে হয় ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে, নয়তো গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ট্রাম্প সমর্থকরা একে ‘চরম সংকটপূর্ণ অবস্থা’ অ্যাখ্যা দিলেও তাদের সঙ্গে একমত নন ট্রাম্পবিরোধীরা।
প্রেসিডেন্ট তার ভাষণে তার প্রশাসনের সাফল্য, বৈদেশিক সম্পর্ক জাতীয় নিরাপত্তা এবং দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সীমান্তে মানবিক সংকট মোকাবেলা সংক্রান্ত বক্তব্য রাখেন। আগে সীমান্ত দেওয়াল নির্মাণের জন্য ৫৭০ কোটি ডলার দাবি করলেও এর জন্য এখন ৮০০ কোটি ডলার প্রয়োজন পড়বে বলেও জানান তিনি।
ট্রাম্পের এই জরুরি অবস্থা ঘোষণার সিদ্ধান্তের বিষয়টি প্রথম জানিয়েছিলেন হোয়াইট হাউজ মুখপাত্র সারা স্যান্ডার্স। এর কঠোর সমালোচনা করেছেন রিপাবলিকান ডেমোক্র্যাট নির্বিশেষে সকল রাজনীতিবীদ।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের জরুরি অবস্থা ঘোষাণার বিরোধিতা করে ডেমোক্র্যাটরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রে জরুরি অবস্থা জারি করা হলে তারা ট্রাম্পের ক্ষমতার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন। কারণ, ট্রাম্প যা করতে যাচ্ছেন তা আইন সম্মত নয়।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান অনুযায়ী জরুরি অবস্থা জারির ফলে প্রেসিডেন্টের হাতে কিছু বিষয়ে একক ক্ষমতা চলে আসে, যা ব্যবহার করে ট্রাম্প কংগ্রেসকে পাশ কাটিয়ে যে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। ওই ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে তিনি সামরিক কিংবা দুর্যোগ খাতের অর্থ দেয়াল নির্মাণে বরাদ্দ দিতে পারবেন।