• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

নির্বাচনে অনিয়মের বিচার বিভাগীয় তদন্ত চায় টিআইবি

প্রকাশ:  ১৫ জানুয়ারি ২০১৯, ১৪:০৭
নিজস্ব প্রতিবেদক

সদ্য সমাপ্ত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ তুলেছে বেসরকারি সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। এসব অনিয়মের বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়েছে সংস্থাটি।

৩০০ আসনের মধ্য থেকে দৈবচয়নের (লটারি) ভিত্তিতে এই ৫০ আসন বেছে নিয়ে করা গবেষণা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে মঙ্গলবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর মাইডাস সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে টিআইবি। এতে সভাপতিত্ব করেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান ও প্রতিবেদন পাঠ করেন গবেষক দলের শাহজাদা এম আকরাম।

প্রতিবেদনে বলা হয়, নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের বিশৃঙ্খল পরিবেশ, বৈষম্যমূলক আচরণ এবং জাল ভোট দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এমনকি নির্বাচন কমিশনের ভূমিকাও নিরপেক্ষ ছিলো না।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ভোটে নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে পারেনি। সবার জন্য সমান অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে পারেনি। নিশ্চিত করতে পারেনি সব দলের প্রার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টিও।

তিনি বলেন, একই সঙ্গে নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনারও স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠতে পারেননি। তার নিকটাত্মীয় প্রার্থী হলেও নিজের অবস্থান পরিষ্কার করতে পারেননি তিনি। এছাড়া নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হলেও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ছিলো না।

টিআইবির প্রতিবেদনে বলা হয়, নির্বাচনে ৪৭টি আসনে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। আর জাল ভোট পড়েছে ৪১টি আসনে। ৩৩টি আসনে আগের রাতে ব্যালটে সিল মারা হয়েছে। এসব আসনের এক বা একাধিক কেন্দ্রে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে।

গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত আসনগুলোতে আওয়ামী লীগ ৪০, জাতীয় পার্টি ছয়, বিএনপি এক, গণফোরাম দুই এবং অন্যান্য দল একটি আসনে জয়ী হয়েছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

টিআইবির গবেষণা অনুযায়ী, জাল ভোট পড়েছে ৮২ শতাংশ আসনে। আর ৬৬ শতাংশ আসনে নির্বাচনের আগের রাতে ব্যালট বাক্সে সিল মারা হয়েছে। আর নির্বাচনী অনিয়ম হয়েছে ৯৪ শতাংশ আসনে।

সংস্থাটির প্রতিবেদনের সুপারিশে বলা হয়, সৎ ও নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দেয়া; নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসহ অন্যান্য অংশীজনদের দলীয় প্রভাবমুক্ত ও নিরপেক্ষ রাখতে হবে; নির্বাচনে সহিংসতা ও বলপ্রয়োগসহ নির্বাচনী আচরণবিধির বহুমুখী লঙ্ঘনের যেসব অভিযোগ উঠেছে, সেগুলোর সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত ও তার ওপর ভিত্তিতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে এসব অভিযোগ আমলে নিয়ে বিচারবিভাগীয় তদন্তের উদ্যোগ নেয়া, আচরণবিধি লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনকে তাদের ব্যর্থতা নিরূপণ করা, নির্বাচন প্রক্রিয়া ডিজিটালাইজ করা, নির্বাচন পর্যবেক্ষক ও গণমাধ্যমের তথ্য সংগ্রহের জন্য অবাধ পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।

গত বছরের নভেম্বর থেকে শুরু করে ভোটের দিন ও চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত তথ্যের ভিত্তিতে এই প্রাথমিক প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত তথ্য সংগ্রহ করে চূড়ান্ত প্রতিবেদক প্রকাশ করবে প্রতিষ্ঠানটি।

পিবিডি/মিশু

টিআইবি,একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close