• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

বেগম রোকেয়া দিবস আজ

প্রকাশ:  ০৯ ডিসেম্বর ২০১৮, ১০:৫২
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

আজ ৯ ডিসেম্বর বেগম রোকেয়া দিবস। নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়ার ১৩৮তম জন্ম এবং ৮৬তম মৃত্যুবার্ষিকী। প্রতি বছর এ দিন সারাদেশে সরকারিভাবে রোকেয়া দিবস পালন করা হয়।

দিনটি উপলক্ষে ঢাকা ও রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।

দিবসটি উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো এবারো রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেছেন, সরকার নারী সমাজকে দেশের সার্বিক উন্নয়নে সম্পৃক্তকরণের মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়নে নিরবচ্ছিন্ন কাজ করে যাচ্ছে। বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন নারীমুক্তি, সমাজ সংস্কার ও প্রগতিশীল আন্দোলনের পথিকৃৎ। বেগম রোকেয়া উন্নত মানসিকতা, দূরদর্শী চিন্তা, যুক্তিপূর্ণ মতামত প্রদান ও বিশ্লেষণ, উদার মানবতাবোধের অবতারণা এবং সর্বোপরি দৃঢ় মনোবল দিয়ে তৎকালীন নারী সমাজকে জাগিয়ে তোলেন।

তিনি বলেন, বাঙালি মুসলিম নারীদের অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তিনি পর্দার অন্তরালে থেকেই নারীশিক্ষা বিস্তারে প্রয়াসী হন এবং মুসলমান মেয়েদের অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্তির পথ সুগম করেন। সামাজিক নানা বিধি-নিষেধ, নিয়ম-নীতির বেড়াজাল অগ্রাহ্য করে তিনি অবরোধবাসিনীদের মুক্তিদূত হিসেবে আর্বিভূত হন । বেগম রোকেয়ার জীবনাদর্শ ও কর্ম দেশের নারী সমাজের অগ্রযাত্রায় পথপ্রদর্শক হয়ে থাকবে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে জনসংখ্যার অর্ধেকই নারী। নারী-পুরুষের সমান অংশীদারিত্ব ছাড়া টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। সরকার নারী সমাজকে দেশের সার্বিক উন্নয়নে সম্পৃক্ত করতে জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি, ২০১১ প্রণয়ন করা হয়েছে। ভিজিডি, বিধবা ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা, ল্যাকটেটিং মাদার সহায়তা কার্যক্রমসহ বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির মাধ্যমে নারীদের অর্থনৈতিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেছেন, আমি আশা করি বেগম রোকেয়ার আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে নিজেদের উন্নয়নের মূল স্রোতধারায় সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে এদেশের নারীসমাজ জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়তে ভূমিকা রাখবেন। বেগম রোকেয়া ছিলেন ঊনবিংশ শতাব্দীর খ্যাতিমান বাঙালি সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ ও সমাজ সংস্কারক। বাঙালি নারী জাগরণের অগ্রদূত তিনি। প্রবন্ধ, গল্প ও উপন্যাসের মধ্য দিয়ে নারী শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা এবং নারী-পুরুষের সমতাভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণের কথা উঠে এসেছে তার লেখায়। চিন্তা-চেতনা এবং মননে তিনি (বেগম রোকেয়া) একজন প্রগতিশীল ব্যক্তিত্ব।

তিনি বলেন, রাজনীতি, পররাষ্ট্রনীতি, আইন প্রণয়ন, নীতি নির্ধারণ, প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উচ্চপর্যায়, অর্থনীতি, সাংবাদিকতা, তথ্যপ্রযুক্তি, শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি এবং খেলাধুলাসহ পেশাভিত্তিক সকল স্তরে আজ নারীদের গর্বিত পদচারণা। এভারেস্ট বিজয় থেকে শুরু করে মানবাধিকার রক্ষা এবং জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের কর্মকাণ্ডে নারীরা সাফল্যের সঙ্গে ভূমিকা রাখছেন, অর্জন করছেন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও সম্মাননা।

তিনি বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচি এবং বেগম রোকেয়া পদক-২০১৮ প্রদান অনুষ্ঠানের সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।

রোকেয়া দিবস উপলক্ষে আজ সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে রোকেয়া পদক-২০১৮ প্রদান ও আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে প্রধান অতিথি থাকবেন।

দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ গার্ল গাইডস্ এসোসিয়েশনের জাতীয় রেঞ্জার কাউন্সিলের উদ্যোগে গতকাল শনিবার সকাল ১১টায় বেইলী রোডে অবস্থিত গাইড হাউজ, জাতীয় কার্যালয়ে এক আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিলো ‘রেঞ্জারদের চিন্তা ও চেতনায় বেগম রোকেয়া’। বেগম রোকেয়ার জীবনী নিয়ে তথ্যচিত্র উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেঞ্জার ইউনিটের সদস্য জেসমিন আক্তার।

বেগম রোকেয়া ১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর রংপুর জেলার মিঠাপুকুর থানার পায়রাবন্দ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। রক্ষণশীল মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেও তিনি নারী জাগরণের অগ্রদূতের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। তিনি উনবিংশ শতাব্দীর একজন খ্যাতিমান বাঙালী সাহিত্যিক ও সমাজ সংস্কারক। ১৯৩২ সালের ৯ ডিসেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন। বেগম রোকেয়ার উল্লেখযোগ্য রচনাগুলো হলো- পিপাসা (১৯০২), মতিচূর (১৯০৪), সুলতানার স্বপ্ন (১৯০৮), সওগাত (১৯১৮), পদ্মরাগ (১৯২৪) ও অবরোধবাসিনী (১৯৩১)।

পিবিডি/এসএম

বেগম রোকেয়া
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close