• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

দিনভর রণক্ষেত্র জবি ক্যাম্পাস, সাংবাদিকসহ আহত ৪০

প্রকাশ:  ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০২:১৪
জবি প্রতিনিধি

দিনভর ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের দফায় দফায় সংঘর্ষ, গোলাগুলি, ককটেল বিষ্ফোরণের ঘটনায় রণক্ষেত্রে পরিণত হয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। এঘটনায় সাংবাদিক, সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগকর্মীসহ আহত হয়েছে অন্তত ৪০ জন।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সোমবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২ টা থেকে নতুন কমিটি প্রত্যাশীদের সাথে কয়েক দফা ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার পর দুপুর সাড়ে ৩ টার দিকে স্থগিত কমিটির সভাপতি-সম্পাদক তরিকুল-রাসেল গ্রুপ মখোমুখি সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে নতুন কমিটি প্রত্যাশী কর্মীরা বাহাদুর শাহ পার্কের দিকে এবং তরিকুল-রাসেলের কর্মীরা মূল ফটকের কাছে অবস্থান নেয়। তরিকুল-রাসেলের কর্মীরা এসময় এলো পাথাড়ি কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়ে এবং কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়।

তরিকুলের ওরফে দাদা গ্রুপের ৭ম ব্যাচের তরিকুল রিমন, ৯ম ব্যাচের লিখন,৭ম ব্যাচের মাসুম বিল্লাহ, তৌসিফ মাহবুব সোহান. এস কে মিরাজ, ১৩ ব্যাচের শাহরিয়ার শাকিল, ফাহিম, মনোবিজ্ঞানের আবিদ আল হাসান, সমাজকর্ম ১২ তম ব্যাচের কিবরিয়া, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ১৩ তম ব্যাচের ডেবিট, সাংবাদিকতা বিভাগের ১৪ তম ব্যাচের মুসা,১১তম ব্যাচের মফিজুর রহমান হামিম, শাহরুখ শোভন, মিনুন মাহফুজসহ প্রায় ৫০ জন হাতে রামদা, চাপাতি, চাইনিজ কুড়াল, হাতুরী, পিস্তল, শটগান নিয়ে হামলায় নেতৃত্ব দেয়।

অপরদিকে, সাধারণ সম্পাদক জয়নুল আবেদীন রাসেলের কর্মীদের মধ্যে ৫ম ব্যাচের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক নাজমুল, ৯ম ব্যাচের শাকিল, ফারুক, ৮ম ব্যাচের আলী হাসান, ৭ম ব্যাচের নাদিম, ৯ম ব্যাচের মারুফ, কামরুল, ১০ ব্যাচের তানভীর, হাতে চাপাতি, কুড়াল, হকিস্টিক, হাতুরী, শট গান ও পিস্তল নিয়ে হামলার নেতৃত্ব দেন।

এ সময় এতে তথ্য সংগ্রহ করতে তরিকুল ওরফে দাদা গ্রুপের কর্মীরা রামদা দিয়ে দৈনিক সংবাদের সাংবাদিক রাকিবুল ইসলামেরর মাথায় আঘাত করে এছাড়াও মাথায় আঘাতের শিকার হন দৈনিক সমকালের লতিফুল ইসলাম, বিডি ২৪ রিপোর্ট ডটকমের সানাউল্লাহ ফাহাদ, জয়নুল আবেদীনসহ ৭ জন সাংবাদিক।

হামলায় আরো আহত হন সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল আফসার, ওনি, সাবেক সহ সম্পাদক টুটুল, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক কাউসার, সাদেক, এমরান, হাসান মোট ৩০ জন।

হামলা চলাকালে তারা বেশ কয়েকটি ককটেল ও আগ্নেয়াস্ত্রের এলোপাথাড়ি বিস্ফোরণ ঘটান।সে মূহুর্তে ক্যাম্পাসের আশেপাশে বিভিন্ন স্থানে উভয় গ্রুপের শতাধিক নেতা কর্মী ভাগ ভাগ হয়ে অবস্থান নেয়। ফলে আশেপাশের এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করে। ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এসময় কার্যত নিষ্ক্রিয় থাকতে দেখা যায় প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অানতে কোনো পদক্ষেপই চোখে পড়েনি তাদের

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জবি ছাত্রলীগের স্থগিত কমিটির সাধারন সম্পাদক শেখ জয়নুল আবেদীন রাসেল বলেন, ক্যাম্পাসে কি হচ্ছে তা আমরা জানিনা। এটা জানার কথা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। কারা কি করছে সেটার দায় আমাদের উপর এখন বর্তায় না।

বিয়টি নিয়ে জবি প্রক্টর নূর মোহাম্মদ কে একাধিক বার ফোন দেওয়া হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

এ প্রসঙ্গে সহকারী প্রক্টর মহিউদ্দিন মাহী বলেন, কয়েকদিন ধরেই সংঘর্ষ হয়েই যাচ্ছে। বিষয়টা সমাধান হওয়া দরকার। আজকের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে। তদন্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি রেজয়ানুল হক শোভন বলেন, সাংবাদিকদের উপর আঘাত অত্যন্ত দুঃখজনক। তাদেরকে ( জবি ছাত্রলীগ) একবার স্থগিত করে সংশোধনের সুযোগ দিয়েছি। এ ব্যাপারে তদন্ত করে কঠিন থেকে কঠিনতর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পিবিডি/জিএম

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়,ছাত্রলীগের দুই গ্রুপ,দফায় দফায় সংঘর্ষ
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close