নিরাপদ সড়কের দাবিতে ফের রাজপথে আন্দোলনের ডাক শিক্ষার্থীদের
বেপরোয়া বাসের ধাক্কায় রাজধানীর নর্দা এলাকার যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে বিইউপি শিক্ষার্থী আবরার আহমেদ চৌধুরীর নিহতের ঘটনায় আবারও নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলোনের ডাক দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এরই অংশ হিসেবে আট দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বুধবার (২০ মার্চ) সারাদেশে ক্লাস বর্জন ও সড়ক অবরোধের আহ্বান জানিয়েছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তারা সড়ক অবরোধ শেষে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে এই ঘোষণা দেন বিইউপির শিক্ষার্থী মাঈশা নূর।
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) বিকাল সাড়ে ৫ টায় সাংবাদিকদের সামনে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বুধবারের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
মায়েশা নূর বলেন, আজ (মঙ্গলবার) সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত আমাদের সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছি। বুধবার থেকে আমাদের আন্দোলন চলবে। বুধবার সকাল ৮ টা থেকে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের ক্লাস বর্জন করার আহ্বান জানাচ্ছি। আপনারা আপনাদের নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্লাস বর্জন করে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে অবস্থান নেবেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের এই আন্দোলন গতবছরের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের ধারাবাহিকতা। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে। আমাদের এই আন্দোলনে গতবছরের মতো কোনও হামলা ও রক্তাক্ত চেহারা দেখতে চাই না। আমরা পুলিশ বাহিনীর কাছ থেকে নিরাপত্তা চাই। আমাদের আন্দোলনের সময় আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।’
সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে মায়েশা নূর বলেন, আমরা ইতোমধ্যে আটদফা দাবি দিয়েছি। এটা গণমাধ্যমে চলে এসেছে। আমাদের এই আন্দোলন কোনও রাজনৈতিক আন্দোলন না। আমাদের এই আন্দোলনে রাজনৈতিক কোনও দল বা ব্যক্তিকে গ্রহণ করবো না। সবাই নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচয়পত্র নিয়ে আন্দোলনে যোগ দেবেন। আমরা আমাদের অভিভাবকদের এই আন্দোলনে অংশ নেওয়ার জন্য আবেদন করছি।
আট দফা দাবির মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, চালকের সর্বোচ্চ শাস্তি–এ কথা উল্লেখ করে মায়েশা নূর বলেন, আমরা সর্বোচ্চ শাস্তি বলতে বাসচালকের ফাঁসি চেয়েছি। গতবার শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে জাবালে নূরের রোড পারমিট বাতিল করা হয়েছিল বলে আমাদের জানানো হয়েছিল। কিন্তু জাবালে নূর এখনও রাস্তায় চলছে। আমরা জাবালে নূর ও সুপ্রভাত বাস রাস্তায় দেখতে চাই না।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে রাস্তা পার হওয়ার সময় এক শিক্ষার্থীকে চাপা দেয় সুপ্রভাত পরিবহনের একটি বাস। ঘটনাস্থলে নিহত ওই শিক্ষার্থীর নাম আবরার আহমেদ চৌধুরী। তিনি বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি)-এর শিক্ষার্থী ছিলেন। এ ঘটনায় বাসচালককে পুলিশ আটক করলেও শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। দুর্ঘটনার পর যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে কুড়িল বিশ্বরোডের নর্দা এলাকায় তারা সড়ক অবরোধ করে রাখে। শিক্ষার্থীরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ী ব্যক্তিদের বিচার দাবি করেন। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা আট দফা দাবিতে সড়ক অবরোধ করে। বিগুলোর মধ্যে রয়েছে—বাসচালকের শাস্তি, নতুন বাসচালকেরা যেন যথাযথ নিয়মে ড্রাইভিং লাইসেন্স পান, গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় জেব্রাক্রসিংয়ের ব্যবহার, জেব্রাক্রসিংয়ের সামনে ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা স্থাপন ও প্রগতি সরণিতে যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে ফুট ওভারব্রিজ স্থাপন। অবরোধের কারণে সড়কের দুপাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
পিবিডি-এনই