সন্ত্রাসী হামলা থেকে ক্রিকেটাররা বেঁচে যাওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর শুকরিয়া
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় হতাহতদের প্রতি গভীর শোক ও সমবেদনার পাশাপাশি এ ঘটনায় বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা বেঁচে যাওয়ায় আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানিয়েছেন। একই সঙ্গে এ ঘটনাকে ‘ঘৃণ্য সন্ত্রাসী, জঙ্গিবাদী’ হিসেবে মন্তব্য করে তিনি।
শনিবার (১৬ মার্চ) সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দ্বিতীয় কাঁচপুর সেতু, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভুলতায় চারলেন ফ্লাইওভার এবং লতিফপুর রেলওয়ে ওভারপাস উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
সম্পর্কিত খবর
শেখ হাসিনা বলেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে শুকরিয়া পালন করি সেখানে আমাদের ক্রিকেটাররা নামাজ পড়তে গিয়েছিল। সেখানে একজন আহত মহিলা তাদের মসজিদে যেতে মানা করেছিল। তাদের (ক্রিকেটার) জীবন বেঁচে যায়।
আগামীতে নিরাপত্তার বিষয়টি ভালোভাবে যাচাই করে ক্রিকেট টিম পাঠানো হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামীতে যেখানে আমাদের ক্রিকেট টিম পাঠাবো, নিরাপত্তার বিষয়টি আমরা ভালোভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেই পাঠাবো। কারণ আমাদের দেশে যারাই খেলতে আসে তাদের আমরা সবসময় যথাযথভাবে নিরাপত্তা দিয়ে থাকি। এটা আমরা সবসময় করি।
সন্ত্রাসী ও জঙ্গিবাদী ঘটনার শুধু নিন্দা না করে এ ধরনের ঘটনা বন্ধে ব্যবস্থা নিতে বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আশা করি বিশ্ববাসী এই ধরনের ঘটনার শুধু নিন্দাই করবে না, এই ধরনের সন্ত্রাসী, জঙ্গিবাদী ঘটনা যেন বন্ধ হয় সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন।
নিউজিল্যান্ডে মসজিদে প্রার্থনারত মুসল্লিদের ওপর হামলার ঘটনাকে ঘৃণ্য সন্ত্রাসী, জঙ্গিবাদী ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঘৃণ্য ঘটনা, এটা সন্ত্রাসী, জঙ্গিবাদী ঘটনা। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। যেভাবে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে ঢুকে যখন মানুষ সেখানে নামাজ আদায়রত অবস্থায়, তাদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এর চেয়ে জঘন্য কাজ, ঘৃণ্য কাজ হতে পারে না।
সরকারপ্রধান বলেন, যারা জঙ্গি, যারা সন্ত্রাসী তাদের কোনো ধর্ম নেই, তাদের কোনো দেশ নেই, জাতিও নেই। তারা সন্ত্রাসী। এদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
বাংলাদেশকে জঙ্গিমুক্ত করার কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, অনেক কষ্ট করে আমরা আমাদের দেশকে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস থেকে রক্ষা করতে পেরেছি। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস মানুষের কোনো মঙ্গল করতে পারে না, অমঙ্গল ছাড়া।
বাংলাদেশে ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সম্প্রীতির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ধর্মীয় স্বাধীনতা, এটা সব মানুষের স্বাধীনতা। আমাদের দেশে আমরা তা রক্ষা করতে পেরেছি- যে যার যার ধর্ম সে স্বাধীনভাবে পালন করবে। সেই সুযোগটা আমরা করে দিয়েছি।
নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিউজল্যান্ডে মসজিদের ভেতরে ঢুকে ৪৯ জনকে হত্যা করা হয়েছে, অনেকে আহত। সেখানে আমাদের ৩ জন বাংলাদেশি মারা গেছেন। তাদের প্রতি শোক জানাচ্ছি।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার (১৫ মার্চ) নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে এক অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে ৪৯ জন ইসলাম ধর্মালম্বী নারী-পুরুষ ও শিশুকে হত্যা করে। নিহতদের মধ্যে অন্তত তিন জন বাংলাদেশি বলে জানা গেছে। হামলায় ক্রাইস্টচার্চের আল নূর মসজিদে ৪১ জন এবং লিনউডের আরেকটি মসজিদে ৮ জন নিহত হন। এই উগ্রপন্থী সন্ত্রাসী হামলার সময় আল নূর মসজিদে নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সদস্যরা। মসজিদে ঢোকার কিছুক্ষণ আগে ওই হামলার ঘটনাটি ঘটে। ফলে অল্পের জন্য জীবন রক্ষা পান বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা।
পিবিডি/জিএম